রোগ থেকে বাঁচতে হাসুন

প্রকাশ | ১৮ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০

সুস্বাস্থ্য ডেস্ক
হাস্যোজ্জ্বল মুখ দেখতে কার না ভালো লাগে বলুন? পাশাপাশি হাসি একটি প্রাকৃতিক ওষুধ, এটি আমাদের আবেগকে সহজেই স্পর্শ করে ও সেটি প্রকাশ করে। হাসি নানাভাবে আমাদের শরীর গঠনে সাহায্য করে। আজকাল আমাদের চারপাশে স্ট্রেসের মাত্রা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে, হাসিই পারে সেই স্ট্রেসের হাত থেকে আমাদের বাঁচাতে। পারে নানা রোগের হাত থেকে বাঁচাতে। তাই শরীরকে চাঙা ও সুস্থ রাখতে হাসির কোনো বিকল্প নেই। জেনে নিন হাসির উপকারিতা সম্পর্কে হাসিতে টি-সেলের ক্ষমতা বাড়ে: এই বিশেষ ধরনের কোষটির শক্তি যত বাড়তে থাকে, তত শরীর ভেতর থেকে শক্তিশালী হয়ে ওঠে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই রোগ ভোগের আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। আর টি-সেলের ক্ষমতা বাড়ানোর সবচেয়ে সহজ উপায় মন খুলে হাসা। এতে টি-সেলের কর্মক্ষমতা বাড়তে থাকে। মানসিক স্বাস্থ্য ভালো হয় কি করলে: যখনই দেখবেন রাগ, হতাশা বা দুঃখ মনকে ঘিরে ধরেছে, তখনই এমন কিছু করবেন যাতে খুব হাসি পায়। কারণ, মন যখন ঠিক থাকে না, তখন মানসিক চাপ কমাতে হাসিই একমাত্র মন ভালো হওয়ার দাওয়াই হতে পারে। মন ভালো হয়ে যায়: আমরা যখন প্রাণ খুলে হাসি, তখন আমাদের শরীরে সেরাটোনিন এবং এন্ডোরফিন হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। ফলে নিমিষে আমাদের মন ভালো হতে শুরু করে। সেই সঙ্গে মানসিক এবং শারীরিক যন্ত্রণাও কমে যায়। তাই তো এ ২টি হরমোনকে চিকিৎসকরা 'ফিল গুড' হরমোনও বলে থাকেন। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে যা করলে: হাসার সময় আমাদের শরীরে 'ফিল গুড' হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। এই হরমোনগুলো নানাভাবে শ্বেত রক্ত কণিকার উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এতটাই শক্তিশালী হয়ে যায় যে, কোনো রোগই শরীরকে ছুঁতে পারে না। সেই সঙ্গে সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়। ফুসফুস তরতাজা হয়ে ওঠে যা করলে: যখন আমরা হাসি, তখন ফুসফুস প্রসারিত হয় এবং আমাদের ফুসফুসের প্রতিটি কোণা বিশুদ্ধ অক্সিজেনে ভরে যায়। এমনটা যত হতে থাকে তত সারা শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়ে। ফলে নানাবিধ রোগের প্রকোপ হ্রাস পায়। সেই সঙ্গে ফুসফুসের কর্মক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। রক্তচাপ কমায় যা করলে: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে হাসার সময় আমাদের সারা শরীরে রক্ত চলাচল বেড়ে যায়। রক্তনালিগুলো প্রসারিত হতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই শিরা-ধমনির ওপর চাপ কম পড়ে। আর এমনটা হলে বস্নাড প্রেসার কমতেও সময় লাগে না। তাই প্রেসারের রোগীরা যদি গোমড়ামুখো হন, তাহলে কিন্তু বিপদ। হাসি এক ধরনের ব্যায়াম: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, হাসার সময় আমাদের শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত চর্বি বা ক্যালোরি বিপুল পরিমাণ ক্ষয় হতে থাকে। শুধু তাই নয়, এ সময় পেটেও খুব চাপ পড়ে। ফলে সব দিক থেকে ওজন হ্রাসের পথ প্রশস্ত হয়। মজার ব্যাপার হচ্ছে ১০০ বার হাসি ১০ মিনিট নৌকা চালানো কিংবা ১৫ মিনিট সাইকেল চালানোর সমান শারীরিক কসরত। শারীরিক সঞ্চালনের কারণে সবখানে রক্ত চলাচল যায় বেড়ে। রক্তে সংযুক্ত হয় বেশি পরিমাণ অক্সিজেন। হাসিতে ডায়াফ্রাম, পেটের ও রেসপিরেটরি মাংসপেশিসমূহ এবং মুখ, এমনকি পা কিংবা পিঠের মাংসপেশির চমৎকার এক্সারসাইজ হয়। শরীর শান্ত হয়: দেহে জমতে থাকা ক্লান্তি, কষ্ট এবং স্ট্রেস এক মুহূর্তে কমে যায়, যখন আমরা প্রাণ খুলে হাসি। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে হাসির প্রভাব আমাদের শরীরে প্রায় ৩০-৪৫ মিনিট পর্যন্ত থাকে। হাসলে হার্ট ভালো থাকে: বেশি হাসলে বস্নাড প্রেসার কমে। শুধু তাই নয়, হার্টের কার্যক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। আসলে হাসার সময় আমাদের রক্তনালিগুলো প্রসারিত হয়। ফলে সারা দেহে রক্ত প্রবাহ বেড়ে গিয়ে শরীর একেবারে চাঙা হয়ে ওঠে। সেই সঙ্গে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কাও কমে যায়।