উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার প্রভাব

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা যেমন ওজন কমিয়ে আদর্শ ওজন বজায় রাখা, স্বাস্থ্যকর খাবার বা ড্যাশ ডায়েট অবলম্বন করা, খাবারে লবণের পরিমাণ কমিয়ে আনা, অধিক পটাসিয়ামযুক্ত খাবার খাওয়া, নিয়মিত ব্যায়াম করা ও মদ্যপান পরিহার করলে ওষুধ ছাড়াও উলেস্নখযোগ্য পরিমাণ রক্তচাপ কমানো সম্ভব।

প্রকাশ | ০৬ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যকর খাবারের ভূমিকা কী? যদি কোনো স্বাভাবিক রক্তচাপ আছে এমন ব্যক্তি স্বাস্থ্যকর খাবার বা ড্যাশ ডায়েট খান তবে তার সিস্টোলিক রক্তচাপ ৩ মিমি পারদ কমানো সম্ভব। আর যদি উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তি স্বাস্থ্যকর খাবার বা ড্যাশ ডায়েট অবলম্বন করে তবে শুধু এই খাবার নিয়ন্ত্রণ করে সিস্টোলিক রক্তচাপ ১১ মিমি পারদ কমানো সম্ভব। স্বাস্থ্যকর খাবার বা ড্যাশ ডায়েট কী? খাবারে যদি প্রচুর শাক-সবজি, ফলমূল, আস্ত শস্যদানা ও কম সম্পৃক্ত চর্বিযুক্ত দুধ ও দুধ থেকে তৈরি খাদ্যসামগ্রী থাকে তাকে স্বাস্থ্যকর খাবার বা ড্যাশ ডায়েট বলে। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ওজন কমানোর ভূমিকা কী? আদর্শ ওজন বজায় রাখতে হবে। প্রতি ১ কেজি ওজন কমালে ১ মিমি পারদ পর্যন্ত রক্তচাপ কমতে পারে। যদি কোনো স্বাভাবিক রক্তচাপ আছে এমন ব্যক্তি ওজন কমিয়ে আদর্শ ওজন বজায় রাখে তবে তার সিস্টোলিক রক্তচাপ ২-৩ মিমি পারদ কমানো সম্ভব। আর যদি উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তি ওজন কমিয়ে আদর্শ ওজন বজায় রাখে তবে শুধু এই খাবার নিয়ন্ত্রণ করে সিস্টোলিক রক্তচাপ ৫ মিমি পারদ কমানো সম্ভব। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে খাবারে অতিরিক্ত লবণ কমানোর ভূমিকা কী? একজন ব্যক্তি প্রতিদিন ১৫০০ মিলি গ্রামের বেশি লবণ খাওয়া স্বাস্থ্যকর নয়। যিনি পাতে অতিরিক্ত লবণ খান তাকে কমপক্ষে প্রতিদিন ১০০০ মিলি গ্রাম লবণ খাওয়া কমাতে হবে। যদি কোনো স্বাভাবিক রক্তচাপ আছে এমন ব্যক্তি অতিরিক্ত লবণ খাওয়া কমায় তবে তার সিস্টোলিক রক্তচাপ ২-৩ মিমি পারদ কমানো সম্ভব। আর যদি উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তি অতিরিক্ত লবণ খাওয়া কমায় তবে শুধু লবণ খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করে সিস্টোলিক রক্তচাপ ৫-৬ মিমি পারদ কমানো সম্ভব। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে খাবারে পটাসিয়াম বাড়ানোর ভূমিকা কী? একজন ব্যক্তি প্রতিদিন ৩৫০০-৫০০০ মিলি গ্রামের বেশি পটাসিয়াম খাওয়া স্বাস্থ্যকর বিশেষ করে যে সব খাবারে পটাসিয়াম বেশি আছে সে সব খাবার বেশি বেশি খেতে হবে। যদি কোনো স্বাভাবিক রক্তচাপ আছে এমন ব্যক্তি বেশি পটাসিয়ামযুক্ত খাবার খান তবে তার সিস্টোলিক রক্তচাপ ২ মিমি পারদ কমানো সম্ভব। আর যদি উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তি বেশি পটাসিয়ামযুক্ত খাবার খান তবে শুধু এ কাজ করে সিস্টোলিক রক্তচাপ ৪-৫ মিমি পারদ কমানো সম্ভব। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত ব্যায়ামের ভূমিকা কী? প্রতি সপ্তাহে ১২০-১৫০ মিনিট জোরে হাঁটা ভালো। যদি কোনো স্বাভাবিক রক্তচাপ আছে এমন ব্যক্তিনিয়মিত ব্যায়াম করেন তবে তার সিস্টোলিক রক্তচাপ ৪ মিমি পারদ কমানো সম্ভব। আর যদি উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তি নিয়মিত ব্যায়াম করেন তবে শুধু এ কাজ করে সিস্টোলিক রক্তচাপ ৫ মিমি পারদ কমানো সম্ভব। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে মদ্যপান কমানোর ভূমিকা কী? আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের মতে যারা মদ্যপান করেন না সুস্থ হৃদযন্ত্র ও স্বাভাবিক রক্তচাপ বজায় রাখতে তাদের মদ্যপান না করাই ভালো। তবে যারা অত্যধিক মদ্যপান করেন তাদের মদ্যপান কমাতে হবে। পুরুষের জন্য দিনে ২ বার ও মহিলাদের জন্য দিনে ১ বার। প্রতিবার মদ্যপানে ১৪ গ্রামের বেশি বিশুদ্ধ অ্যালকোহল থাকবে না যা ১২ আউন্স বিয়ারে থাকে, ৫ আউন্স ওয়াইনে থাকে বা ১.৫ আউন্স স্পিরিটে থাকে। যদি কোনো স্বাভাবিক রক্তচাপ আছে এমন ব্যক্তি মদ্যপান কমিয়ে আনেন বা বাদ দেন তবে তার সিস্টোলিক রক্তচাপ ৩ মিমি পারদ কমানো সম্ভব। আর যদি উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তি মদ্যপান কমিয়ে আনেন বা বাদ দেন তবে শুধু এ কাজ করে সিস্টোলিক রক্তচাপ ৪ মিমি পারদ কমানো সম্ভব। \হপ্রফেসর (ডা.) মো. তৌফিকুর রহমান (ফারুক) এমবিবিএস (ডিএমসি), এমডি (কার্ডিওলোজি), এফসিপিএস (মেডিসিন), এফএসিসি (আমেরিকা), এফএসিপি, এফএএসই, এফআরসিপি, এফসিসিপি, এফইএসসি, এফএএইচএ, এফএপিএসআইসি অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান- কার্ডিওলোজি, মেডিনোভা মেডিকেল সার্ভিসেস মালিবাগ মোড়, ঢাকা