মস্তিষ্কের ব্যায়াম

প্রকাশ | ২৭ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

সুস্বাস্থ্য ডেস্ক
মানুষের মস্তিষ্ক ও শরীর একে অপরের সঙ্গে জড়িত। আর নিয়মিত ব্যায়াম যে শরীরের পাশাপাশি মনের ওপরে ইতিবাচক প্রভাব রাখে, সেটা নতুন করে বলার কিছু নেই। মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে, চিন্তাশক্তি উন্নত ও তথ্য প্রক্রিয়াজাত করতে, সিদ্ধান্ত নিতে এবং স্মৃতিশক্তির উন্নতিতে শরীরচর্চার প্রয়োজন রয়েছে। আর সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে ২০ মিনিট মাঝারি থেকে বলিষ্ট মাত্রার ব্যায়ামে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য হবে আরও ভালো। 'জার্নাল অব এপিডেমিয়োলজি অ্যান্ড কমিউনিটি হেলথের প্রকাশিত 'ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের করা গবেষণায় দেখা গেছে, যারা মাঝারি থেকে জোরালো ব্যায়াম করেন তাদের জ্ঞান ও স্মৃতিশক্তি উন্নত থাকে। যুক্তরাজ্যের প্রায় ৪ হাজার ৪শ' জনেরও বেশি অংশগ্রহণকারীর ওপর করা পরীক্ষায় ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বিভিন্ন ধরনের স্বভাব, যেমন- আলস আচরণ, মাঝারি ও জোরালো শারীরিক কার্যকলাপ, হালকা জোরালো শারীরিক কার্যকলাপ এবং ঘুম ইত্যাদির মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয় ও জ্ঞানীয় দক্ষতাকে প্রভাবিত করতে পারে। যেমন- স্মৃতিশক্তি এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতার বাড়াতে মস্তিষ্ককে সহায়তা করে। গবেষণায় দেখা যায়, যারা ১০ মিনিট মাঝারি থেকে তীব্র শরীরচর্চা করেছিল তাদের মস্তিষ্ক অন্যদের থেকে বেশি কার্যকর ছিল। গবেষণা পত্রের উপসংহারে বলা হয়, মাঝারি ও জোরালো শারীরিক কার্যক্রিয়া বাদ দেওয়া জ্ঞানীয় দক্ষতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এই গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে রিয়েলসিম্পল ডটকম'য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, এক্ষেত্রে অলস সময় এবং হালকা গতির ব্যায়ামের পরিবর্তে তীব্র ব্যায়াম ও গতিশীল সমস্যা কাটানো সুস্থ মস্তিষ্কে নিশ্চিত করতে সহায়তা করে। শরীরচর্চার মাধ্যমে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য উন্নত করার উপায় গবেষণায় নির্দিষ্ট কোনো ব্যায়ামের কথা বলা হয়নি। তবে যে ব্যায়াম হৃৎস্পন্দন এবং শ্বাস-প্রশ্বাস বাড়ায় সেগুলো বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখে। কিছু জোরালো বা তীব্র ব্যায়াম, যেমন- জোরে হাঁটা, দৌড়ানো, দড়ি লাফানো, নাচের কার্ডিও ক্লাস বা ট্রেড মিলে দৌড়ানো হৃদগতি বৃদ্ধি করে, রক্তের প্রবাহ বাড়ায়। ফলে মস্তিষ্ক এবং জ্ঞানীয় দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। মস্তিষ্কের ওপর ইতিবাচক প্রভাব রাখে, চিন্তাশক্তি উন্নত করে এবং মানসিকভাবে আকর্ষণ করে এমন ব্যায়াম করা উচিত, এটা মনোযোগ ধরে রাখে এবং কিছু পদক্ষেপ অনুসরণ করতে সাহায্য করে যেমন- অ্যারোবিকস, নৃত্য, যোগ ব্যায়াম, 'তাই চি' ইত্যাদি। এগুলো মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব রাখে হ তাছাড়া মাঝে মধ্যে 'ফিটনেস রুটিন' কিছুটা পরিবর্তন আনাও মন ও শরীরের ওপর প্রভাব রাখতে পারে। হ এই গবেষণা ছাড়াও 'আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন' এবং যুক্তরাষ্ট্রের 'কেন্দ্রীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থা'র গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া গেছে যে, ১০ মিনিটের কম সময়ের ব্যায়ামও উপকারী। হ যেখানে প্রত্যেক সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট মাঝারি মাত্রার ব্যায়াম করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। হ তবে নতুন অবস্থায় এই পরিমাণ ব্যায়াম করাকে কিছুটা বেশি মনে হতে পারে। মানসিক এই প্রতিবন্ধকতা এড়িয়ে ধীরে ধীরে ব্যায়ামের দিকে মানসিক প্রস্তুতি নিতে হবে এবং প্রথমে কঠিন ব্যায়াম না করে ধীরে ধীরে মাত্রা বাড়াতে হবে। হ প্রতিদিন ১০ মিনিট ব্যায়াম করার রুটিন করে নেওয়া কয়েকদিনের মধ্যেই সুফল বয়ে আনবে।