ডায়াবেটিস ও ব্যায়াম

প্রকাশ | ২২ মে ২০১৯, ০০:০০

য় যাযাদি হেলথ ডেস্ক
শরীর সুস্থ রাখার জন্য কেবল সুষম খাবারই যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন সঠিক ব্যায়ামের। আবার রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রেও ব্যায়ামের ভূমিকা রয়েছে। এর ফলে দেহের জ্বালানি খরচ বেড়ে যায়, ফলে দেহের চর্বি ক্ষয় হয় এবং অ্যাড়োনাল গ্রন্থির মাংসপেশি ও লিভারের গস্নাইকোজেন থেকে গস্নুকোজ সরে যায়। আধুনিক জীবনযাত্রায় মানুষকে ক্রমে পরিশ্রম বিমুখ করে তুলছে। সারাদিন বসে কাজ করা, গাড়িতে যাতায়াত করা, বাড়ি ফিরে পত্রিকা পড়ে বা টিভি দেখে সময় কাটানো। এতে কোনো শারীরিক পরিশ্রম হয় না। এর ওপর রয়েছে তেল-ঘি-চর্বিজাতীয় উচ্চ ক্যালোরিসম্পন্ন আহার। সুতরাং তাদের দেহ যন্ত্রকে সচল রাখার জন্য প্রয়োজন খাবার কমানো এবং ব্যায়াম করা। প্রতিটি লোকেরই অবসর সময়ে শুয়ে-বসে না থেকে কিছুটা হাঁটাহাঁটি বা ব্যায়াম করা উচিত। এতে রক্ত সঞ্চালন যেমন স্বাভাবিক থাকে, তেমনি খাদ্য থেকে যে ক্যালরি গ্রহণ করা হয়, তা খরচও হতে থাকে। ভারী শরীরেই হয় শ্বাসকষ্ট, বাত, উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ। বিশেষজ্ঞদের অভিমত হলো অল্পমাত্রায় শরীর চর্চা কোমরের ব্যায়াম উপশম ঘটায়। আবার সামান্য ব্যায়ামও খাবারের অভ্যাস পরিবর্তন করে হৃদরোগকে প্রাথমিক পর্যায়েই প্রতিরোধ করা যায়। ডায়াবেটিস এমন একটি অবস্থা যাতে আজীবন নিয়মশৃঙ্খলা মেনে চলতে হয়। আগেই যদি প্রতিরোধের ব্যবস্থা করা যায়, তাহলে জটিলতাগুলো থেকে অনেকটা দূরে থাকা যায়। আধুনিক সমন্বিত পদ্ধতিতে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমেই তা সম্ভব হতে পারে। এ পদ্ধতি হলো খাদ্যনিয়ন্ত্রণ, দৈহিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম জীবনযাত্রার প্রণালিতে স্বাস্থ্যপ্রদ পরিবর্তন। ধূমপান পরিত্যাগ, প্রয়োজনীয় ওষুধ সেবন অথবা ইনসুলিন গ্রহণ। একেকজনের ডায়াবেটিস একেকভাবে নিয়ন্ত্রণে থাকে। যেমন-কারও শুধু খাদ্য নিয়ন্ত্রণ ও হাঁটার মাধ্যমে, কেউ ভালো থাকেন ওষুধ বা ইনসুলিনের মাধ্যমে, স্থূলতা অনেকটা আয়-ব্যয়ের হিসাবের মতো। কারণ যতটুকু খাওয়া প্রয়োজন, যদি তার চেয়ে বেশি খাওয়া হয় এবং সেই অনুপাতে পরিশ্রমের মাধ্যমে যদি ক্যালরি ব্যয় না হয়, তবে সেটা শরীরে জমা হয়। এজন্য দেখা যায় একই খাবার খেয়ে দুজন মানুষের শারীরিক কাঠামো দু'রকম হয়। এটা ক্যালরি ব্যয়ের ওপর নির্ভর করে। শিশুদেরও পরিমিত খাবারের পাশাপাশি অঙ্গ সঞ্চালন প্রয়োজনে প্রতিদিন নিয়মিতভাবে এমন সব ব্যায়াম করতে হবে, যাতে সারা শরীরের চর্চা হয়। যেমন- সকালে বিকালে হাঁটা, ওঠাবসা করা, আস্তে আস্তে দৌড়ানো ইত্যাদি। এগুলো সব বয়সের লোকের জন্য ভালো ব্যায়াম। এতে রক্ত শর্করা স্বাভাবিক থাকতে সাহায্য করে। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত শিশু, কিশোর-কিশোরীদের খেলাধুলায় উৎসাহিত করতে হবে। গৃহিণীরা সাংসারিক ভারী কাজের মধ্যেও ব্যস্ত থাকতে পারেন। অনেকে মনে করেন ব্যায়ামে ক্লান্তি আসে। আসলে তা নয়। সঠিক মাত্রায় ব্যায়াম মানুষকে উজ্জীবিত করে তোলে। আবার হজমেও সহায়তা করে। আবার শারীরিক পরিশ্রমের অভাবে তলপেটের পেশিগুলি তেমন ক্রিয়াশীল থাকে না বলে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে। ব্যায়ামের পর এমন খাবার খেতে হবে যাতে শারীরিক ও মানসিক শক্তি বেড়ে যায়। যেমন-তাজা ফল, ভিজানো ছোলা, সবজি, বিভিন্ন ধরনের ডাল, আঁশযুক্ত খাবার, সয়াবিন ইত্যাদি। অথচ আমরা ক্লান্তির সময় খাই তাজা খাবার, কোকো, কড়া চা-কফি ইত্যাদি।