ঘামাচি সমস্যা ও প্রতিকার

প্রকাশ | ২৯ মে ২০১৯, ০০:০০

সুস্বাস্থ্য ডেস্ক
বাংলায় আমরা যাকে ঘামাচি বলি তাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় গরষরধৎরধ। এটি একটি ঘর্মগ্রন্থির রোগ। ঘর্মগ্রন্থির নালি অতিরিক্ত আর্দ্রতা ও গরমে বন্ধ হয়ে এ রোগের সৃষ্টি করে। এ রোগটি গ্রীষ্মকালে দেখা যায় এবং শীতকালে এলে আপনা-আপনিই ভালো হয়ে যায়। গ্রীষ্মকালে দেহ থেকে প্রচুর পরিমাণ ঘাম নিঃসরণ হতে থাকে। ফলে তখন এত বেশি পরিমাণে নিঃসরণ কেবল ঘর্মগ্রন্থির ছিদ্রপথে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়। ফলে ওই নিঃসরণ ঘর্মগ্রন্থিকে ফুটো করে ত্বকের নিচে এসে জমা হতে থাকে এবং সে স্থান ফুলে ওঠে। সেই সঙ্গে থাকে প্রচন্ড চুলকানি ও সামান্য জ্বালাপোড়া ভাব ও খুব ছোট ছোট উদ্ভেদ এটাই মূলত ঘামাচি। ঘামাচি তিন ধরনের হয়। যেমন মিলিয়ারিয়া ক্রিস্টালিনা, এ ক্ষেত্রে ঘর্মনালির মুখের অংশটি কালো দেখা যায় এবং এ ক্ষেত্রে ত্বক দেখতে প্রায় স্বাভাবিক বলেই মনে হয়। সাধারণত এ ক্ষেত্রে কোনো উপসর্গই থাকে না। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে উজ্জ্বল পানির দানা স্বাভাবিক ত্বকের ওপর হতে দেখা যায়। দ্বিতীয়টি ঘর্মনালির রুদ্ধতা দেখা যায়। ত্বকের বহিঃত্বকের মধ্যের ঘর্মনালিতে এবং এ ক্ষেত্রে ত্বকের ওপরে ছোট ছোট অসংখ্য গোটা দেখা যায়। যে গোটার মাথায় পানির দানা থাকতেও পারে, আবার নাও থাকতে পারে; যা লালচে ত্বকের ওপর হতে দেখা যাবে এবং সেই সঙ্গে থাকবে প্রচন্ড চুলকানি, যা মূলত শরীরের মূল অংশ ও ঘাড়ে বেশি হতে দেখা যায়। তৃতীয়টি অর্থাৎ গরষরধৎরধ চৎড়ভড়ঁহফধ-এর ক্ষেত্রে ঘর্মনালির বদ্ধতা মূলত ত্বকের বহিঃত্বক ও অন্তঃত্বকের মিলনস্থানে দেখা দেয় অর্থাৎ ত্বকের অনেক গভীরে। কাজেই ত্বক দেখতে অনেকটা স্বাভাবিক ধরনের মনে হয় এবং এ ক্ষেত্রে এই দানা বা গোটা মূলত দেহের মূল অংশে এবং হাতে ও পায়ে হতে দেখা যায়। এই তিন ধরনের মধ্যে গরষরধৎরধ জঁনৎধ সবচেয়ে বেশি হয়। এই রোগ গরমকালে হয়ে থাকে। গরম ও সঁ্যাতসেঁতে আবহাওয়ায় এ রোগ বেশি হয় এবং গরমকালে যারা গায়ে তেল মাখেন, তাদের এ রোগ বেশি হয়। এ রোগ নির্ণয়ের জন্য সাধারণত কোনো পরীক্ষার প্রয়োজন হয় না। চোখে দেখে চিকিৎসকরা এ রোগ নির্ণয় করে থাকেন। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে ফলিকুলাইটিস কিংবা ত্বকের ক্যানডিডিয়াসিস অথবা ঈড়হঃধপঃ-এর মতো দেখতে মনে হয় বলে চিকিৎসকরা দ্বিধায় ভুগে থাকেন। চিকিৎসা : মূল চিকিৎসা হলো গরম আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটিয়ে ঠান্ডা পরিবেশে যেতে হবে। আর যদি এয়ারকুলারের ব্যবস্থা করা সম্ভব না হয় তাহলে সার্বক্ষণিক ফ্যানের নিচে থাকতে হবে, যেন ত্বকের সংস্পর্শে বাতাস খেলতে পারে। এ ছাড়া হাইড্রোকটির্সোন ১% ব্যবহার করলে ত্বকের চুলকানি কমে যায়। এ ছাড়া অহঃযরপধষ খড়ঃরড়হ অথবা ঈধষধসরহব খড়ঃরড়হ লাগিয়ে ভালো ফল পাওয়া যায় এবং এর সঙ্গে অ্যান্টিহিস্টামিন ব্যবহার করা যায়। অতিরিক্ত ঘাম : হাত ও পায়ের তালুসহ শরীর থেকে অল্প পরিমাণে ঘাম হওয়া স্বাভাবিক দৈহিক ক্রিয়া। কিন্তু তা যদি অধিক পরিমাণে হয় বা তা থেকে যদি দুর্গন্ধ নির্গত হয়, তবে তাকে বলা হয় ঐুঢ়বৎযরফৎড়ংরং। এটা স্থানিক বা সর্বশরীরে হতে পারে। লক্ষ্য করলে দেখবেন অনেকেরই শুধু হাত কিংবা হাত ও পা একত্রে অধিক পরিমাণে ঘামে এবং কখনো কখনো দুর্গন্ধও হয়। চিকিৎসা : ২০% অ্যালুমিনিয়াম ক্লোরাইড টিংচার সপ্তাহে তিনবার পস্নাস্টিক গেস্নাবসের মাধ্যমে করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। এ ছাড়া ঘুম ও দুশ্চিন্তানাশক ওষুধের সঙ্গে চৎড়নধহঃযরহব ব্যবহারেও ভালো ফল পাওয়া যায়।