পেটব্যথা ও শল্যচিকিৎসা

প্রকাশ | ২১ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
মাথা থাকলে যেমন ব্যথা হয় তেমনি পেট থাকলে পেটেব্যথাও হবে- এটিই স্বাভাবিক। শিশু থেকে শুরু করে যে কোনো বয়সেই পেটব্যথা হয়ে থাকে। বেশির ভাগ পেটব্যথাই ক্ষণস্থায়ী এবং ওষুধ খেয়েই ভালো হয়ে যায়। কখনো কখনো পেটব্যথা এত তীব্র ও জীবনবিপন্ন করে তোলে যে, শল্যচিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হয়। এবার আমরা পেটব্যথার প্রধান কারণগুলো লক্ষ্য করি। যেগুলোর জন্য আপনারা অবশ্যই শল্যচিকিৎসকের সাহায্য নেবেন : ১. অ্যাপেনডিসাইটিস। ২. কলিসিসটাইটিস অর্থাৎ পিত্তথলি বা গলবস্নাডারের প্রদাহ পাথরজনিত অথবা পাথরবিহীন। ৩. ইনটেসটিনাল অবস্ট্রাকশন/খাদ্যনালির পথরোধ হওয়া রোগ। ৪. পাকস্থলী বা খাদ্যনালি (ইনটেসটিন) ফুটো হয়ে যাওয়া। ৫. একিউট একজারবেশন অব পেপটিক আলসার। ৬. কিডনি, মূত্রনালি ও মূত্রথলিতে পাথর/ইনফেকশন। ৭. পিত্তনালির পাথর। ৮. অগ্নাশয় বা পেনক্রিয়াসের প্রদাহ বা পেনক্রিয়াটাইটিস/ পেনক্রিয়াসের পাথর। ৯. রাপচার একটোপিক প্রেগনেন্সি প্রধান। পেটব্যথার এ পর্যায়ে আমরা আজ সবচেয়ে কমন যে কারণটির জন্য আপনারা সার্জনের (চিকিৎসক) শরণাপন্ন হন তা নিয়ে আলোচনা করব। পেটব্যথা ও অ্যাপেনডিসাইটিস অ্যাপেনডিসাইটিস মানে অ্যাপেনডিকস নামক ক্ষুদ্র অঙ্গটির প্রদাহ। এই অ্যাপেনডিকস অঙ্গটি পেটের নাভির ডান দিকে অবস্থিত। এটা দেখতে অনেকটা ওয়ার্ম বা কৃমির মতো এবং এটা খাদ্যনালির বৃহদন্ত্রের অংশ। রোগ প্রতিরোধের ভূমিকা আছে বলে ধারণা করা হয়। তবে এই অঙ্গহানির ফলে শরীরের কোনো ক্ষতি হয় না। অ্যাপেনডিসাইটিস কেন হয় বিভিন্ন কারণে অ্যাপেনডিসাইটিস হতে পারে যেমন : ১. ফিকুলিথ (শক্ত মলের নুড়ি) দ্বারা অ্যাপেনডিকসের প্রবেশ মুখ বন্ধ হয়ে। ২. হজম না হওয়া খাদ্যের অংশ যেমন টমেটোর খোসা দ্বারা অ্যাপেনডিকসের প্রবেশ মুখ বন্ধ হয়। ৩. গুঁড়া কৃমির দ্বারা এবং ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন হয়ে অ্যাপেনডিসাইটিস হতে পারে। অ্যাপেনডিসাইটিস রোগের লক্ষণ ১. রোগী বলবে প্রথমে আমার ব্যথা নাভির চার পাশে অথবা পেটের উপরিভাগে শুরু হয়েছিল এবং দু-তিন ঘণ্টা পর এ ব্যথা সরে এসে নাভির ডান পাশে অবস্থান নিয়েছে। ২. হাঁচি-কাশি দিলে নাভির ডান পাশে ব্যথা হয়। ৩. বমিভাব বা ১-২ বার বমি হতে পারে। ৪. ক্ষুধা নেই। ৫. হালকা জ্বর ভাব। ৬. কনস্টিপেশন ও কিছু ক্ষেত্রে ডায়রিয়াও হতে পারে। ৭. পরীক্ষা করলে নাভির ডান দিকে চাপ দিলে ব্যথা অনুভব করবে বা ব্যথার জন্য ধরাই যাবে না। পেটব্যথার অনেক কারণগুলোর কথা আমরা আগে আলোচনা করেছি। এবার ইনটেসটিনাল অবস্ট্রাকশন নিয়ে আলোচনা করব : ইনটেসটিনাল অবস্ট্রাকশন কাকে বলে? বিভিন্ন কারণে খাদ্যনালির অবস্ট্রাকশন হতে পারে। খাদ্যনালির প্রতিবন্ধকতার যে কোনো বয়সেই হতে পারে। তবে প্রধানত একে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যেমন- নিম্নে আলোচনা করা হলো : (১) এই অবস্ট্রাকশন হতে পারে। খাদ্যনালির ওয়ালের মধ্য থেকে টিউমার, পলিপ, টিবি বা ক্যান্সার হলেও হতে পারে। (২) আবার কখনো খাদ্যনালির ভেতর কৃমি, পুডবোলাস, ফরেনবডি যেমন- সোনা, রুপা, লোহা ও ইনটোলাসসেপশন (একটি খাদ্যনালি অন্য একটি খাদ্যনালির ভেতরে ঢুকে যাওয়া) হয়েও খাদ্য চলাচলে বাধাগ্রস্ত হতে পারে/অবস্ট্রাকশন হতে পারে। (৩) খাদ্যনালির বহিরাগত কারণেও ইনটেসটিনাল অবস্ট্রাকশন হতে পারে। যেমন- ইনটেনটিনাল ব্যান্ড ও এডহেসন (জন্মগত ও অপারেশনের পর) হারনিয়া ও খাদ্যনালির আশপাশে টিউমার হয়ে খাদ্যনালির ওপর চাপ সৃষ্টি করেও এ অবস্ট্রাকশন ঘটাতে পারে। এ ছাড়া খাদ্যনালির ডেভেলপমেন্টের ত্রম্নটির ফলে এই রোগ দেখা যায়। যেমন- ইন্সপারফোরেটেড এনাস (পায়ু পথ জন্মগতভাবে বন্ধ থাকা এবং ইনটেসটিনাল এট্রিশিয়া ইত্যাদি)। য় যাযাদি হেলথ ডেস্ক