গেঁটে বাত : লক্ষণ ও প্রতিকার

প্রকাশ | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
যে কারণে গেঁটে বাত হয় : সহজ কথায়- রক্তে ইউরিক এসিডের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে গেলে এবং তা জয়েন্টে জমা হয়ে প্রদাহ সৃষ্ট হলে গেঁটে বাত হয়। গেঁটে বাত এক প্রকার সিনড্রোম- যা ইউরেট নামের এক ধরনের লবণদানা জমে জোড়া বা সঞ্চিত সৃষ্ট প্রদাহ, যা শরীরের রক্তের পস্নাজমায় অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিডের উপস্থিতির ফলে ঘটে থাকে। মূলত ৫টি কারণে গেঁটে বাত হয়। যেমন: ১. যদি আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় খাসির মাংসসহ লালজাতীয় মাংস, শুকনো শিমজাতীয় দানা, মটরশুঁটি, মাশরুম, মাছের ডিম, কলিজা, কচু, লাল পুঁইশাক বা অ্যালকোহলের পরিমাণ বেশি থাকে, যা রক্তে ইউরিক এসিড বাড়তে পারে। ২. এটা বংশানুক্রম বা জেনেটিক কারণে হতে পারে। ৩. আবার যাদের শরীর হালকা বা মেদহীন তাদের কঠোর ডায়েটিংয়ের জন্য ওজন অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়ার কারণেও হতে পারে। ৪. দীর্ঘদিন উপোস থাকার কারণে শরীরের রক্তে এই ইউরিক এসিডের মাত্রা বেড়ে যায়। ৫. যাদের কিডনির সমস্যা আছে তাদের শরীর থেকে ঠিকমতো তৈরি হওয়া ইউরিক এসিড প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে যেতে না পারার জন্যও গেঁটে বাত হতে পারে। যাদের গেঁটে বাত বেশি হয়: ১. পুরুষদের এ রোগ হওয়ার প্রবণতা বেশি। নারীদের তুলনায় পুরুষদের এই রোগ পাঁচ গুণ বেশি। ২. গেঁটে বাত সাধারণত কম বয়সী পুরুষ ও বেশি বয়সী নারীদের হয়ে থাকে। ৩. মেনোপোজ হওয়ার পর নারীদের মধ্যে এ রোগ দেখা দিতে পারে। ৪. যারা প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার, যেমন: মাছ, মাংস, ডিম ইত্যাদি বেশি খান, তাদের এই রোগ বেশি হয়। গেঁটে বাতের লক্ষণ ১. এই রোগের প্রধান প্রধান উপসর্গের মধ্যে পায়ের বুড়ো আঙ্গুলের অসহনীয় ব্যথাসহ হাঁটু, গোড়ালি বা কাঁধে ব্যথা হতে পারে। এই ব্যথা সাধারণত প্রোটিনজাতীয় খাবার খেলে বেড়ে যেতে পারে। ২. হঠাৎ তীব্র ব্যথা, এমনকি ব্যথার কারণে ঘুম ভেঙে যাওয়া। ৩. পায়ের বুড়ো আঙ্গুলের গোড়া ফুলে লাল হয়ে যাওয়া। ৪. হাঁটু, কনুই বা অন্য যে কোনো জোড়া ফুলে যাওয়া। ক্রমান্বয়ে হাড় ও তরুণাস্থি ক্ষয় হতে থাকে। ৫. ইউরেট লবণের দানা জমাট বেঁধে টফি তৈরি করতে পারে। ক্রমান্বয়ে জোড়া স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারাতে পারে। চিকিৎসা ও এর প্রতিকার: প্রাথমিক চিকিৎসা: ১. আক্রান্ত জয়েন্টে বরফ লাগাতে হবে এবং বিশ্রামে রাখতে হবে। ২. বেদনানাশক ওষুধ বেশ কার্যকর। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করা যেতে পারে। দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা: ১. ওজন বেশি থাকলে কমাতে হবে। ২. মদ্যপানের অভ্যাস থাকলে বাদ দিতে হবে। ৩. প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার যেমন- মাছ, মাংস (হাঁস, ভেড়া, কবুতর, খাসি ইত্যাদি), ডিম, শিমের বিচি, কলিজা ইত্যাদি খাওয়া যথাসম্ভব কমিয়ে আনতে হবে। ৪. যেসব রোগের কারণে গেঁটে ব্যথা হয়, সেসব রোগের যথাযথ চিকিৎসা করাতে হবে। কিছু ওষুধ দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। ৫. রিহ্যাবিলিটেশন ও ফিজিক্যাল থেরাপি লাগতে পারে। য় যাযাদি হেলথ ডেস্ক