সিজারের পর নরমাল ভেজাইনাল ডেলিভারি সম্ভব?

প্রকাশ | ১৩ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
আমাদের দেশে অনেকেরই ধারণা একবার সিজারের মাধ্যমে ডেলিভারি হলে পরবর্তী প্রতিটি প্রেগনেনসিতে সিজার করার দরকার হয়। এমেরিকান প্রেগনেন্সি অ্যাসোসিয়েশনের রিপোর্ট অনুযায়ী সিজারিয়ান ডেলিভারির পরও ৯০% মায়েরা পরবর্তী প্রেগনেন্সিতে নরমাল ভেজাইনাল ডেলিভারি করানোর জন্য উপযুক্ত থাকেন। এদের মধ্যে ৬০-৮০% মায়ের কোনো সমস্যা ছাড়াই সফলভাবে নরমাল ভেজাইনাল ডেলিভারি সম্ভব হয়। কিন্তু ডেলিভারি ট্রায়াল দেয়ার আগে দেখে নিতে হবে কোন কোন মা এই ডেলিভারির জন্য উপযুক্ত। এ জন্য আগের সিজার সম্পর্কে কিছু তথ্য নিতে হবে। যেমন- আগের সিজারের সংখ্যা : * যাদের আগে একটি সিজার হয়েছে, তারাই কেবলমাত্র পরে ভেজাইনাল ডেলিভারি ট্রায়াল দিতে পারবে। * কী কারণে সিজার হয়েছিল? * সিজার এমন কিছু কারণে হয়েছিল- যা পুনরাবৃত্তি হওয়ার আশঙ্কা কম; যেমন, বাচ্চার অ্যাবনরমাল পজিশনের কারণে সিজার হলে কিংবা বাচ্চা বা মায়ের কোনো সমস্যার কারণে সিজার হলে যা বর্তমান প্রেগনেন্সিতে অনুপস্থিত। * আগে সিজারের স্থানটি কতখানি মজবুত আছে : খড়বিৎ ঁঃবৎরহব পধবংংধৎবধহ ংবপঃরড়হ বা খটঈঝ (জরায়ুর নিচের অংশে সেলাই) এর ক্ষেত্রেই কেবল পরবর্তী সময়ে ভেজাইনাল ডেলিভারি ট্রায়াল দেয়ার সুযোগ থাকে, এ ক্ষেত্রে পূর্বের সেলাই ফেটে যাওয়ার আশঙ্কা ০.৫ থেকে ১.৫%। অন্যদিকে ক্লাসিক্যাল সিজারের ক্ষেত্রে সেলাই ফাটার হার ৪ থেকে ৯%। দুই প্রেগনেন্সির মধ্যে অন্তত দুই বছরের গ্যাপ থাকা উচিত, আগের সেলাইয়ের স্থানটি মজবুত হয়। আগের প্রেগনেন্সিতে পস্নাসেন্টা প্রিভিয়া থাকলে বা সিজারের পর ইনফেকশন হলে সেলাইর স্থানটি দুর্বল করে ফেলে- যা পরে ফেটে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়। এ ছাড়া বর্তমান প্রেগনেন্সিতে মায়ের অন্য কোনো জটিলতা যেমন উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিস থাকলে তাকে নরমাল ভেজাইনাল ডেলিভারি ট্রায়ালের জন্য উপযুক্ত ধরা হয় না। বাচ্চার ওজন চার কেজির কম থাকা এবং প্রসবের রাস্তা যথেষ্ট প্রশস্ত থাকাও ভেজাইনাল ডেলিভারির একটি পূর্ব শর্ত। সবকিছু ঠিক থাকলে এই ডেলিভারির সুবিধা অসুবিধা মা ও অভিভাবকদের অবহিত করতে হবে। ডেলিভারি এমন হস্পিটালে ট্রায়াল দিতে হবে যেখানে ইমারজেন্সি সিজার করার দরকার হলে তা দ্রম্নত এরেঞ্জ করা সম্ভব। বাচ্চা এবং মায়ের নিবিড় পর্যবেক্ষণ করাটা এ ক্ষেত্রে জরুরি বিষয়। উন্নত দেশে লেবারের সময় ঈঞএ (পধৎফরড়-ঃড়পড়মৎধঢ়য) মেশিনের মাধ্যমে বাচ্চাকে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হয়। ২০ থেকে ৫০ ভাগ ক্ষেত্রে ভেজাইনাল ডেলিভারি সম্ভব হয় না এবং ইমার্জেন্সি সিজারের দরকার হয়। এই ডেলিভারির সময় সঠিক মনিটরিং না হলে মা ও বাচ্চার জটিলতার হার বেড়ে যায়। অপরদিকে সফল ভেজাইনাল ডেলিভারির মাধ্যমে শরীরে বাড়তি অস্ত্রপাচার এড়ানো যায়। শরীরে অস্ত্রপাচারেরে সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে টিসু্য এডহেশন এবং টিসু্য ইনজুরির সম্ভাবনা বেড়ে যায় এবং এই ডেলিভারির অস্ত্রপাচারজনিত সমস্ত রিস্ক থেকে মুক্ত। কিন্তু আমাদের দেশে বেশির ভাগ হাসপাতালে এই প্র্যাকটিস করা হয় না, এর কারণ দক্ষ লোকবলের অভাব, মা ও বাচ্চার মনিটরিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অপ্রতুলটা এবং ভেজাইনাল ডেলিভারিতে মায়েদের অনীহা ও ভীতি। য় সুস্বাস্থ্য ডেস্ক