সন্তান জন্মের পর মায়ের চুল পড়া

প্রকাশ | ১১ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
সাধারণত সন্তান জন্মদানের পর মায়েদের প্রচুর চুল পড়ে। কেন এ সময় চুল ওঠে? গর্ভাবস্থায় শরীরে হরমোনের মাত্রা থাকে অনেক বেশি। ডিম্বাশয় পস্নাসেন্টা ইত্যাদি থেকে অনেক হরমোন বের হয়। সন্তানের জন্মের পর এ হরমোনের মাত্রা একেবারে হঠাৎ করে কমে যায়, তার ফলে চুল ওঠে। ব্রেস্টফিডিংয়ের সঙ্গে চুল ওঠার সম্পর্ক আছে কি? ঙ্গ্রেস্টফিডিংয়ের সঙ্গে চুল ওঠার কোনো সম্পর্ক নেই। ঙ্গ্রেস্টফিডিং মা ও শিশুর মধ্যে এক সুন্দর বন্ধন। ফলে মায়ের মনে থাকে এক প্রশান্তি, তাতে চুলের স্বাস্থ্য ভালো হওয়ারই কথা। নরমাল ডেলিভারি ও সিজারিয়ান কোনটিতে বেশি চুল পড়ার আশঙ্কা থাকে? নরমাল ডেলিভারি একটি স্বাভাবিক ঘটনা, তাই হরমোনের মাত্রা কমে স্বাভাবিকভাবে আর সিজারিয়ান সেকশন অপারেশনের পর হরমোনের মাত্রা হঠাৎ করে কমে যায়। তাই সিজারের পর চুল পড়ার আশঙ্কা বেশি। মায়ের অনিদ্রা কি চুল পড়ার কারণ? অবশ্যই। শিশুকে ফিডিং করাতে রাতে বারবার মাকে উঠতে হয়, সারা দিনেও শিশু সামলাতে মা হিমশিম খান, নিজের দিকে খেয়ালই নেই, আমাদের দেশের বেশির ভাগ পরিবারেই সদ্যপ্রসূতির তেমন যত্ন ও খাওয়া-দাওয়া হয় না। এ চুল গজানোর কোনো ওষুধ আছে কি? ক্ষেত্রবিশেষে চিকিৎসক মাথায় স্টেরয়েড ড্রপ ম্যাসাজ করতে বলেন। তাতে কিছুটা কাজ হয়। তা ছাড়া মাথায় ভালোভাবে ম্যাসাজের জন্য রক্ত সঞ্চালন বাড়ে, তাতে চুল গজায়। সন্তান হওয়ার পর কত দিন পর্যন্ত চুল পড়ে? সাধারণত দুই থেকে তিন মাস। ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া ও যত্ন পেলে এই চুল আবার স্বাভাবিকভাবে গজিয়ে যায়। চুলের জন্য এ সময় কী কী বিশেষ যত্নের দরকার? সন্তান পেটে থাকাকালে এই যত্ন শুরু হওয়া দরকার। গর্ভাবস্থা ও বুকের দুধ খাওয়ানো- এ দুই অবস্থাতেই মেয়েদের স্বাভাবিক প্রয়োজনীয় ক্যালরির ওপরে আরও ৩০০ থেকে ৫০০ ক্যালরি অতিরিক্ত প্রয়োজন হয়। তাই প্রোটিন, কার্বহাইড্রেট, ফ্যাট সবই ঠিকমতো খেতে হবে। একবারে না পারলে বারবার অল্প অল্প করে খাওয়া দরকার। ফল ও দুধ খেতে হবে পর্যাপ্ত। আমাদের দেশে সন্তান হওয়ার পর দুধ-সাগু খাওয়ার যে প্রথা প্রচলিত আছে তা ক্যালরির জোগান দেয়। খুব বেশি তেল-মসলা দেয়া খাবার বা অতিরিক্ত ভাজাভুজি না খাওয়াই যুক্তিযুক্ত। অ্যানিমিয়া একটি বড় সমস্যা। আমাদের দেশের ৮০ শতাংশ মায়ের হিমোগেস্নাবিন ১০ গ্রাম শতাংশের নিচে। এর চিকিৎসা অবশ্যই ডাক্তারের নির্দেশ অনুযায়ী করতে হবে। চিকিৎসা মানে ইচ্ছামতো আয়রন বড়ি বা ক্যাপসুল খাওয়া নয়। কোন ওষুধ কার ক্ষেত্রে কার্যকর তা একমাত্র চিকিৎসকই বলতে পারবেন। এ ছাড়া দেয়া হয় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। দুপুরের দিকে শিশুকে দুধ খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে যদি বাড়ির অন্য কোনো আত্মীয় বা পরিচারিকার কাছে রেখে মা নিজে অন্তত দু-তিন ঘণ্টা ঘুমিয়ে নিতে পারেন তাহলে খুব ভালো হয়। দরকার হলে এই সময় শিশুকে খাওয়ানোর জন্য ব্রেস্টমিল্ক বার করে সঞ্চয় করে রেখে দেয়া যেতে পারে। সপ্তাহে দুদিন ননমেডিকেটেড শ্যাম্পু দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলুন। রাতে শোয়ার আগে মাথায় লাইট হেয়ার অয়েল তুলোয় ভিজিয়ে নিয়ে ম্যাসাজ করুন অন্তত পাঁচ মিনিট। সন্তান জন্মদানের পর মায়ের শরীর-স্বাস্থ্যের সঙ্গে চুল ও ত্বকের পূর্ণাঙ্গ পরিচর্যা খুবই দরকার। অনেক সময় সন্তান জন্মদানের পর মা তার স্বাভাবিক জলুস হারিয়ে ফেলেন। চুলের প্রকৃত যত্ন না নেয়ার ফলে মায়ের মাথায় টাক পর্যন্ত দেখা যেতে পারে। তাই চুল পড়াকে অবহেলা না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন ও চিকিৎসা নিন। য় সুস্বাস্থ্য ডেস্ক