আঁচিল দূর করার সহজ উপায়

আঁচিল শরীরে তখনই হয়, যখন ত্বক ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়। মুখে আঁচিল হলে সমস্যার শেষ থাকে না। বিশেষ করে আঁচিল মেয়েদের বেশি হয়ে থাকে। এর কারণ সর্বদা শরীর জামা-কাপড়ে ঢাকা থাকে আর তখনই আঁচিল সংক্রমণকারী জীবাণু খুব অল্পসময়ে ত্বকের উপরিভাগে আক্রমণ করে। তবে পুরুষের কাঁধে আঁচিল খুব বেশি দেখা যায়।

প্রকাশ | ০১ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

য় সুস্বাস্থ্য ডেস্ক
অনেকে মনে করি, আঁচিল প্রাকৃতিকভাবে শরীরে হয়ে থাকে কিন্তু এই ধারণা ভুল। আঁচিল শরীরে তখনই হয়, যখন ত্বক ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়। মুখে আঁচিল হলে সমস্যার শেষ থাকে না। বিশেষ করে আঁচিল মেয়েদের বেশি হয়ে থাকে। এর কারণ সর্বদা শরীর জামা-কাপড়ে ঢাকা থাকে আর তখনই আঁচিল সংক্রমণকারী জীবাণু খুব অল্পসময়ে ত্বকের উপরিভাগে আক্রমণ করে। তবে পুরুষের কাঁধে আঁচিল খুব বেশি দেখা যায়। আঁচিল হলে সাধারণত মানুষ চিন্তা বা চিকিৎসা করে না। কুসংস্কার হিসেবে প্রচলিত আছে যে, আঁচিল হলে মাথার চুল বেঁধে রাখলে আঁচিল সেরে যাবে। কথাটা যদিও কার্যকর তবে এটা আঁচিল হওয়া ক্ষতস্থানে আরও বড় আঁচিল হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আর আঁচিল যদি একবার বড় হয়ে যায় তাহলে ক্ষতস্থান থেকে গাছের শিকড়ের ন্যায় রূপ নিতে পারে। তাই আঁচিল হলে অবশ্যই খুব দ্রম্নত চিকিৎসা নিতে হবে। চলুন জেনে নেয়া যাক। আঁচিল হলে কি করবেন? প্রথমেই হোমিও চিকিৎসার কথা উলেস্নখ করা হলো। আঁচিল রোগের কোনো অ্যালোপ্যাথিক মেডিসিন নেই; তাই সাধারণত হোমিও চিকিৎসা নেয়া হয়। আঁচিল দূর করতে হোমিও মেডিসিন অত্যন্ত কার্যকরী। সর্বোচ্চ একুশ দিনের মধ্যে হোমিও মেডিসিন সম্পূর্ণভাবে আঁচিল দূর করতে সক্ষম। আঁচিল দূর করার জন্য যে মেডিসিন ব্যবহার করা হয়ে থাকে তার নাম সুজা মাদার ও সুজা। সুজা মাদার তুলা দিয়ে আঁচিল আক্রান্ত স্থানে তিন বার লাগাতে হবে। আর মুখে সেবন যোগ্য হিসেবে সুজা-২০০ থেকে শুরু করে সুজা-১০ এম পর্যন্ত সেবন করতে হবে। প্রাকৃতিকভাবে আঁচিল দূর করতে পেঁয়াজ অত্যন্ত ফলদায়ক। পেঁয়াজ কুচি করে কেটে একটি পাত্রে সারা দিন ঢেকে রেখে দিন। রাতে ঘুমানোর আগে পেঁয়াজ কুচির সঙ্গে সামান্য লবণ মিশিয়ে আঁচিল হওয়া ক্ষতস্থানে লাগিয়ে দিন। প্রথম অবস্থাতে হালকা ঝাঁজ বা জ্বালা করতে পারে, তবে এই পদ্ধতি আঁচিল দূর করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। টি ট্রি অয়েল আঁচিল সম্পূর্ণ নির্মূল করতে সক্ষম। কিছু তুলা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এবার টি ট্রি অয়েল ভেজা তুলাতে নিয়ে আঁচিল হওয়া ক্ষতস্থানে ঘষতে থাকুন। আপনার আঁচিল হওয়া ক্ষতস্থানে চুলকাতে পারে, তারপরেও আপনি ভালো করে টি ট্রি অয়েল দিয়ে আক্রান্তস্থান পরিষ্কার করুন। অল্প কিছুদিনের মধ্যে আপনার আঁচিল দূর হবে। অ্যালোভেরা জেল আঁচিল দূর করার অ্যান্টিসেপটিক থাকে। অ্যালোভেরা পাতা থেকে জেল টুকু ছাড়িয়ে আঁচিল হওয়া আক্রান্তস্থানে ম্যাসাজ করুন। ত্বকে জেল শুকিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। এরপরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। আপনার আক্রান্তস্থান থেকে আঁচিল ধীরে ধীরে শুকিয়ে ছোট হয়ে পরিপূর্ণভাবে দূর হবে। ছুলি থেকে মুক্তির উপায় ছুলি একটি চর্মরোগ। ছুলি শরীরের যে কোনো স্থানে হতে পারে যেমন- মুখে, গলাতে, ঘাড়ে, কাঁধে, বগলে, বুকে, পেটে, হাতে ও পায়েসহ বিভিন্ন স্থানে হয়ে থাকে। ছুলি একটি ছোঁয়াচে রোগ, পরিবারের কারো ছুলি হলে অন্য সুস্থ ব্যক্তির মাঝে ছুলি ছড়িয়ে পড়তে পারে। ছুলি কেন হয়? ছুলি বিভিন্ন কারণে হতে পারে। তবে অ্যালার্জির কারণে ছুলি বেশি হয়ে থাকে। তা ছাড়া ব্যাকটেরিয়া দ্বারা ছুলি প্রকোপ হতে পারে। প্রায় ৫০% রোগীর ক্ষেত্রে যাদের দীর্ঘস্থায়ী ছুলি হয়, এর কারণ একটি স্বয়ংক্রিয় ইমিউন প্রতিক্রিয়া। ছুলি দেখতে কেমন হয়? উন্মুক্ত স্থানে সাদা বা বাদামি রঙের দাগ দেখা যায়। সঁ্যাতসেঁতে ও গরম আবহাওয়ায় ছুলির সংক্রমণ বেশি হয়। সাধারণ ত্বকের থেকে ছুলির রং সাদা হয় এবং লোমগুলো সাদা বর্ণ ধারণ করে। ছুলি হলে করণীয় ছুলি সাধারণত দীর্ঘমেয়াদি হওয়াতে এই রোগের মেডিসিন সেবন করতে হয় অনেক ধর্য্য ধরে। ছুলি রোগ সম্পূর্ণ সেরে তুলতে হোমিওপ্যাথি মেডিসিন ভালো সমাধান দেয়। তবে কিছু প্রাকৃতিক উপায় আছে যা ব্যবহার করলে ছুলি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। ১) লেবুর রস ও মধু এক সঙ্গে মিশিয়ে নিয়মিত সকাল ও রাতে ছুলির স্থানে লাগালে ছুলি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তবে অবশ্যই ভালো ফলাফল পেতে ১ থেকে ২ মাস ব্যবহার করতে হতে পারে। ২) লেবুর রস ও হাইপো খুব ভালো কাজ দেয় ছুলি দূর করতে। প্রতিদিন গোসলের আগে এই মিশ্রণটি ভালোভাবে ব্যবহার করলে ৩ সপ্তাহের মধ্যে ছুলি দূর হবে। ৩) পেঁয়াজের মধ্যে প্রচুর সালফার থাকে। যা ছুলির ত্বক স্বাভাবিক করতে সাহায্য করে। এ ছাড়া ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত ছুলির চুলকানি দূর করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে পেঁয়াজ। ৪) সাদা তিল ও হলুদ খুব ভালো ফলাফল দেয় ছুলির জন্য। সাদা তিল ও কাঁচা হলুদ একসঙ্গে বেটে ছুলির হওয়া স্থানে ১৫ মিনিটের জন্য লাগাতে হবে এবং ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুঁয়ে ফেলতে হবে। ৫) টক দইতে প্রচুর ল্যাকটিক এসিড থাকে যা আমাদের ত্বকের যে কোনো চর্মরোগের জন্য বেশ উপকারী। তবে বিশেষ করে ছুলির ক্ষেত্রে টক দই ব্যবহার করা উত্তম। গোসলের আগে টক দই ছুলির উপর লাগিয়ে দিতে হবে এবং শুকিয়ে গেলে ধুঁয়ে ফেলতে হবে। ছুলি সেরে তুলতে সময় লাগতে পারে, অনেক সময় ছুলি অনেক জায়গা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে, তখন ছুলি পুরোপুরি দূর করতে বেশ সময় লাগতে পারে। আর ছুলির জন্য কোনো হোমিও সেবন করার মনস্থির করলে অবশ্যই একজন ভালো হোমিও ডাক্তারের নিদের্শ গ্রহণ করে তারপরে হোমিও সেবন করা প্রয়োজন।