মানুষের শরীরে ৬ শতাধিক বাতরোগ হতে পারে

প্রকাশ | ১৮ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি হেলথ ডেস্ক
মানুষের শরীরে ছয় শতাধিক বাতরোগ হতে পারে, সেক্লরোডামার্ এদের মধ্যে অন্যতম। ‘সেক্লরো’ শব্দের অথর্ শক্ত, ‘ডামার্’ শব্দের অথর্ ত্বক বা চামড়া, ‘সেক্লরোডামার্’ শব্দের অথর্ ‘শক্ত ত্বক বা চামড়া’। এ রোগে সাধারণত ত্বক বা চামড়া শক্ত হয়ে যায়, তবে ত্বকের পাশাপাশি এ রোগে শরীরের ভিতরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও আক্রান্ত হতে পারে, যদি শরীরের ভিতরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আক্রান্ত হয়, তাহলে তাকে সিস্টেমিক সেক্লরোসিস বলে। সম্প্রতি ‘বিশ্ব সেক্লরোডামার্ দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত র‌্যালি ও সেমিনারে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রিউমাটোলজি বিভাগ ও বাংলাদেশ রিউমাটোলজি সোসাইটির যৌথ উদ্যোগে দিবসটি উপলক্ষে রোগীদের সঙ্গে সচেতনতামূলক মতবিনিময় সভা আয়োজন করা হয়। র‌্যালিতে নেতৃত্ব দেন ভিসি অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়–য়া। চিকিৎসকরা জানান, এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার সঙ্গে সম্পকর্যুক্ত একটি রোগ। আমাদের শরীরের নিজস্ব একটি রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা আছে, যা নিজ থেকেই শরীরকে বিভিন্ন রোগের আক্রমণ থেকে রক্ষা করে। কিন্তু এই রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা হঠাৎ যখন পাগলামি শুরু করে এবং নিজেই নিজের শরীরকে আক্রমণ করে বসে তখন এ জাতীয় রোগ হয়। তবে আজ পযর্ন্ত এই রোগের সঠিক কোনো কারণ সম্পূণর্ জানা যায়নি। এ রোগের সাধারণ উপসগর্গুলো হলোÑ শুরুতে হাত ও পায়ের পাতা এবং ওপরের তালুসহ আঙ্গুলগুলো ফুলে যায়, এরপর চামড়া ধীরে ধীরে মোটা এবং শক্ত হওয়া শুরু করে। কারও কারও ক্ষেত্রে এটি হাতের কনুই এবং পায়ের হঁাটু পযর্ন্ত সীমাবদ্ধ থাকতে পারে, কারও কারও ক্ষেত্রে এটি কনুই ও হঁাটুর উপরিভাগসহ মুখমÐল, বুক এবং পিঠের চামড়া আক্রান্ত করতে পারে। পরে আঙ্গুলের মাথাগুলো চিকন হয়ে যেতে পারে, অনেকের ক্ষেত্রে আঙ্গুলগুলোর মাথায় ঘা হতে পারে। এ রোগের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো ঠাÐা পানি বা ঠাÐা আবহাওয়ায় অথবা মানসিক বিষণœতায় হাতের আঙ্গুলগুলো নীল এবং ফ্যাকাশে বণর্ ধারণ করে। কারও কারও ক্ষেত্রে এ রোগ ত্বকের পাশাপাশি অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আক্রমণ করতে পারে, যেমন: ফুসফুস, হৃদযন্ত্র, কিডনি, অন্ত্র ইত্যাদি। আবার কারও কারও ক্ষেত্রে এ রোগ ত্বক আক্রমণ না করেও ভিতরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আক্রান্ত করতে পারে। এ রোগে গিঁরায় গিঁরায় ব্যথা হতে পারে। ফুসফুস আক্রান্ত হলে রোগীরা সাধারণত অল্প পরিশ্রমেই হঁাপিয়ে ওঠেন, সেই সঙ্গে খুসখুসে কাশিও হতে পারে। খাদ্যনালি এবং পাকস্থলী আক্রান্ত হলে বুক জ্বালাপোড়া করতে পারে, গলায় খাবার উঠে আসতে পারে ইত্যাদি। অন্যান্য উপসগর্গুলো হলোÑ গিঁরায় গিঁরায় ব্যথা হওয়া, বুক জ্বালাপোড়া করা, গলায় খাবার উঠে আসা, শ্বাসকষ্ট হওয়া, কিডনিজনিত সমস্যার কারণে রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি। আলোচনা অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সেক্লরোডামার্ সম্পকের্ বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে সুস্পষ্ট ধারণা নেই। ফলে এ রোগের রোগের রোগীরা নানাবিধ কুসংস্কারে আচ্ছন্ন থাকেন। এ রোগের চিকিৎসাব্যবস্থা দীঘের্ময়াদি। সঠিক সময়ে রোগ নিণর্য় এবং উপযুক্ত চিকিৎসা রোগীদের ভোগান্তি অনেকটাই কমিয়ে আনতে পারে। বিএসএমএমইউ রিউমাটোলজি বিভাগ প্রতি বুধবার সেক্লরোডামার্ ক্লিনিকের ব্যবস্থা করে থাকে, যেখানে শুধু সেক্লরোডামার্ রোগীদের বিশেষায়িত চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়।