শীতকালে হার্ট অ্যাটাক

প্রকাশ | ২২ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
শীতের সময় এটা জানা প্রয়োজন যে, কীভাবে ঠান্ডা আবহাওয়া আপনার স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে- বিশেষ করে আপনার হার্টকে। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের মতে, 'শরীর উষ্ণ রাখা' আপনার হার্ট রক্ষায় সাহায্য করতে পারে। ঠান্ডা আবহাওয়া শরীরের তাপকে সরিয়ে দেয়, যার মানে হচ্ছে- শরীর মূল তাপমাত্রাকে যথেষ্ট উষ্ণ রাখার জন্য কঠিনতর লড়াই করে। বৃদ্ধ, যাদের শরীরে চর্বি কম থাকে ও তাপমাত্রা অনুভব করার ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে এবং কার্ডিওভাসকুলার রোগের রোগীদের জন্য এটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রতিবেদনে ঠান্ডা আবহাওয়ার সম্ভাব্য ঝুঁকি এবং তা থেকে হার্টকে রক্ষা করার বিষয়ে আলোকপাত করা হলো। অল্প ব্যায়াম বা অনুশীলন ঠান্ডা পড়ার মানে এই নয় যে, আপনি গতিশীল বা চলনশীল থাকবেন না অথবা নড়াচড়া করবেন না। সেই সঙ্গে তাপমাত্রা কমে গেলেও নিজেকে চলনশীল রাখা প্রয়োজন। ব্যায়াম বা অনুশীলন আপনার হার্টকে শক্তিশালী করে (যেমন- সব পেশি) এবং করোনারি আর্টারি রোগ ও ভাস্কুলার রোগ থেকে রক্ষায় সহায়তা করে। ডা. জেনিফার এইচ মিয়ারেস এবং 'হার্ট স্মার্ট ফর ওমেন' ও 'সিক্স স্টেপস ইন সিক্স উইকস টু হার্ট-হেলদি লিভিং'-এর সহলেখক স্টেসি ই. রোজেনের মতে, বসে না থেকে বা দাঁড়িয়ে না থেকে আপনার শরীরকে চলনশীল রাখার জন্য প্রতিটি সুযোগকে কাজে লাগানোর দিকে আপনার লক্ষ্য থাকা উচিত। খারাপ ঘুমের অভ্যাস আপনার ভালো থাকার জন্য রাতে ভালো ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে আপনার হার্ট স্বাস্থ্যের জন্য। ঘুম আপনার হার্ট এবং রক্তনালিকে আরোগ্য ও মেরামত করে। নিয়মিত ভিত্তিতে অপর্যাপ্ত ঘুমের সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধির সম্পর্ক আছে। শীতের সময় আপনার কক্ষ তাপমাত্রা খুবই কম হলে তা আপনার ঘুমের প্যাটার্নে হস্তক্ষেপ করতে পারে। ওভারস্স্নিপ বা অতিরিক্ত ঘুম না যাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। উচ্চ মানসিক চাপ স্ট্রেস বা উচ্চ মানসিক চাপ আপনার হার্ট ও রক্তনালিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। স্ট্রেস হরমোন, যেমন- করটিসল ও অ্যাড্রিনালাইন এবং প্রদাহমূলক প্রোটিন সাইটোকিন ধমনিকে শক্ত করে এবং স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। আপনার মানসিক চাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের প্রথম ধাপ হলো- কি কারণে স্ট্রেস বৃদ্ধি পাচ্ছে তা শনাক্ত করা। তারপর মানসিক চাপ কমানোর জন্য কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। শীতকালে আপনি একাকিত্ব ও বিচ্ছিন্নতা অনুভব করলে কাউকে ডাকুন। ৪. ফ্লুর ঝুঁকি যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের মতে, শরৎকাল ও শীতকালে ফ্লুর ভাইরাস সর্বাধিক কমন। ফ্লু অত্যন্ত সংক্রামক এবং হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বৃদ্ধির সঙ্গে এটি জড়িত। আপনার হৃদরোগ থাকলে কিংবা কোনো স্ট্রোক হয়ে থাকলে সিজনাল ভ্যাকসিন নেয়া গুরুত্বপূর্ণ। সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন শুধু ভ্যাকসিন নয়, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণেরও পরামর্শ দিয়েছে, যেমন- পাবলিক স্পেস থেকে আসার পর সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধোয়া, জীবাণু ছড়ানো প্রতিরোধ করার জন্য চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকা। আপনার কাশি বা হাঁচির সময় টিসু্যপেপার দিয়ে নাক ও মুখ ঢাকার মাধ্যমে আপনি অন্যদের রক্ষা করতে পারেন- ব্যবহারের পর টিসু্যপেপার ফেলে দিন এবং মেডিকেল সেবার প্রয়োজন ছাড়া অসুস্থ থাকাকালীন সময় ঘরে অবস্থান করুন। শ্রমসাধ্য কার্যকলাপ ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি হেলথের কার্ডিওলজিস্ট রিচার্ড কোভাক্স বলেন, আপনার ইতোমধ্যে একবার হার্ট অ্যাটাক হয়ে থাকলে কিংবা হার্ট অ্যাটাক হওয়ার ঝুঁকি থাকলে, আপনার ঝুঁকি ও শারীরিক সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে জেনে নেয়া উচিত। ঠান্ডা আবহাওয়ার সময় কিছু কার্যকলাপ পরিহার করুন, যেমন- বেলচা দিয়ে উত্তোলন বা কাজ করা, বরফে হাঁটা এবং ঝড়ো বা শৈত্যময় আবহাওয়ায় ড্রাইভিং করা- এসব কাজ হার্টে স্ট্রেস বাড়াতে পারে। হার্ট অ্যাটাকের সতর্কীকরণ উপসর্গ সম্পর্কে অবগত আছেন কিনা নিশ্চিত হয়ে নিন, বিশেষ করে শ্বাসকষ্ট এবং বুকের অস্বস্তি। আপনার শোভেলিং বা বেলচা দিয়ে কাজ করার প্রয়োজন পড়লে, ডা. অ্যান্ড্‌রু ফ্রিম্যানের পরামর্শের আলোকে বলা যায়, সকালে প্রথমেই শোভেলিং করবেন না, কারণ সকালে রক্তজমাটের সম্ভাবনা বেশি থাকে, নিজেকে প্রস্তুত করতে সময় নিন এবং হাতে বেলচা নেয়ার আগে নিজেকে চলনশীল রাখুন। অত্যধিক অ্যালকোহল সেবন নর্থওয়েস্টার্ন মেডিসিনের বিশেষজ্ঞরা বলেন, অ্যালকোহল আপনাকে উষ্ণ অনুভূতি দেবে, কিন্তু বিশেষ করে এ অবস্থায় ঠান্ডা আবহাওয়ায় বাইরে বের হলে আপনি বিপজ্জনক পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারেন। এসব পানীয় নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন এবং ঠান্ডা রাতে বাইরে বের হওয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করুন। লেয়ারে ড্রেসিং করে উষ্ণ ও শুষ্ক থাকুন, লাইটওয়েট ও ইনসুলেটিং বেইস লেয়ার দিয়ে শুরু করুন। ত্বক কতটুকু অনাবৃত আছে তার ওপর নির্ভর করে শরীর কতটুকু তাপমাত্রা হারাবে, তাই হ্যাট, স্কার্ফ ও গস্নাভস পরিধান করতে ভুলবেন না যেন। য় সূত্র : ইন্টারনেট