যে খাবার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখবে

কিছু নিয়ম মেনে চললে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রেখে সুস্থ জীবনযাপন করা যায়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার অনেক উপায় আছে। ওষুধ, নিয়মিত ব্যায়ামসহ নানাভাবে এই রোগ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। তবে সব চেষ্টাই ব্যথর্ হবে যদি আপনি খাবার নিয়ন্ত্রণ না করেন। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় এমন খাদ্য রাখতে হবে, যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। আর সেটিও হতে হবে পরিমাণমতো...

প্রকাশ | ২৫ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বতর্মান বিশ্বে চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ডায়াবেটিসের সমস্যা এখন ঘরে ঘরে। এটি একটি বিপাকীয় প্রক্রিয়া সংক্রান্ত ব্যাধি। বতর্মান বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটায় এরকম প্রধান পঁাচটি কারণের মধ্যে ডায়াবেটিস অন্যতম। তাই ডায়াবেটিকসের ভয়াবহতা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা একান্ত জরুরি। ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগ পুরোপুরি বা সম্পূণর্ নিরাময় করা যায় না। তবে কিছু নিয়ম মেনে চললে এটি নিয়ন্ত্রণে রেখে সুস্থ জীবনযাপন করা যায়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার অনেক উপায় আছে। ওষুধ, নিয়মিত ব্যায়ামসহ নানাভাবে এই রোগ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। তবে সব চেষ্টাই ব্যথর্ হবে যদি আপনি খাবার নিয়ন্ত্রণ না করেন। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় এমন খাদ্য রাখতে হবে, যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। আর সেটিও হতে হবে পরিমাণমতো। চলুন জেনে নেয়া যাকÑ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এমন কিছু খাবার সম্পকের্। বাদাম : বাদাম অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার। এটি নিয়মিত খেলে বিভিন্ন রোগে মৃত্যুর ঝুঁকি কমে যায়। বাদামে প্রচুর অঁাশ, পুষ্টিকর উপাদান ও হৃৎপিÐের জন্য উপকারী উপাদান আছে। বাদামে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি। দৈনিক ১০ গ্রাম বাদাম গ্রহণ করলে মারণব্যাধি রোগের ঝুঁকি থেকেও রক্ষা পাওয়া যাবে বলে দাবি গবেষকদের। বীজ : বাদামের মতো বীজজাতীয় খাদ্য শস্যও আমাদের দেহের জন্য উপকারী। এতে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ আছে। ডায়াবেটিস রোগীর জন্য সূযর্মুখীর বীজ ও কুমড়ার বীজ অনেক উপকারী। বীজ খেলে দেহে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে। মাছ : মাছে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন থাকে। একটি সুস্থ জীবনধারার জন্য প্রোটিন অতীব গুরুত্বপূণর্, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। মাছে ওমেগা-৩ আছে এবং যা স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমায়। মাছ বেশি করে ভেজে খাওয়া ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। স্ট্রবেরি, বøুবেরি, জামজাতীয় ফল : বেরিজাতীয় এই ফলগুলো বিশ্বের অধিক পুষ্টিকর খাদ্যের মধ্যে অন্যতম। এসব ফলে অ্যানথোসায়োনেনস নামের উপাদান রয়েছে, যা মানবদেহের রক্তের ইনসুলিন ভারসাম্য ঠিক রাখে ও রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস করে। ডায়াবেটিস দুই টাইপের হয়, যেমন টাইপ-১ ও টাইপ-২। টাইপ-১ রোগীদের জন্য বেরি ইনসুলিন উৎপাদন বাড়িয়ে দেয় ও টাইপ-২ রোগীদের জন্য রক্তে শকর্রার পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে। তারা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবারসমৃদ্ধ। মটরশুঁটি : ফাইবার বা অঁাশযুক্ত খাবার ডায়াবেটিস রোগীর জন্য অনেক উপকারী। মটরশুঁটিতে আছে ভরপুর ফাইবার। মটরশুঁটি রক্তের গøুকোজের মাত্রাকে সাধারণ মাত্রায় রাখে। ব্র্রোকলি : সবজি জিনিসটা সব মানুষের জন্য উপকারী। কিন্তু ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অতীব জরুরি একটি খাবার হলো সবজি। ব্রোকলি একটি ভিটামিন-সিসমৃদ্ধ এমন একটি বিশেষ যৌগ আছে, যা ডায়াবেটিসের সঙ্গে যুদ্ধ করে রক্তে শকর্রার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। ব্রোকলি হৃদরোগের বিরুদ্ধেও বেশ কাযর্কর। পাতা/বঁাধাকপি : শীতকালীন সবজি পাতাকপি বা বঁাধাকপি। আমাদের দেশে পাতাকপি ভাজি একটি জনপ্রিয় খাবার। বিশেষ করে মাংসের সাথে পাতাকপির ঝোল বেশ উপাদেয় খাবার। সালাদে শশা, গাজর, টমেটোর সঙ্গে পাতাকপি মেশালে অনেক মজা হয়। পাতাকপি অনেক কম কাবর্যুক্ত। এই সবজি টাইপ-২ রোগীদের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস করে এবং টাইপ-১ রোগীদের রক্তে শকর্রার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে। অ্যাভোকাডো : মেক্সিকো ও মধ্য আমেরিকার ফল অ্যাভোকাডো। তবে চাষ করলে দেশের মাটিতেও ফলানো যায় এই ফল। ভেষজ চিকিৎসায় অ্যাভোকাডো যেন সবর্ রোগের মহৌষুধ। অ্যাভোকাডো শরীরের রক্তে শকর্রার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এমনকি এটি হৃদরোগের বিরুদ্ধেও লড়াই করে। চা : চা এন্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ একটি পানীয়। গ্রিন-টি বা সবুজ চা কিংবা রং চা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য উপকারী। তবে চায়ে চিনি মেশানো যাবে না। আপেল : কথায় আছে ‘এন আপেল এভরিডে, কিপস দ্যা ডক্টর অ্যাওয়ে’ অথার্ৎ প্রতিদিন একটি আপেল খান, আপনাকে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে না। আপেল রোগ প্রতিরোধক ও পুষ্টিকর একটি ফল। আপেলে শকর্রা প্রায় ৫০ শতাংশ। এটি হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় ও রক্তে কোলেস্টরলের মাত্রা স্থির রাখে। রসুন : রসুনের উপকারিতা অনেক। রান্নার পাশাপাশি রসুন স্বাস্থ্য ভালো রাখার ওষুধ হিসেবেও কাজ করে। রসুন কোলেস্টরলের মাত্রা এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। পালংশাক : পালংশাক অনেক পুষ্টিকর। এতে আছে প্রচুর এন্টিঅক্সিডেন্ট। তাজা এবং অল্প সেদ্ধ করে খেলে বেশি এন্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। পালংশাক ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক উপকারী। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সবচেয়ে সুপরিচিত খাবারের মধ্যে রয়েছে পালংশাক। ডাকর্ চকোলেট : আপনারা ভাবছেন চকোলেট তাও আবার ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য? হ্যঁা ডাকর্ চকোলেট ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। কেননা এতে মিষ্টির পরিমাণ অনেক কম থাকে। এটি শুধু এন্টিঅক্সিডেন্ট পূণর্ নয়। এটি শরীরে ইনসুলিন এর মাত্রাও নিয়ন্ত্রণ করে। দারুচিনি : দারুচিনিতে সামান্য পরিমাণ প্রোটিন থাকে। তা ছাড়া এতে আছে প্রচুর মিনারেল ও ভিটামিন। এটি রক্তে কোলেস্টরলের পরিমাণ ১০ শতাংশ কমিয়ে দেয়। এটি হৃদয় সুস্থ রাখে। এটি রক্তে শকর্রার পরিমাণও নিয়ন্ত্রণে রাখে। মিষ্টি আলু : আলু আমরা সবাই কম বেশি খেতে পছন্দ করি। যেমন আলুর দম, আলু ভাজি, আলুর চিপস। আলু দিয়ে তৈরি যে কোনো খাবার খেতেই দারুণ মজা লাগে। সাধারণত সাদা আলু দিয়ে এসব তৈরি করা হয়ে থাকে। কিন্তু মিষ্টি আলু নামক একটি আলু আছে, যার অনেক গুণাবলি আছে। যেমন এটি ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে ইনসুলিনের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে এবং রক্তে শকর্রার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। য় সূত্র: ডিডাবিøউ