শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিজয়ের মাসে তারুণ্যের ভাবনা

ডিসেম্বর, অহঙ্কার আর গৌরবের মাস; আমাদের বিজয়ের মাস। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরেই সূচনা হয় বাঙালির নবজীবনের। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে পরাভূত হয় পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী। আমরা পেয়েছি এই লাল সবুজের পতাকা। এই দেশ। স্বাধীন বাংলাদেশ। বিশ্বের বুকে আবির্ভূত হয় একটি জাতি-রাষ্ট্র বাংলাদেশ। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে এই বাংলাদেশের আছে নানা অর্জন, আছে নানা চ্যালেঞ্জ। মুক্তিযুদ্ধে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছিল দেশের তরুণ সমাজ। বিজয়ের মাসে কী ভাবছেন তরুণরা? তাদের ভাবনা জানার চেষ্টা করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের
রকি আহমেদ
  ০৮ ডিসেম্বর ২০২০, ০০:০০

মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে

বাংলাদেশের স্বাধীনতার রয়েছে সুদীর্ঘ রক্তঝরা ইতিহাস। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিজয়ের স্বাদ পেয়েছে। কিন্তু বিজয়ের অর্ধশত বছর পূরণের ক্রান্তিলগ্নে এসেও হত্যা, ধর্ষণের মতো নানা জঘন্য ঘটনা এখনো থামেনি। জনগণের মৌলিক চাহিদাগুলো এখনো পূরণ হয়নি। নতুন প্রজন্মের অনেকেই আমাদের ইতিহাস জানে না। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে তাদের স্মৃতিরক্ষার্থে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। তরুণ প্রজন্মের বিজয় সেদিনই হবে, যেদিন মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে থাকা কালো হাতগুলোর উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত হবে। তবে ইতোমধ্যে তা কিছু অংশে সম্পন্ন হয়েছে। বাকিদের বিচার সম্পন্ন করতে হবে।আমাদের স্বপ্ন একটি সুখী শান্তিপূর্ণ অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার।

তন্বী আক্তার

শিক্ষার্থী, ইসলাম শিক্ষা বিভাগ

সদস্য, যায়যায়দিন

ফ্রেন্ডস ফোরাম, জবি।

সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে হবে

ডিসেম্বর মাস আমাদের বিজয়ের মাস। দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমরা পেয়েছিলাম আকাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বাংলাদেশই প্রথম দেশ যারা রক্তের বিনিময়ে বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন দেশ হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। তবে একটি প্রবাদ আছে, 'স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা আরও কঠিন'। আমাদের স্বাধীনতা ও স্বাধিকার রক্ষা করতে হলে তরুণ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শ ধারণ করার কোনো বিকল্প নেই। আমরা তরুণরা মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি। তাই আমাদের কাছে এই সংগ্রামের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে হবে। বিকৃত ইতিহাস যেমন আমাদের তরুণ সমাজকে বিপথগামী করবে তেমনি ক্ষতির সম্মুখীন হবে দেশ ও জাতি। মহান বিজয় দিবসে আমাদের সবার প্রত্যাশা মুক্তিযুদ্ধের আত্মকথা অন্তরে ধারণ করে আমরা এগিয়ে আসব দেশের প্রতিটি সংকটকালে। নিজেদের নিয়োজিত করব দেশ ও দশের কল্যাণে। আমরা তরুণ প্রজন্ম সুদৃঢ় করব আমাদের স্বাধীনতাকে।

কেয়া রাণী সরকার

শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ

সদস্য, যায়যায়দিন ফ্রেন্ডস ফোরাম, জবি।

শহীদদের স্বপ্ন পূরণে

কাজ করতে হবে

বিজয় শব্দটি সব সময়ের জন্যই আনন্দদায়ক। বিজয় শব্দটি শুনলেই খুশি লাগে। তবে সেটা যদি হয় বাংলাদেশের বিজয় দিবস তাহলে তো বাঁধভাঙা আনন্দের অনুভূতির আলোড়ন শুরু হয় হ্রদয়ে। তবে বিজয় শব্দটি যতটা আনন্দের এই শব্দের পিছে লুকিয়ে আছে তার থেকে বেশি দুঃখ-দুর্দশার চিত্র। ৩০ লাখ শহীদের রক্ত ও মা- বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে পাওয়া আমাদের এই বিজয়ী দেশকটাকে শহীদদের স্বপ্নে লালন করতে হবে। কিন্তু বর্তমান সময়ে বিভিন্ন পেক্ষাপটে শুরু হয় বিভিন্ন দল-সংগঠনের স্বাধীনতাবিরোধী নানা কর্মকান্ড। যা আমাদের দেশের মুক্তিযুদ্ধাদের মনে লালিত স্বপ্নের বিপরীত পরিপন্থি। এমন বৈষম্য আচার-আচরণ তাদের আত্মাকে কষ্ট দেয়। আর তাই মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে ও বাংলাদেশের বিজয় সম্পর্কে সবার জ্ঞান অর্জন করতে হবে। সঠিক তথ্য বিশ্লেষণে ও জ্ঞান আহরণে পরিপূর্ণ হোক দেশের প্রতিটি মানুষের হৃদয়। প্রতিটি মানুষের মনে লালিত হোক মুক্তিযুদ্ধের চেতনা।

ইমরান হুসাইন

শিক্ষার্থী, বাংলা বিভাগ

সদস্য, যায়যায়দিন

ফ্রেন্ডস ফোরাম, জবি।

'৭১-এর বিজয় তারুণ্যের প্রেরণা

বিজয়ের ৪৯ বছর পূর্ণ হতে আর কিছুদিন বাকি। বিজয়ের ইতিহাস তারুণ্যের জয়ের ইতিহাস। সেই একাত্তরে মার্চ, তারুণ্যের অগ্নি স্স্নোগানে প্রকম্পিত হলো সারাদেশ। তারপর ৭ মার্চে কবির সেই বুদ্ধিদীপ্ত কবিতা। তারুণ্যের প্রাণে লাগল দোলা। এক ডাকে, তারুণ্যের হাঁকে গোটা দেশ হলো অচল। মাঝে ২৫ মার্চ কালরাতে বাঙালির হাঁক-ডাক বন্ধ করতে পাকিস্তান দোসররা চালালো গণহত্যা। কি মর্মান্তিক। কিন্তু তারুণ্যের কণ্ঠ রোধ কি এতো সহজ! জনসমুদ্রের মতো তরুণ প্রাণ এগিয়ে আসল। মা, মাটিকে রক্ষা করতে হবে। যুদ্ধে এক তরুণের প্রাণ যায়, দশ তরুণ যোগ দেয়। অবশেষে আসল কাঙ্ক্ষিত বিজয়। এ বিজয় গর্বের, এ বিজয় তারুণ্যের অনুপ্রেরণা। বর্তমানে দেশের যে কোনো সংকটময় মুহূর্তে তরুণদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে। দেশের অন্যায়, অনিয়ম, দুর্নীতির বিরুদ্ধে তরুণ্যদের এগিয়ে আসতে হবে। তাই বাংলায় '৭১-এর সেই টগবগে তারুণ্য ফিরে আসুক।

বানী চৌধুরী

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ

সদস্য, যায়যায়দিন ফ্রেন্ডস ফোরাম।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে