প্রতিটি রাষ্ট্রের মতো আমাদেরও আছে একটি সমৃদ্ধশালী বিজয়ের ইতিহাস। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আমরাই প্রথম জাতি, যারা যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত ভূখন্ড আমাদের এই বাংলাদেশ। আমাদের প্রজন্ম নিজের চোখে মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি। এ কারণে মায়ের গর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হয়েই একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছি আমরা। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় আমাদের পূর্বসূরিদের কষ্টার্জিত বিজয়ের ৪৯ বছরেও সর্বস্তরের মানুষের মুক্তি আজও মিলেনি। আজ পত্রিকার পৃষ্ঠা উল্টালেই দেখতে হয় নারীকে ধর্ষণের চিত্র, রাজনৈতিক কোন্দলে ক্ষমতাসীন এবং বিরোধীদলীয় হত্যাযজ্ঞে হতাহত হয় সাধারণ মানুষ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর প্রতিটি রাজনৈতিক দলই জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে বারংবার হয়েছে ব্যর্থ। মানুষের বাকস্বাধীনতাও আজ রুদ্ধ। অন্ন, বস্ত্র, চিকিৎসা, বাসস্থানের মতো মৌলিক চাহিদাগুলোকে পূরণেও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে তারা। তবে আমরা শুধু হতাশই নই। আজকের তরুণরা যদি সেই পিছিয়ে পড়া সমাজের জন্য লড়াই করে, প্রাকৃতিক দুর্যোগে হতাহত মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে, দেশ থেকে বাল্যবিয়ে ও যৌতুকের মতো ব্যাধির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে একটি মেয়েকে নবজীবন দান করতে পারে, অনাহারীর মুখে খাবার তুলে দিতে এবং সর্বোপরি নিজের রাজনৈতিক চেতনার সুষ্ঠু বিকাশ ঘটাতে পারে, তাহলেই আসবে আমাদের বিজয়ের সাফল্য। তখনই মানুষ উপভোগ করবে স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ। আমাদের বিজয় সেদিনই সফল হবে।
আবু সাঈদ সজল
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
সদস্য, জেজেডি ফ্রেন্ডস ফোরাম।