পরিবেশ দূষণ রোধ : সময়ের দাবি

প্রকাশ | ০২ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

সফিউল্লাহ আনসারী
বতর্মান সময়ে পরিবেশ দূষণ একটা গুরুতর সমস্যা, যা ক্রমেই মহাবিপযের্য়র দিকে ছুটে চলেছে। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের শহরগুলো বতর্মানে পরিবেশ দূষণের শিকার। বলা হচ্ছে, অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে রাজধানীসহ দেশের ছোট-বড় শহরগুলো মারাত্মক পরিবেশ দূষণে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা, আর এই প্রাণের শহর ঢাকায় পরিবেশ দূষণ যেন সয়ে যাওয়া ব্যাপার! এই ভয়াবহ পরিবেশ দূষণ শুধু শহরেই সীমাবদ্ধ নেই ইদানীংকালে শিল্পায়নের ছেঁায়া গ্রামাঞ্চলেও লেগেছে। আর শিল্পায়ন আর নগরায়নের প্রভাবে সারাদেশেই পরিবেশ দূষণ মহাবিপযর্য় ডেকে আনছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এ সমস্যা শুধু আমাদের দেশেই নয়, সারাবিশ্বে পরিবেশ দূষণ বৈষ্যিক সমস্যা হয়ে দঁাড়িয়েছে। এখনই সচেতনতার পাশাপাশি দ্রæত পরিবেশ রক্ষায় ব্যবস্থা না নিলে আমাদের আগামী প্রজন্ম ভয়াবহ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়বে। প্রতিনিয়ত শব্দ দূষণ, বায়ু দূষণ, পানি দূষণসহ এমন কোনো দূষণ নেই যাতে রাজধানীবাসী নাগরিক জীবনে বিপযর্স্ত হচ্ছে না। পরিবেশ দূষণ এমন এক মহামারি আকার ধারণ করেছে যে, মনে হচ্ছে এখান থেকে পরিত্রাণের আর কোনো পথ নেই। বিশ্বব্যাংক বলছে, শহারাঞ্চলে এ দূষণের কারণে প্রতি বছর আমাদের ক্ষতি হচ্ছে ৫২ হাজার কোটি টাকা। কি সবর্নাশের কথা! যে দেশে বেকারত্ব আছে, আছে অসহায় গৃহহীন মানুষ, আছে অথার্ভাবে মানুষের কষ্টের জীবন সেখানে শুধু পরিবেশ দূষণের কারণে এত বড় ক্ষতি! আমরা এখনো জাগছি না কেন। শুধু দিবস পালন আর আইন করে পরিবেশ দূষণ রোধ অসম্ভব। এ দূষণ রোধের জন্য আমাদের প্রচলিত আইনের যথাযথ প্রয়োগ, বেশি বেশি বৃক্ষরোপণ, বিশেষ করে শুধু খাতায় নয় বাস্তব সামাজিক বনায়ন, সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষের বাস্তবায়নযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ। শিল্পায়ন আমাদের অথর্নীতির চাকাকে সচল করেছে, স্বীকার করছি। এই অথর্নীতির চালিকাশক্তি কলকারখানার বজর্্য থেকে যে দূষণ হচ্ছে, তা কঠোর হস্তে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে এনজিওগুলোর কাযর্কর উদ্যোগ ও বাস্তবায়ন। কমপক্ষে পরিবেশ রক্ষায় রাজনৈতিক মতানৈক্যও দেশবাসী আশা করে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হাতে কলমে পরিবেশ রক্ষার কৌশল ও দূষণ রোধের উপায় বিষয়ে শিক্ষাদান। শব্দদূষণ ও বায়ু দূষণ কমানোর জন্য গাড়ির হনর্ ব্যাবহারে নিয়ন্ত্রণ, কলকারখানা ও গাড়ির কালো ধেঁায়া কমানোর জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা। কৃষি জমিতে জৈব সার ব্যবহার বাড়ানো, কীটনাশকের ব্যবহার কমানোসহ আমাদের জনসচেতনতা পরিবেশ দূষণরোধে কাযর্কর ভ‚মিকা রাখতে পারে বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। আমাদের পরিবেশ মানে, প্রাণীজগত, উদ্ভিদজগতসহ আমাদের চারপাশের সবকিছু নিয়ে গড়ে ওঠা এই বসবাসের স্থানকে রক্ষায় সকলের একযোগে এগিয়ে আসতে হবে। আকাশ মাটি, স্থল-জল, বন-বনানী, পাহাড়-নদী কোনো একটিকে বাদ দিয়ে আমাদের জীবন চিন্তা করা যায় না। আর আল্লাহ প্রদত্ত প্রকৃতিকে বাদ দিয়ে সুস্থভাবে বঁাচার চেষ্টাও বিফল। মনুষ্য সৃষ্ট দূষণ রোধ করতে পারলেই আমরা অনেকটাই বেঁচে যাই। প্রথম এবং শেষ কথা, আমাদের জন্যই পরিবেশকে বঁাচিয়ে, সব ধরনের দূষণরোধ অতীব জরুরি। সদস্য জেজেডি ফ্রেন্ডস ফোরাম, ঢাকা