শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কদম গাছ

নতুনধারা
  ০৯ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

'তোমাকে বলেছিলাম না, এবার বর্ষার আগে এই গাছটা কেটে ফেলতে হবে, কিন্তু তুমি আমার কথা শোনোনি।' তাবাসসুম তার লেখক স্বামী আহসানকে বকাঝকা করতে লাগলেন।

'...এত সময় পেরিয়ে গেছে, কিন্তু একবারের জন্যও ফল ধরেনি। উল্টো, এর পাতায় উঠানে অনেক আবর্জনা সৃষ্টি হয়। আমার কথা তার মাথার ভেতরে ঢুকছেই না। আমি জানি না। শুধু শুধু কলমের কালিতে কাগজগুলো নষ্ট করতে থাকে। একটা ঘরের কাজও করে না।

তাবাসসুম বকবক করছেন। আহসান শুধু মাথা নেড়ে তার কথাগুলোর সাড়া দিচ্ছে অবশেষে তাবাসসুমও ক্লান্ত হয়ে গেলেন, আসলে তার চা শেষ হয়ে গেছে, বাসনপত্র তোলা শুরু হয়েছে।

'...মনে রেখো এইবার এই কদম গাছ কেটে ফেলতে হবে। এর জায়গায় কিছু ভালো ফলের গাছ লাগানো হবে।'

স্ত্রী চলে যাওয়ার পর আহসান মনে মনে বললেন- এই অজ্ঞান মহিলাকে এখন কে বোঝাতে পারে। প্রতি বছর শরতের পর অনেক পাখি এই গাছে বাসা বানায়। গ্রীষ্মে এর অন্ধকার পাতা ছায়া দিয়ে ঘরকে শীতল রাখে। যখন আমরা এই গাছটি লাগিয়েছিলাম। আমাদের ছেলের প্রথম জন্মদিনে কদম। আমরা তার মতো করে যত্ন নিয়েছি। ছেলে বড় হয়ে তার সংসারে হারিয়ে আমাদের ভুলে গেছে। এই কদম হয়তো ফল দেয় না কিন্তু আজও আমাদের শীতল ছায়া দিচ্ছে এবং ভরা বিকালে অনেক পাখির আশ্রয়।

আহসানের চোখের কোণ ভিজে উঠল। মোটা চশমা খুলে হাত দিয়ে চোখ মুছলেন, চশমাটা পরিষ্কার করতে শার্টের পকেট থেকে রুমালটা বের করে মুছে নিলেন।

\হজুয়েল আশরাফ

নবাবগঞ্জ, ঢাকা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে