সীতাকুন্ডে আলোচনা সভা

প্রকাশ | ১৯ মার্চ ২০১৯, ০০:০০

সবুজ শর্মা শাকিল
কুমিরা লতিফা সিদ্দিকী ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাসে মুক্ত আলোচনা সভা আয়োজন করেন জেজেডি ফ্রেন্ডস ফোরাম সীতাকুন্ডের বন্ধুরা
ভাষা শহীদদের স্মরণে সীতাকুন্ডের কুমিরা লতিফা সিদ্দিকী ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাসে মুক্ত আলোচনা সভা আয়োজন করেন জেজেডি ফ্রেন্ডস ফোরাম সীতাকুন্ডের বন্ধুরা। গত বৃহস্পতিবার বিকালে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় কলেজ শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ সভাকে আরো প্রাণবন্ত করে তুলে। \হজেজেডি ফ্রেন্ডস ফোরাম উপদেষ্টা সবুজ শর্মা শাকিলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. ইব্রাহিম খলিলের সঞ্চালনে সভায় মহান একুশে ফেব্রম্নয়ারিতে মাতৃভাষা পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে রাজপথে জীবন উৎসর্গ করা ভাষা শহীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন, লতিফা সিদ্দিকী ডিগ্রি কলেজ অধ্যাপক জহুরুল আলম চৌধুরী, রনি দেব, মিহির কান্তি নাথ, মোহাম্মদ কামরুল হাসান, মুদুল চন্দ্র মজুমদার, কলেজ শিক্ষার্থী ও জেজেডি ফ্রেন্ডস ফোরাম বন্ধু মোহাম্মদ ফয়সাল আহমেদ, সায়মন, মো. জোনায়েদ আহমেদ, মোহাম্মদ ইসমাইল, মো.কায়েম, সুমাইয়া, সানজিদা, মন্নি, জেরিন, জান্নাত ও রুবি প্রমুখ। সভায় বক্তারা বলেন, মাতৃভাষা বাঙালাকে রাষ্ট্রভাষা রূপে প্রতিষ্ঠার জন্য বাঙালির আত্মদানের দিন 'অমর একুশে ফেব্রম্নয়ারি'। ভাষা আন্দোলনের পথে অকুতোভয়ে দৃঢ় পা রেখে আমাদের মায়ের ভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদায় প্রতিষ্ঠা দেয়ার জন্য এ দেশের ছাত্র-জনতা নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছিল। প্রাণ দিয়েছিল বরকত, সালাম, রফিক, জব্বারসহ নাম না জানা বাংলামায়ের আরও অনেক সন্তান। ঢাকাসহ এ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের রাজপথ রঞ্জিত হয়ে উঠেছিল তাদের বুকের রক্তে। দ্বি-জাতি তত্ত্বের ফাঁদে পড়ে এ দেশ ছিল পাকিস্তানের অধীন। ১৯৪৭-এর দেশভাগের পর থেকে বাঙালির প্রাণের ভাষা বাংলাকে ধ্বংস করার অভিপ্রায়ে পাকিস্তানিরা বাঙালিদের ওপর উর্দু ভাষাকে চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছিল। পাকিস্তানের মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেছিলেন, 'একমাত্র উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা। বাঙালিরা সেদিন ষড়যন্ত্রের আসল রূপ ও লক্ষ্য বুঝতে পেরে এই ঘোষণাকে মেনে নেয়নি। সেদিনকার পূর্ব পাকিস্তান জুড়ে ধ্বনিত হয়ে উঠেছিল প্রতিবাদ। বিক্ষুব্ধ বাঙালি জেলবন্দি শেখ মুজিবের গোপন নির্দেশে জেগে উঠে রাজপথে নেমে এসেছিল। ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দের ২১ ফেব্রম্নয়ারি ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে দাবি তুলেছিল, 'রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই'। ভাষার সম্মান ও মর্যাদা রক্ষার দাবিতে সেদিন বাঙালি হয়ে উঠেছিল একপ্রাণ একমন। রাষ্ট্রভাষা রূপে বাঙালির মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার আন্দোলনকে থামাতে না পেরে বায়ান্নোর একুশে ফেব্রম্নয়ারির মিছিলের ওপর গুলি চালিয়ে বাঙালিকে স্তব্ধ করার পাকিস্তানি প্রচেষ্টাটা ছিল ভুল। তাতে, শহীদ ছাত্র-জনতা পরিণত হয় সূর্য-সৈনিকে। এই জীবনদান বৃথা যায়নি। বাঙালির মাতৃভাষার দাবি মেনে নিতে বাধ্য হয় পাকিস্তানি শাসক কুল। বক্তারা আরো বলেন, ভাষার জন্য বিশ্বে এভাবে আর কোনো জাতিকে প্রাণ দিতে হয়নি। এটি বিশ্বের ইতিহাস অনন্য নজির। বাঙালির এই আত্মদান আজ বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি লাভ করেছে। একুশে ফেব্রম্নয়ারিকে জাতিসংঘ স্বীকৃতি দিয়েছে 'বিশ্ব মাতৃভাষা দিবস' রূপে। বিশ্বেও দেশে দেশে এই দিনটি এখন পালিত হয়ে আসছে অত্যন্ত মর্যাদার সঙ্গে। সেই সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ছে বাঙালির মাতৃভাষা রক্ষার বীরত্বগাথা। উপদেষ্টা জেজেডি ফ্রেন্ডস ফোরাম সীতাকুন্ড, চট্টগ্রাম