নুহাসপল্লীতে একদিন

প্রকাশ | ৩১ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

রাফী উল্লাহ্ ফুয়াদ
নুহাসপল্লীতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের বন্ধুরা
ঘন শালবনে আচ্ছাদিত গাজীপুরের পিরুজালী গ্রামের আলো-অঁাধারিতে ঢেকে থাকা সরু পথ আপনাকে নিয়ে যাবে গাজীপুর সদর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নুহাশপল্লীতে। যা ছিল কথার জাদুকর হুমায়ূন আহমেদের জন্য একটি স্বগর্। সবার জন্য উন্মুক্ত নুহাশপল্লীতে এলে মনোরম এই নেত্র জুরানো সুন্দর জায়গাটি ঘুরে দেখতে পারবেন। টিভি নাটক এবং চলচ্চিত্র নিমার্ণ শুরু করার পর হুমায়ূন আহমেদের বেশিরভাগ সময় এখানেই কাটিয়েছেন। গুলতেকিন আহমেদের একমাত্র পুত্র নুহাশের নামে নুহাশপল্লীর নামকরণ করা হয়েছে। ১৯৮৭ সালে ২২ বিঘা জমির ওপর স্থাপিত নুহাশপল্লীর বতর্মান আয়তন প্রায় ৪০ বিঘা। অভিনেতা ডা. ইজাজ এখানকার জমিটি কিনতে সহায়তা করেন। হুমায়ূন আহমেদ এবং তার প্রথম স্ত্রী গান ও প্রকৃতির সান্নিধ্যে থাকতে ভালোবাসতেন। নুহাশ পল্লীর উত্তর প্রান্তে একটি বড় পুকুর রয়েছে যেটির ওপর একটি মনোমুগ্ধকর কাঠের সেতু নিমার্ণ করা হয়েছে। পুকুরের মাঝ বরাবর রয়েছে একটি কৃত্রিম দ্বীপ। হুমায়ূন আহমেদ ও তার স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওনের একটি কন্যা সন্তান পৃথিবীর আলো দেখার আগেই মারা যায়। হুমায়ূন আহমেদ তার সেই কন্যার নাম দিয়েছিলেন লীলাবতি। এই পুকুরটির নামও রাখা হয়েছে লীলাবতি। জীবদ্দশায় সবের্শষ নুহাশ পল্লীতে আসার পর তিনি নুহাশ পল্লীতে হেঁটে বেড়িয়েছিলেন এবং একান্ত কিছু মুহূতর্ প্রকৃতির কাছে থেকে অতিবাহিত করেছিলেন। স্থানীয় স্থপতি আসাদুজ্জামান খানের তৈরি করা বেশকিছু ভাস্কযর্ রয়েছে নুহাশ পল্লীতে। এখানে প্রবেশের সময় ‘মা ও শিশু’ নামক একটি ভাস্কযর্ রয়েছে যেখানে মা তার শিশুর হাত ধরে রেখেছে। শিশুদের আনন্দ দিতে এখানে ভ‚ত এবং ব্যাঙের আকারের ভাস্কযর্ নিমার্ণ করা হয়েছে। বিভিন্ন রকমের আদিম ডায়নোসরের প্রতিকৃতী নিমার্ণ করা হয়েছে। এর পাশে রয়েছে পানির ওপরে নিমির্ত মৎস্যকন্যা। এ ছাড়া এখানকার ট্রি হাউসটি শিশুদের আনন্দের অন্যতম উৎস। নুহাস পল্লীর এই মনোরম পরিবেশের স্বাদ নেওয়ার জন্য জেজেডি ফ্রেন্ডস ফোরামের কয়েকজন বন্ধু মিলে গিয়েছিলাম কিছুদিন আগেই। রাফী, জাহিদ, রিপা, শুভ, নাজমুল, সূচনা, ইমা এই সাত জনের বন্ধুমহল। বিশ^বিদ্যালয়ের পরীক্ষার ফঁাকে ফঁাকে আমরা নানান জায়গায় ভ্রমণ করতে যাই। তেমনি আমাদের এবারের গন্তব্য ছিল কথার জাদুকর হুমায়ূন আহমেদের স্বপ্নের বাড়ি নুহাসপল্লী। ভ্রমণের দিন সকাল ৭টায়  আমরা সবাই একসঙ্গে হই ময়মনসিংহ বাসস্ট্যান্ডে। সেখান থেকে বাসে করে গেলাম বাঘের বাজার। বাজারে সবাই মিলে নাস্তা করলাম। বাঘের বাজার থেকে অটো দিয়ে গেলাম সরাসরি নুহাসপল্লী। টিকিট কাউন্টারে টিকিট কেটে ভেতরে প্রবেশ করলাম। সবাই মিলে ঘুরলাম, গান গাইলাম, ছবি তুললাম। দুপুর ২টার দিকে আমরা ফেরার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। আমাদের সবার জন্য স্মরণীয় একটি দিন হয়ে থাকবে নুহাসপল্লী ভ্রমণটি।     সদস্য জেজেডি ফ্রেন্ডস ফোরাম বাংলাদেশ কৃষি বিশ^বিদ্যালয়, ময়মনসিংহ