উৎসব আর আনন্দে দুর্গাপূজা

প্রকাশ | ০৮ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
অলংকরণ : মিতা মেহেদী
অধ্যক্ষ অতুল কৃষ্ণ দাস বাঙালির আত্মপ্রকাশে মানসিক, সামাজিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক জীবনে কালচক্রের আবর্তনে বছরের মধ্যে অনেক উৎসব আসে। দেশের সমাজবদ্ধ মানুষ মেতে ওঠে নানা উৎসব নিয়ে। আর বাংলাদেশ তখনই হয়ে ওঠে উৎসবের দেশ। শরতের শিউলি ঝরা প্রকৃতিতে মন মাতানো সুগন্ধে ভরপুর ধরণি, প্রকৃতির এহেনো ক্ষণে ধূপের ধোঁয়ার গন্ধে ধূমায়িত কাশি, বাঁশি, নাগরা ও ঢাকের বাদ্য জানাচ্ছে আনন্দময়ী মহাশক্তি দুর্গতিনাশিনী মহামায়া দুর্গাদেবীর আগমন বার্তা। যা সবার হৃদয়ে জাগিয়ে তুলেছে আনন্দ শিহরণ। বাঙালি হিন্দুরা শ্রদ্ধা ও ভক্তিভরে শ্রী শ্রী দুর্গা দেবীর পূজা করবেন। প্রতি বছর এই পূজা দু'বার অনুষ্ঠিত হয়। প্রাচীনকালে সুরথ রাজা রাজ্য উদ্ধারের জন্য বসন্তকালে দুর্গাপূজা করেন বলে এ পূজার নাম বাসন্তীপূজা। অযোধ্যার রাজা শ্রী রাম চন্দ্রের স্ত্রী সীতাকে রাবণ হরণ করার দায়ে শ্রী রাম চন্দ্র রাবণকে বধ করার জন্য শরৎকালে দুর্গাদেবীর অকালবোধন করে- শারদীয় পূজার প্রচলন করেন। শরৎ অপরূপ সাজে সজ্জিত হয় যেন দেবীকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য প্রস্তুত। তাই শারদোৎসবে সব হিন্দুর মনে প্রাণে আনন্দের দোলা দেয়। প্রতি বছর আশ্বিন মাসে শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে দেবীর বোধন ও পূজা আরম্ভ হয়। পুরোহিত ব্রাহ্মণ বিল্ববৃক্ষের তলে দুর্গাদেবীর বোধন কার্য সমাধার মধ্যে দিয়ে অধিবাসের পূজা সম্পূর্ণ করেন। পরে দিবসত্রয় সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী এ তিন দিনব্যাপী এক মহাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এ কয়েকদিন শঙ্খ, ঘণ্টা, ঢাক, ঢোল প্রভৃতি বাদ্যযন্ত্রের শব্দে এবং লোকজনের আনন্দ কোলাহলে মন্দির মুখরিত হয়ে থাকে। দুর্গোৎসবের মাধ্যমে হিন্দুরা ধর্ম পালনের সঙ্গে সঙ্গে নতুন আনন্দ উপভোগ করে থাকে। শারদীয় দুর্গোৎসবের মতো মহোৎসব আয়োজন- ব্যক্তি জীবনে, সমাজ জীবনে, জাতীয় জীবনে মহাকল্যাণ সাধন করে। এ সময়ে সবাই নতুন উদ্দীপনায় মেতে উঠে। হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সৃষ্টির ক্ষেত্রে শারদীয়া দুর্গোৎসবের তুলনা নেই। পূজার আনন্দ সবাই ভাগ করে নিতে পারলেই শারদোৎসব শ্রী শ্রী দুর্গাপূজাকে সার্থক করে তোলা যায়। উপদেষ্টা জেজেডি ফ্রেন্ডস ফোরাম কাশিয়ানী, গোপালগঞ্জ।