জেনে নিন

আত্মরক্ষার সীমা কতটুকু?

প্রকাশ | ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
মনে করুন, রাস্তা দিয়ে আপনি নিজের্ন একাকী হঁাটছেন। হঠাৎই আপনার ওপর আক্রমণ করল কয়েকজন দুবৃর্ত্ত। আপনি সুঠামদেহী ব্যক্তি। আত্মরক্ষার কৌশলও জানেন। এমন অবস্থায় আপনার কী করণীয়? আপনি কি চুপচাপ দুবৃর্ত্তদের আঘাতের শিকার হবেন, নাকি প্রতিরোধ করবেন? প্রতিরোধ করতে গিয়ে কোনো দুবৃের্ত্তর শারীরিক ক্ষতি করে ফেললে, তার দায় কি আপনাকে নিতে হবে? আমাদের ১৮৬০ সালের দÐবিধিতে এ সংক্রান্ত বিধান দেয়া আছে। শত্রæর আক্রমণের বিপরীতে প্রত্যেক ব্যক্তিকে আত্মরক্ষা করার অধিকার দেয়া হয়েছে সেখানে। আত্মরক্ষার উদ্দেশ্যে নেয়া ব্যবস্থা অপরাধ হবে না বলে দায়মুক্তিও দেয়া হয়েছে। দÐবিধির ৯৬ ধারা অনুসারে ব্যক্তিগত প্রতিরক্ষা অধিকার প্রয়োগকালে করা কোনো কিছুই অপরাধ নয়। দÐবিধির ৯৬ ধারা থেকে ১০৬ ধারা পযর্ন্ত ব্যক্তিগত প্রতিরক্ষা অধিকার সম্পকের্ বলা হয়েছে। ব্যক্তিগত প্রতিরক্ষা বলতে নিজের দেহ এবং সম্পত্তি অন্যের আক্রমণ থেকে রক্ষা করার অধিকার বোঝায়। দÐবিধির ৯৭ ধারায় বলা হয়েছে, ৯৯ ধারায় বিধৃত বিধিনিষেধ সাপেক্ষে প্রত্যেক ব্যক্তির প্রথমত মনুষ্য দেহ ক্ষুণœকারী যে কোনো অপরাধের বিরুদ্ধে তার নিজ দেহ ও অন্য যে কোনো ব্যক্তির দেহের, দ্বিতীয়ত, চুরি, দস্যুতা, অনিষ্ট বা অপরাধমূলক অনধিকার প্রবেশের সংজ্ঞাধীন অপরাধ বা চুরি, দস্যুতা অনিষ্ট বা অপরাধমূলক অনধিকার প্রবেশের উদ্যোগের বিরুদ্ধে নিজ বা অন্য কোনো ব্যক্তির অস্থাবর বা স্থাবর সম্পত্তির প্রতিরক্ষা অধিকার থাকবে। ৯৯ ধারায় ব্যক্তিগত প্রতিরক্ষার সীমা বণর্না করা হয়েছে। ৯৯ ধারা অনুসারে পদাধিকারবলে কোনো সরকারি কমর্চারী সৎ বিশ্বাসে আইনবহিভ‚র্ত কাজ করলেও সেটি যদি গুরুতর আঘাত বা মৃত্যুর আশঙ্কা সৃষ্টি না করে, তা হলে ব্যক্তিগত প্রতিরক্ষার অধিকার থাকবে না। একইভাবে কোনো ব্যক্তি পদাধিকারবলে সরকারি কমর্চারীর নিদের্শ পালনে বা পালনের উদ্যোগকালে আইনের দৃষ্টিতে যথাথর্ না হলে মৃত্যু বা গুরুতর আঘাতের কারণ না থাকলে কেউ ব্যক্তিগত প্রতিরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করতে পারবে না। সরকারি কতৃর্পক্ষের কাছে আশ্রয় নেয়ার সময় থাকলে ব্যক্তিগত প্রতিরক্ষার অধিকার থাকে না। ব্যক্তিগত প্রতিরক্ষার জন্য যতটুকু আঘাত করা প্রয়োজন, তার অতিরিক্ত করা অবৈধ। দÐবিধির ৩০০ ধারায় ২ নাম্বার ব্যতিক্রমে বলা হয়েছে, অপরাধকারী সৎ বিশ্বাসে তার দেহ বা সম্পত্তি সম্পকির্ত ব্যক্তিগত প্রতিরক্ষা অধিকার প্রয়োগকালে পূবর্পরিকল্পনা ছাড়া ও অনুরূপ প্রতিরক্ষার উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় ক্ষতি থেকে বেশি ক্ষতি সাধনের অভিপ্রায় না করে তার প্রতি আইন প্রদত্ত ক্ষমতাসমূহ অতিক্রম করলে এবং যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে এরকম প্রতিরক্ষা অধিকার প্রয়োগ করা হয়, তার মৃত্যু ঘটালে দÐাহর্ নরহত্যাকে ‘খুন’ হিসেবে অভিহিত করা হবে না। তাজুল ইসলাম