বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জুনিয়র আইনজীবীর বিড়ম্বনা

মুকুল মুস্তাফিজ
  ২৪ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০

একটি আর্বিট্রেশন মামলায় নিষেধাজ্ঞার দরখাস্ত শুনানির জন্য জেলা জজ কোর্টে অপেক্ষা করছি। প্রতিপক্ষের পক্ষে। তখনও জজ সাহেব এজলাসে আসেননি। আমি ফাইলের কাগজপত্র শেষবারের মতো চোখ বুলাচ্ছি। এরই মধ্যে আমার ক্লায়েন্ট ভদ্রমহিলা আমাকে জিজ্ঞেস করলেন বাবা কোনো সিনিয়র লাগবে নাকি। সিনিয়র লাগলে নিতে পারো, আমি ফি দিব।

কথাটা শুনে বিরক্ত হলাম। বললাম সিনিয়র লাগলে আমি আগেই আপনাকে বলতাম। তিনি চলে গেলেন। আমি আবার ফাইলে চোখ নিবন্ধ করলাম। ততক্ষণে কোর্ট শুরু হয়ে গেছে। কিছুক্ষণ পর মহিলা তার মেয়েকে পাঠালেন আমার কাছে। মেয়েটি একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ছাত্রী।

সে এসে বলল, ভাইয়া কিছু মনে করবেন না, কোনো সিনিয়র লাগলে নিতে পারেন। বাদীপক্ষরা সিনিয়র এঙ্গেজ করেছে। আমি অত্যন্ত বিরক্ত হয়ে তার দিকে তাকালাম। সে আমার চাহনি দেখে আর দেরি না করে পেছন সিটে গিয়ে বসল।

নিষেধাজ্ঞার দরখাস্ত শুনানির প্রস্তুতির সময় আমি সাতটি আরগুমেন্ট রেডি করেছিলাম। প্রথম আরগুমেন্ট শুরু করলাম প্রাইমা ফেসি নিয়ে। প্রথম আররুমেন্ট শুনেই কোর্ট বলল আপনার কথা যদি ঠিক হয় তাহলে তো মূল মামলাই চলে না। আমি বললাম, জি, আপনি ঠিকই ধরেছেন। দরখাস্তকারীপক্ষ আমার যুক্তি খন্ডাতে পারেনি। আদালত নিষেধাজ্ঞার দরখাস্ত তো বটেই স্বপ্রণোদিত হয়ে মামলাই খারিজ করে দিলেন। মা-মেয়ে যারপরনাই খুশি হলেন। নির্ধারিত ফিস তো দিলেনই জোর করে আরও অতিরিক্ত ফিস দিয়ে গেলেন।

লেখক: বাংলাশে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে