বিচিত্র

পুরুষ সুরক্ষা আইনের পক্ষে ভারতীয় সুপ্রিম কোটর্

প্রকাশ | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

আইন ও বিচার ডেস্ক
নারীদের সুরক্ষায় যেহেতু আইন আছে তাই এই আইনের অপব্যবহার থেকে পুরুষদের সুরক্ষায় আইন পাস করতে হবে বলে জানিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোটর্। একই সঙ্গে স্বামীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা স্ত্রীদের অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তারি অভিযান চালানোর আগে পুলিশকে মূল্যায়ন কমিটির অনুমতি নিতে হবে বলেও মত দিয়েছে ভারতের সবোর্চ্চ আদালত। ভারতের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র, বিচারপতি এএম খানউইকার এবং বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচ‚ড়ের সমন্বয়ে গঠিত সুপ্রিম কোটের্র তিন সদস্যের একটি বেঞ্চ ১৪ সেপ্টেম্বর এ অভিমত জানান। আদালত বলছে, যেহেতু সংসদ স্ত্রীদের সুরক্ষায় আইন পাস করেছে সেহেতু ওই আইনের অপব্যবহার থেকে স্বামীদের সুরক্ষা দিতে সংসদকেই যথাযথ আইন পাস করতে হবে। আদালত একই সঙ্গে নারীদের করা মামলায় অতি উৎসাহী পুলিশের ক্ষমতা খবর্ করেছে। এখন থেকে স্বামীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা স্ত্রীদের অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তারি অভিযান চালানোর আগে পুলিশকে মূল্যায়ন কমিটির অনুমতি নিতে হবে। যৌতুকের দাবিতে ঘটা পারিবারিক সহিংসতার ঘটনা প্রতিরোধ করতে ভারতের সংসদ ১৯৮৩ সালে ৪৯৮এ পাস করে। ওই ধারায় পারিবারিক সহিংসতার ঘটনার অভিযোগ জামিনযোগ্য নয়। ভারতীয় সুপ্রিম কোটর্ মনে করে, সাক্ষী-প্রমাণের ভিত্তিতেই আদালতের নিধার্রণ করা উচিত যে সংশ্লিষ্ট অভিযুক্তকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানো উচিত কিনা। পারিবারিক সহিংসতাবিরোধী আইনের সংশ্লিষ্ট ধারার ৪৯৮এ ‘খুবই ¯পশর্কাতর’ এবং এর ওপর ভিত্তি করে পুলিশের অতি আগ্রহী কমর্কাÐের কারণে সামাজিক বিপযর্য় দেখা দিতে পারে। পারিবারিক নিযার্তন প্রতিরোধে যেহেতু সংসদই আইন পাস করেছে সেহেতু সংসদকেই ওই আইনের অপব্যবহার থেকে পুরুষদের সুরক্ষা দিতে আইন পাস করতে হবে। গত বছর দুই সদস্যের এক বেঞ্চের দেয়া রায়ে ‘নিপীড়িত পুরুষদের হয়রানি’ করার যে সুযোগ রাখা হয়েছিল তা ১৪ সেপ্টেম্বরে দেয়া রায়ে বাতিল করা হয়েছে। ৪৯৮এ ধারা মোতাবেক দায়ের করা এফআইআরের ভিত্তিতে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যেতে পারত। আদালত সিদ্ধান্ত দিয়েছে, পারিবারিক সহিংসতার ক্ষেত্রে ৪৯৮এ ধারা অনুযায়ী কোনো পুরুষকে গ্রেপ্তার করতে হলে আগে জেলা পযাের্য়র এ সংক্রান্ত কমিটিকে জানাতে হবে। কমিটি অনুমতি দিলে, অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেপ্তার করতে পারবে পুলিশ। উল্লেখ্য, বাংলাদেশেও পুরুষদের একটি অংশ পুরুষ নিযার্তন প্রতিরোধে আইন প্রণয়নের দাবি করে আসছে দীঘির্দন ধরে। অধিকাংশ আইন নারীবান্ধব হওয়াতে মামলা-মোকদ্দমা দিয়ে নারীরা পুরুষদের হয়রানি করছে বলে তাদের দাবি। সম্প্রতি সরকার নারীদের হয়রানিমূলক মামলার প্রবণতা ঠেকাতে বিশেষ বিধান করেছে। যৌতুক দেয়া-নেয়া এবং যৌতুক নিয়ে মিথ্যা মামলার ক্ষেত্রে পাঁচ বছরের জেল ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রেখে সংসদে ‘যৌতুক নিরোধ বিল-২০১৮’ পাস হয়েছে। কারো ক্ষতি করার জন্য যৌতুকের মামলা বা অভিযোগ করলে পাঁচ বছরের জেল অথবা ৫০ হাজার টাকা বা উভয় দÐে দÐিত করার বিধান রাখা হয়েছে পাস হওয়া বিলে। আগের আইনে যৌতুক নিয়ে মিথ্যা মামলার জন্য কোনো দÐের বিধান ছিল না। বিলে বলা হয়েছে, ‘যদি কোনোও এক পক্ষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অন্য পক্ষের কাছে যৌতুক দাবি করে তবে সবোর্চ্চ পাঁচ বছরের কিন্তু সবির্ন¤œ এক বছরের জেল বা ৫০ হাজার টাকার জরিমানা অথবা উভয় দÐে দÐিত হবেন। যৌতুক গ্রহণ বা প্রদান করলেও একই ধরনের সাজা হবে।’