নাম তার অমরজিৎ সাদা, বয়স ৮ বছর। তার বাড়ি ভারতের বিহারের মুশাহার গ্রামে। এ বয়সেই সে ৩ খুনের আসামি। পেয়েছে সিরিয়াল কিলারের খেতাবও। এই অমরজিৎকে বলা হচ্ছে, বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ সিরিয়াল কিলার। তার খুনের তালিকায় রয়েছে আপন বোনসহ আরও দুজন শিশু।

জানা যায়, ২০০৬ সালে মাত্র ৭ বছর বয়সে নিজের ৬ বছর বয়সি চাচাতো বোনকে খুন করে অমরজিৎ। এরপর খুন করা যেন তার নেশা হয়ে দাঁড়ায়। অমরজিতের খুনের তালিকায় এরপর যুক্ত হয় তার নিজের ৮ মাসের আপন বোন।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে অমরজিতের চাচা বলেন, পরিবারের সবাই ওর খুনের বিষয়গুলো জানত। তবে সবাই পারিবারিক বিষয় বলে বাইরে জানাজানি করতে চাননি।

২০০৭ সালে তৃতীয় খুনটি করে অমরজিৎ। এবার সে খুন করে ৬ মাসের শিশু খুশবুকে। খুশবুর মা একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ছিলেন। তিনি যখন স্কুলে গিয়েছিলেন; তখন শিশুটি ঘুমাচ্ছিল। স্কুল থেকে ফিরে তিনি খুশবুকে খুঁজতে থাকেন। এর কয়েক ঘণ্টা পর অমরজিৎ এসে খুশবুর মায়ের কাছে অপরাধের কথা স্বীকার করে। সে জানায়, শিশুটিকে গলা টিপে সে হত্যা করেছে। এরপর মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে মৃতু্য নিশ্চিত করে অমরজিৎ। এমনকি হত্যার পর ৬ মাস বয়সি শিশুটিকে কবরও দিয়ে দেয়।

নমিনির অনুপস্থিতে মৃত ব্যক্তির ব্যাংকে গচ্ছিত টাকা কে পাবে?

গ্রামবাসীকে অমরজিৎ নিজেই কবর দেওয়ার স্থান দেখিয়ে দেয়। এরপর পুলিশ এসে গ্রেপ্তার করে তাকে। নিয়ে যায় হাজতে। পুলিশের কাছেও সে তার খুনের অপরাধ স্বীকার করে। তবে এসব উত্তর দেওয়ার সময় অমরজিৎ শুধুই হাসছিল। খুনের কথা স্বীকার করলেও অন্য কোনো প্রশ্নের উত্তর সে দেয়নি। তবে পুলিশের ভাষ্য, একটু পরপরই সে পাগলের মতো হাসে।

মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, অমরজিৎ অন্যকে কষ্ট দিয়ে নিজে মজা পায়। এমন মানসিক রোগে আক্রান্তরা শুধু অন্যকে কষ্টই দিতে জানে। এটাই তাদের আনন্দ।

গ্রেপ্তারের পর শিশু অপরাধী হিসেবে প্রথমে অমরজিৎকে চিলড্রেন্স হোমে রাখা হয়। এছাড়া টানা ৩ বছর সে মনোরোগবিদের কাছে কাউন্সিলিং গ্রহণ করে। ১৮ বছর বয়সে ২০১৬ সালে সে মুক্তি পায়। বয়স কম থাকায় ও মানসিক রোগের কারণে বিচারক তার ভবিষ্যৎ নষ্ট করতে চাননি। তাই ১১ বছর পর তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।

বর্তমানে অমরজিতের বয়স ২২ বছর তবে গোপন রাখা হয়েছে তার বাসস্থানের ঠিকানা। পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে তার নামও। বর্তমানে সে কোথায় আছে, তার খোঁজ জানে না কেউ।