জেনে নিন

‘একতরফা’ কী?

প্রকাশ | ০২ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম সরকার
একতরফা হচ্ছে আদালত কতৃর্ক প্রদত্ত এক প্রকারের ডিক্রি। দেওয়ানি কাযির্বধির ৯ নং আদেশের ৩ নং বিধিতে বলা হয়েছে, আদালতে মামলা শুনানির জন্য ডাক পড়লে বাদী উপস্থিত, কিন্তু বিবাদী অনুপস্থিত থাকলে, সে ক্ষেত্রে আদালত মামলাটির একতরফা বিচার করতে পারেন। নিধাির্রত ধাযর্ তারিখে পক্ষগণ হাজির না থাকলে বা বাদী খরচ প্রদানে ব্যথর্ হলে অথবা বাদী নিদির্ষ্ট সময়ে সমন না দিলে বা যথাসময়ে সমন জারি না হলে কিংবা শুনানির তারিখে অথবা মুলতবি শুনানির তারিখে পক্ষ হাজির না হলে ইত্যাদি কারণে আদালত বা আপিল আদালত মামলা খারিজ, ডিসমিস বা পারেন। একতরফা করতে পারেন। এ অবস্থায় উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে ওই আদেশ রদ বা রহিত করতে সংশ্লিষ্ট আদালতে দেওয়ানি কাযির্বধির ৯ আদেশের ৪ ও ১৩ নিয়মে, ৪১ আদেশের ১৯ ও ২১ নিয়মে প্রতিকারের জন্য প্রাথির্ত মামলাকে ‘একতরফা মামলা’ বলে। বাংলাদেশের প্রচলিত দেওয়ানি কাযির্বধি-১৯০৮-এর আদেশ ৯-এর নিয়ম ৬ এবং ৭; আদেশ ১৭-এর নিয়ম ২ এবং আদেশ ৪১-এর নিয়ম ১৭-তে একতরফা বিচার সম্পকের্ বিধান রয়েছে। আদেশ ৯-এর নিয়ম ৬ মোতাবেক যদি বিবাদী হাজির না হন এবং প্রমাণিত হয়, সমন সঠিকভাবে জারি করা হয়েছে সে ক্ষেত্রে আদালত একতরফাভাবে বিচার করতে পারেন। পাশাপাশি ১৭ আদেশের ২ নিয়মের বিধান মোতাবেক সময়ের প্রাথর্না মঞ্জুর হওয়ার পর ধাযর্ তারিখে বিবাদী হাজির না থাকলে আদেশ ৯-এর বিধান মোতাবেক একতরফা বিচার হবে। আদেশ ৪১-এর নিয়ম ১৭ মতে একতরফা আপিলের বিচার সম্পকের্ বিধান রয়েছে। এখানে উল্লেখ করা হয়েছে যে, শুনানি মুলতবি হলে পরবতীর্ তারিখে আপিলের শুনানির জন্য ডাক পড়লে আপিলকারী যদি হাজির না হন, তবে আদালত আপিল খারিজের আদেশ দিতে পারেন; যদি আপিলকারী হাজির হন কিন্তু প্রতিবাদী হাজির না হন, তবে একতরফা আপিলের শুনানি হবে। ‘একতরফা’- বিষয়ে মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান ‘আইন শব্দকোষ’ গ্রন্থে  মন্তব্য প্রদান করতে গিয়ে বলেছেন- ‘অন্যপক্ষের অনুপস্থিতিতে আদালত কতৃর্ক বিচারে অগ্রসর হওয়া। কেবল আবেদনকারীর আজির্ শ্রবণ করে আদালত যখন কোনো নিষেধাজ্ঞা জারি করেন, তখন তা একতরফাভাবে করা হয়।’ বাংলাদেশে এ শব্দটির ব্যবহার প্রচলিত থাকলেও পৃথিবীর নানা দেশে এর পরিবতর্ন হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে- ইংল্যান্ডে বতর্মানে ‘এক্সপারটি’ শব্দটির পরিবতের্ ‘উইদাউট নোটিস’ শব্দগুচ্ছ ব্যবহার করা হয়।