শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংবাদ সংক্ষেপ

নতুনধারা
  ০৮ জুন ২০২১, ০০:০০

নিজস্ব আইনে চলে যে গ্রাম

আইন ও বিচার ডেস্ক

ভারতের মহারাষ্ট্রের গাডচিরিলি জেলার মেন্ডা লেখা গ্রাম। কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারের কোনো আইন এই গ্রামটিকে স্পর্শ করতে পারে না। এসবের বাইরে একটি আলাদা অর্থনীতি, আলাদা আইন-শৃঙ্খলা এবং আলাদা সমাজনীতি তৈরি করে ফেলেছে গ্রামটি।

মহারাষ্ট্রের এই গ্রামটি দেশের অন্য প্রান্তের মতো কেন্দ্রীয় আইন মেনে চলে না। এদের সব দন্ডমুন্ডের কর্তা এখানকার গ্রাম সভা। গ্রামের প্রত্যেক বাসিন্দা মহারাষ্ট্র গ্রাম দান আইনের মাধ্যমে নিজেদের সব সম্পত্তি গ্রাম সভাকে দান করে দিয়েছেন। মেন্ডা লেখা গ্রামে মোট ১০৪টি পরিবার আছে। মোট জনসংখ্যা ৪৮০ জন। মূলত গোন্ড উপজাতির মানুষের

বাস এই গ্রামে।

এই উপজাতিটি বিচ্ছিন্ন জমির মালিকানায় বিশ্বাসই করে না। তাদের মতে, জমির ব্যক্তিগত মালিকানা থাকলে তা বহিরাগতরা সহজে কিনে ফেলতে পারবে। ফলে আদিবাসী অধু্যষিত গ্রামে বহিরাগতরা ঢুকে

পড়ার সম্ভাবনা প্রবল।

গ্রাম দান আইন অনুযায়ী এই গ্রামের অর্থনীতি এখন নিয়ন্ত্রিত হয় গ্রাম সভার মাধ্যমে। গ্রামের সম্পদ জমা হয় গ্রাম সভার হাতে। তারাই গ্রামবাসীদের সব সুযোগ-সুবিধা দেন। মেন্ডা লেখা গ্রামে পঞ্চায়েত ব্যবস্থাও কার্যত অচল। এই গ্রাম থেকে গ্রাম পঞ্চায়েতে কোনো প্রতিনিধি যান না। সবটাই হয় গ্রাম

সভার মাধ্যমে।

প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ গ্রামটি আর্থিক দিক থেকেও সচ্ছল। অরণ্যের অধিকার আইনানুযায়ী আদিবাসী অধু্যষিত গ্রামটি নিকটবর্তী জঙ্গলের সম্পদ সংগ্রহ করতে পারে।

গ্রামটির আশপাশে প্রায় ৩০০ একর জমিজুড়ে রয়েছে বাঁশবাগান। বছরে প্রায় এক কোটি টাকার বাঁশ বিক্রি হয়। যার স্বত্ব পায় গ্রাম সভা অর্থাৎ পরোক্ষভাবে গ্রামবাসীরা। বাঁশ বিক্রির টাকা গ্রামবাসীদের মধ্যেই বিলিয়ে দেয় গ্রাম সভা। স্থানীয় যুবকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় বাঁশের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী তৈরির। গ্রামবাসীরা নিজেদের রোজগারের ১০ শতাংশ গ্রাম সভায় দান করে, যা পরবর্তীকালে সমস্যার সময় তাদেরই ঋণ হিসেবে দেওয়া হয় বিনা সুদে।

আর্থিক সচ্ছলতার পাশাপাশি, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির দিক থেকেও স্বতন্ত্র এই গ্রামটি। এই গ্রামের বেশ কিছু নিজস্ব আইন আছে। তবে ফৌজদারি মামলায় তারা হস্তক্ষেপ করে না। গোটা গ্রামের সম্পত্তি এক জায়গায় থাকার ফলে গ্রামটি একটি পরিবারের মতো। ফলে

সামাজিক অশান্তিও তেমন

নেই বললেই চলে।

দেড়শ' টাকার দই চোর ধরতে ৪২ হাজার টাকার ডিএনএ টেস্ট

আইন ও বিচার ডেস্ক

তাইওয়ানে রুমমেটের দই চুরির দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে এক নারীকে। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে দই চোরকে শনাক্ত করা হয় বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম।

অপরাধীর নাম প্রকাশ না করে গণমাধ্যম টিভিবিএস জানায়, তিনি তাইপেতে একটি ছাত্রাবাসে আরও পাঁচ ছাত্রীর সঙ্গে থাকতেন। তারা শহরের চাইনিজ কালচারাল ইউনিভার্সিটিতে পড়ালেখা করছেন।

গত মাসে এই ছাত্রীদের একজন দেখেন, তার কিনে রাখা দই অনুমতি ছাড়াই কে যেন খেয়ে ফেলেছে। দইয়ের বোতলটির দাম ছিল ৫৯ নিউ তাইওয়ান ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায়

দেড়শ টাকা।

বিক্ষুব্ধ ওই ছাত্রী ময়লার ঝুড়ি থেকে দইয়ের বোতল খুঁজে বের করেন এবং জানতে চান কে তার দই চুরি করে খেয়েছে। যখন কেউই অপরাধ স্বীকার করে এগিয়ে আসেনি তখন তিনি ওই বোতল পুলিশের কাছে নিয়ে যান এবং আনুষ্ঠানিক তদন্তের দাবি জানান। পুলিশ তার অভিযোগ গ্রহণ করে।

বোতলটি অত্যন্ত ভিজে থাকায় সেটি থেকে চোরের আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করা সম্ভব ছিল না। এ কারণে পুলিশ তার রুমমেটদের ডিএনএ পরীক্ষা করে।

পুলিশ অভিযোগকারীসহ ওই রুমের সব ছাত্রীকেই পুলিশ স্টেশনে যেতে বলে তাদের পরীক্ষার জন্য।

প্রতিটি ডিএনএ টেস্টের জন্য খরচ হয় তিন হাজার তাইওয়ান ডলার বা ৯৮ মার্কিন ডলার। অর্থাৎ, সবগুলো টেস্টের জন্য বাংলাদেশি মুদ্রায় খরচ হয় প্রায় ৪২ হাজার টাকা। তাইওয়ানের মানুষের ট্যাক্সের টাকায় এই তদন্তের খরচ চালানোয় তারা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। সামান্য জিনিসের জন্য অনেক বাজে খরচ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করছেন তারা।

স্থানীয় এক বাসিন্দা অ্যাপল ডেইলি পত্রিকাকে বলেন, 'এটা সমাজের সম্পদের অপচয়। আমি পুলিশ অফিসার হলে ওই মেয়েকে এক বোতল দই কিনে দিয়েই ঝামেলা মিটিয়ে ফেলতাম।'

নাম গোপন রাখার শর্তে এক পুলিশ অফিসার পত্রিকাকে জানান, 'এই মামলাটায় মশা মারতে কামান দাগা হয়ে গেছে। পুরো বিষয়টিই মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে