#মিটু ঝড়

আন্দোলনের অঁাচ ভারতের বিচার বিভাগেও

প্রকাশ | ১৬ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

আইন ও বিচার ডেস্ক
ভারতজুড়ে হ্যাশ ট্যাগ মিটু (#সবঃড়ড়) ঝড় বয়ে যাছে। গত কয়েক দিনে বিভিন্ন ক্ষেত্রের অনেক খ্যাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে। এবার সেই আন্দোলনের ঢেউ ভারতের বিচার বিভাগেও। মধ্যপ্রদেশ হাইকোটের্র প্রাক্তন এক বিচারপতির বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ তুলে সুপ্রিম কোটের্র দ্বারস্থ জেলা আদালতের এক বিচারক। চাকরিতে পুনবর্হালের জন্য আজির্ জানিয়েছিলেন বিচারক। সেই মামলা গ্রহণ করে ওই বিচারপতির বিরুদ্ধে নোটিস জারি করেছে শীষর্ আদালত। ছয় সপ্তাহ পর মামলার ফের শুনানি। অন্যদিকে #মিটু আন্দোলন সমথর্ন করেছেন বম্বে হাইকোটের্র বিচারপতি গৌতম প্যাটেলও। তার মন্তব্য, পিতৃতান্ত্রিক সমাজে বিচারব্যবস্থার মধ্যেও যৌন হেনস্তার মতো ঘটনা প্রায়ই ঘটে। ওই মহিলা বিচারকের অভিযোগ, ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে শুরু হয় যৌন হেনস্তা। তদন্তের সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সময় অভিযুক্ত বিচারপতির বাড়িতে একটি পাটির্ ছিল। অভিযোগ, এক আদালত কমীর্র মাধ্যমে ওই অভিযোগকারিণী বিচারককে তিনি খবর পাঠান, একটি আইটেম সংয়ের সঙ্গে নাচ করতে। কিন্তু মেয়ের জন্মদিন আছে বলে ওই পাটির্ এড়িয়ে যান মহিলা বিচারক। পরের দিনই বিচারপতি মেসেজ করেন, ‘এক আইটেম সংয়ের ছন্দে এক সুন্দরী মহিলার নাচ দেখা থেকে বঞ্চিত হলাম।’ মহিলা বিচারপতির অভিযোগ, তার পরও নানা রকম অশ্লীল ইঙ্গিত করে মেসেজ করতে থাকেন ওই বিচারপতি। কিন্তু তাতে কোনো সাড়া না দেয়ায় তার ওপর প্রতিশোধ নিতে বদলি করে দেন বলে অভিযোগ জানান মহিলা বিচারক। তার দাবি, তখন তার মেয়ের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলছিল। তাই তার পক্ষে সেই সময় অন্যত্র কাজে যাওয়া সম্ভব ছিল না। বাধ্য হয়ে ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই তিনি চাকরি থেকে ইস্তফা দেন। তাকে বেআইনিভাবে বদলি করা হয় বলেও অভিযোগ মহিলা বিচারকের। এই ঘটনা নিয়ে সুপ্রিম কোটের্র দ্বারস্থ হন ওই মহিলা বিচারক। চাকরি ফিরে পাওয়ার আজির্ও জানিয়েছেন তিনি। ঘটনার তদন্তে তিন বিচারকের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সুপ্রিম কোটের্ মামলার শুনানিতে ওই তদন্ত কমিটি মতামত দেয়, যৌন হেনস্তার অভিযোগের সরাসরি প্রমাণ না থাকলেও মহিলা বিচারকের বদলি যে বেআইনিভাবে করা হয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে তা ¯পষ্ট। মহিলাও শীষর্ আদালতে জানিয়েছেন, তিনি স্বেচ্ছায় বা নীতিগতভাবে চাকরি থেকে ইস্তফা দেননি। বরং পরিস্থিতির চাপ তাকে বাধ্য করেছে ওই সিদ্ধান্ত নিতে। তার বদলি ছিল অনিয়মিত, বেআইনি, শাস্তিমূলক ও স্বেচ্ছাচারী। তাই চাকরি ফিরে পেতে চান তিনি। পাশ্চাত্যে শুরু হলেও নানা পাটেকরের বিরুদ্ধে তনুশ্রী দত্ত অভিযোগ তোলার পর এ দেশেও গতি পেয়েছে #মিটু আন্দোলন। গত কয়েক দিনে বিভিন্ন ক্ষেত্রের অনেক খ্যাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে। এবার সেই আন্দোলনের ঢেউ বিচার বিভাগেও। সেই আজির্ই গ্রহণ করেছে সুপ্রিম কোটর্। অন্যদিকে বম্বে হাইকোটের্র বিচারপতি গৌতম প্যাটেল শুক্রবার একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বলেন, যেসব মহিলারা তাদের জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতা শেয়ার করছেন, তাদের তিনি পূণর্ সমথর্ন করেন। তিনি আরও বলেন, বিচারব্যবস্থার মধ্যেও পিতৃতান্ত্রিকতা রয়েছে। কোনো মহিলার বুদ্ধিমত্তা দক্ষতা ও অন্য সব গুণ থাকা সত্তে¡ও তাকে শুধু মহিলা বলেই এই ধরনের ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়। এটা সবর্ত্রই ঘটে। বিচারব্যবস্থার মধ্যেও আছে।