মিশিগানের আদালতে অনুমোদন পেল সিলেটের আঞ্চলিক ভাষা

প্রকাশ | ০৬ জুলাই ২০২১, ০০:০০

আইন ও বিচার ডেস্ক
মার্কিন অভিবাসন আদালতে আঞ্চলিক ভাষা হিসেবে সিলেটি বাংলা ভাষা স্বীকৃতি পেয়েছে। মামলায় ভাষাসংক্রান্ত জটিলতা এড়াতে সিলেটি অভিবাসীবহুল মিশিগানের অভিবাসন আদালতের বিচারক সিলেটি ভাষার দোভাষী (ইন্টারপ্রেটার) অনুমোদন করেছেন। মিশিগান অঙ্গরাজ্যের আদালতে অভিবাসনের বিভিন্ন মামলায় হাজিরা দিতে গিয়ে বিপাকে পড়েন অভিবাসীরা। দোভাষী হিসেবে বাংলাভাষী লোকজনের উপস্থিত থাকলেও অভিবাসন মামলায় জড়িয়ে পড়া সিলেট অঞ্চলের লোকজনকে নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। পাসপোর্টের সূত্র অনুযায়ী, আদালতে বাংলা ভাষায় দোভাষী রাখা হলেও সিলেট অঞ্চল থেকে আসা অভিবাসীরা প্রমিত বাংলা ভাষায় তাদের মামলার আবেদন ব্যাখ্যা করতে পারেন না। মিশিগানের ট্রয় নগরের বাসিন্দা জাকারিয়া আহমদ জানান, বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চল থেকে আসা লোকজনের অ্যাসাইলাম আবেদন বেশি প্রত্যাখ্যান হয়। সিলেটের গ্রামাঞ্চল থেকে আসা এসব অভিবাসীদের ভাষাগত সমস্যা টের পেয়ে তিনি সহকর্মীকে নিয়ে এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে শুরু করেন। তারা দেখেন, দোভাষীরা অনেক ক্ষেত্রেই সিলেটি ভাষার আবেদনকারীর মূল বক্তব্য তুলে ধরতে পারেন না বা ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে ফেলেন। ২০১৭ সালে সিলেটের একজন বাসিন্দা তিনবার অভিবাসন বিচারকের সামনে উপস্থিত হয়েও নিজের সমস্যা ব্যাখ্যা করতে পারেননি ভাষাগত সমস্যার কারণে। নয় মাস কারাগারে থাকার পর এ অভিবাসী কিছুটা ইংরেজি ভাষা আয়ত্ত করেন। পরে তিনি অভিবাসন বিভাগকে জানান, তার বাড়ি বাংলাদেশের সিলেট জেলায়। তিনি সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলেন। তখন অভিবাসন বিভাগ থেকে জাকারিয়া আহমদকে ডাকা হয়। জাকারিয়া বলেন, বিচারক ১৫ মিনিট সময় দিয়ে অভিবাসন আবেদনকারীর সমস্যা ব্যাখ্যা করার নির্দেশ দিলেন। অভিবাসন আবেদনকারী জানান, বাংলা ভাষায় ব্যাখ্যা করার জন্য আগে কলকাতার বাংলাভাষী কোনো একজনকে ডাকা হয়েছিল। এ কারণে আবেদনকারী যা বলতে চেয়েছেন দোভাষী নিজেই তা বোঝেননি। পরে বিষয়টি বিচারককে জানালে বিচারক সিলেট সম্পর্কে জানতে চান। অভিবাসন বিচারক ইন্টারনেটে সার্চ করে দেখেন, আসামের একটি অংশ ছিল সিলেট। এ অঞ্চলের ভিন্ন ভাষা সম্পর্কেও বিচারক তথ্য সংগ্রহ করে সিলেটি ভাষাকে অভিবাসন আদালতে ব্যাখ্যার জন্য অনুমোদন দেন। জাকারিয়া আহমদ আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থানে ভাষাগত সমস্যার কারণে বিপাকে পড়েন সিলেট থেকে আসা অভিবাসীরা। আমেরিকায় সিলেটি ভাষা স্বীকৃতি পাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বিভিন্ন নগরীতে বসবাসরত সিলেটিদের মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়।