মৃত ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়ে দলিল সম্পাদনের অভিযোগে মামলা

প্রকাশ | ১৩ জুলাই ২০২১, ০০:০০

আইন ও বিচার ডেস্ক
কুড়িগ্রামের চর রাজিবপুর উপজেলায় ৩৫ বছর আগের এক মৃত ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়ে জমির ভুয়া দলিল সম্পাদন হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং কুড়িগ্রাম আদালতে এ সংক্রান্ত একটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। কুড়িগ্রাম সিআইডি পুলিশ আদালতে এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। সংশ্লিষ্ট মামলার বাদী এবং পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলার চর রাজিবপুর উপজেলার বদরপুর গ্রামের মৃত নজির হোসেনের স্ত্রী দৌলতন নেছা গত ৩৫ বছর আগে মারা যান। দৌলতন নেছা জীবিত থাকাবস্থায় তিনি ওই গ্রামের তার অল্প পরিমাণ জমি প্রতিবেশী মজিবর রহমানের নিকট বিক্রি করেছিলেন। দৌলতন নেছা মারা যাওয়ার কয়েক বছর পর ওই এলাকা নদীভাঙনের শিকার হলে মৃত দৌলতন নেছার পরিবার ওই উপজেলার বটতলা (কারিগরপাড়া) গ্রামে এবং মজিবর রহমানের পরিবার টাংগালিয়াপাড়া গ্রামে বসতি স্থাপন শুরু করেন। মজিবর রহমানের ছেলে ইসমাইল হোসেন (৩২), সে তার মাতা জহুরা খাতুন (৬০)-কে ভুয়া দৌলতন নেছা সাজিয়ে দলিল লেখক মো. নূরুন্নবী (৩৬) মাধ্যমে গত ০৩/০২/২০২০ ইং তারিখ চর রাজিবপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে মৃত দৌলতন নেছার বদরপুর গ্রামের ৫০ শতক জমি নিজ (ইসমাইল) নামে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করে (তর্কিত দলিল নং-১৩১/২০)। জমি রেজিস্ট্রেশনের পর ০৭/০২/২০২০ ইং তারিখ উক্ত জমির দখল নিতে গেলে বটতলা গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে আব্দুল করিম (৪৭) (অর্থাৎ মৃত দৌলতন নেছার নাতি) জমির দলিল-পত্র দেখতে চাইলে, ইসমাইল হোসেন উক্ত সদ্য দলিলকৃত জমির অনুলিপি দেখান এবং জমি জবর-দখল করেন। উক্ত দলিল ভুয়া অনুমান হলে আব্দুল করিম চর রাজিবপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে প্রাথমিক যাচাই করেন এবং ওই (ফেব্রম্নয়ারি) মাসেই সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (চর রাজিবপুর উপজেলা, কুড়িগ্রাম)-এ আট জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার অভিযোগটি যাচাইয়ের জন্য কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইডি) ওপর ন্যস্ত হয়। উক্ত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিআইডি পুলিশ পরিদর্শক এমএ ফারুক দীর্ঘ তদন্ত শেষে গত ০৬/০৭/২০২১ ইং তারিখ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (চর রাজিবপুর উপজেলা) নিকট তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। কুড়িগ্রাম জেলা সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক এমএ ফারুক জানান, সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের ল্যাবরেটরিতে দৌলতন নেছা জীবিত অবস্থায় সম্পাদনকৃত জমির দলিলে আঙ্গুলের ছাপ এবং ০৩/০২/২০২০ ইং তারিখে সম্পাদনকৃত দলিলে দৌলতন নেছার আঙ্গুলের ছাপের মধ্যে মিল পাওয়া যায়নি। কিন্তু উক্ত বিতর্কিত দলিলে দৌলতন নেছার আঙ্গুলের ছাপ এবং ১৫/০৩/২০২১ ইং তারিখে আদালতের সম্মুখে নেওয়া জহুরা খাতুনের (২নং আসামি) আঙ্গুলের ছাপের মধ্যে মিল পাওয়া গিয়েছে। আমি গত ০৬/০৭/২০২১ ইং তারিখ আমার তদন্তকৃত ও প্রস্তুতকৃত প্রতিবেদনটি বিজ্ঞ আদালতের নিকট জমা দিয়েছি।