শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সাড়ে তিন দশকের 'বন্দি'কে ফিরিয়ে আনা হলো আন্দামান থেকে

আইন ও বিচার ডেস্ক
  ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০

ঝাড়খন্ডের গুমলা জেলার বিষ্ণুপুরের বাসিন্দা ৭০ বছরের বৃদ্ধ ফুচা মাহলি। কলকাতার একটি জাহাজ সংস্থায় শ্রমিকের চাকরি নিয়ে গিয়েছিলেন আন্দামানে। সেই সংস্থাটি এক বছরের মধ্যে বন্ধ হয়ে গেলে পেট চালাতে ভিক্ষা করতে শুরু করেন ফুচা। কারণ আন্দামান থেকে ঝাড়খন্ডের গ্রামে ফেরার পয়সাটুকুও যে ছিল না। তার মধ্যেই সুদীপ নামে স্থানীয় এক মহাজন তার কাছে থাকা সব কাগজপত্রও কেড়ে নেয়। বাধ্য তার কাছেই দু'বেলা খেতে দেওয়ার চুক্তিতে কাজ করতে শুরু করেন ফুচা। সেই শুরু। কাঠ কাটা থেকে শুরু করে প্রায় সব রকমের কাজই ফুচাকে দিয়ে করিয়ে নিত সেই মহাজন। সেখানে কার্যত ক্রীতদাসের জীবন কাটাতে হয়েছে তাকে।

সঙ্গী বলতে ছিল একটি রেডিও। আর দিনভর খাটনির বিনিময়ে খাবার। চারদিকে সমুদ্রের জল। তার মধ্যেই দিন আসে, দিন যায়। সেসব জীবন পিছনে ফেলে আবার যে কোনো দিন নিজের গ্রামের ঘরবাড়ি, পরিবার, সন্তানদের মুখ দেখতে পাবেন, তা গত সাড়ে তিন দশকে ভাবতেই

পারেননি তিনি।

বাড়ি ফেরার আশা একরকম ছেড়েই দিয়েছিলেন ফুচা। কিন্তু হাল ছাড়েনি তার পরিবার। নানা জায়গায় ছোটাছুটি করতে শুরু করেন ফুচার স্ত্রী-সন্তান। তারা পাশে পান স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা শুভ সন্দেশকে। তাদের সাহায্যেই ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের কাছে পৌঁছয় ফুচার কাহিনী। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে শ্রম দপ্তর সক্রিয় হয়ে ওঠে। তারপর বেশ কিছুদিন ধরে সন্ধান চালানোর পরে খোঁজ মেলে ফুচার। আন্দামান থেকে বিমানে চড়িয়ে তাকে ফেরানো হয় রাঁচিতে। এরপর নিজের গ্রামে ফিরেছেন ফুচা। মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য শ্রম দপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন, ফুচা এবং তার পরিবারকে সব রকম সাহায্য করতে। যখন আন্দামানে গিয়েছিলেন তখন ফুচার বয়স ছিল তিরিশের কোঠায়। আজ তিনি বৃদ্ধ। বয়স প্রায় ৭০। বাকি জীবনটুকু বিশ্রাম নিয়েই কাটাতে

চান ফুচা মাহলি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে