জেনে নিন

সুখাধিকার

প্রকাশ | ১৩ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ধরুন আপনার একটি জমির ওপর দিয়ে আপনার প্রতিবেশী তার বাড়িতে যাতায়াত করে এবং তার বিকল্প কোনো রাস্তা নেই। এই যে আপনার জমির ওপর দিয়ে সে তার বাড়িতে যাওয়ার রাস্তা করে নিয়েছে এই অধিকারটিকে বলে সুখাধিকার বা বতর্স্বত্ব। এখন আপনি কি চাইলেও তাই এই রাস্তা বন্ধ করে দিতে পারেন? একটা নিদির্ষ্ট সময় পযর্ন্ত আপনি যদি তার এই সুখাধিকার উপভোগে বাধা দিয়ে না থাকেন, তবে একটা সময় তিনি এই সুখাধিকার দাবি করতে পারবেন এবং আপনি কোনোক্রমেই তাকে সেই অধিকার থেকে বাধা দিতে পারবেন না। তামাদি আইনের ২৬ ধারায় দীঘির্দন ব্যবহারের ফলে সুখাধিকার কীভাবে শক্তপোক্তভাবে তৈরি হয়, তার বিধান বলা আছে। এই ধারা অনুসারে, আলো, বাতাস, রাস্তা, জলাধার, পানির ব্যবহারের ওপর জনগণের বা কোনো নিদির্ষ্ট ব্যক্তি বা ব্যক্তিবগের্র সুখাধিকার তৈরি হতে পারে। এ ক্ষেত্রে যারা সুখাধিকার দাবি করছেন, তাদের আদালতের কাছে প্রমাণ করতে হবেÑ ১. তারা দীঘির্দন ধরে এই অধিকারগুলো শান্তিপূণর্ভাবে, উন্মুক্তভাবে ব্যবহার করে আসছেন, ২. তারা অধিকার হিসেবেই এগুলো উপভোগ করে আসছেন এবং তাদের এই উপভোগে মালিক কতৃর্ক কোনো বাধা দেয়া হয়নি, ৩. তারা এই অধিকারগুলো সরকারি জমির ক্ষেত্রে ৬০ বছর এবং ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমির ক্ষেত্রে ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে উপভোগ করে আসছেন, ৪. বিশ বছর বা বারো বছর এভাবে সুখাধিকার উপভোগ করার পর পরবতীর্ দুই বছরের মধ্যে আদালতের শরণাপন্ন হয়ে সুখাধিকার দাবি করতে হবে। এই বিষয়গুলো প্রমাণ করতে পারলে, যারা সুখাধিকার দাবি করছেন, আদালত তাদের অনুক‚লে সুখাধিকার ভোগের রায় প্রদান করবে। তবে যার সম্পত্তিতে এই সুখাধিকার দাবি করা হচ্ছে, তিনি যদি ২০ বছরের মধ্যে একটি দিনেরও প্রমাণ দিতে পারেন, যেদিন তিনি এই অধিকারগুলো উপভোগে বাধা দিয়েছেন, তাহলে সুখাধিকার দাবিকারীদের আবেদন অগ্রাহ্য হবে। শুধু তাই নয়, সম্পত্তির মালিক যদি প্রমাণ করতে পারেন যে, তার বিশেষ অনুমতি সাপেক্ষে অধিকার দাবিকারীরা এতদিন সম্পত্তিটির ওপর সুখাধিকার ভোগ করেছে, সে ক্ষেত্রে সুখাধিকার স্থায়ীভাবে দাবিকারীদের অনুক‚লে প্রদান করা হবে না। স্থায়ীভাবে সুখাধিকার পেতে হলে দাবিকারীদের দেখাতে হবে, মালিকের অনুমতি ছাড়াই তারা সুখাধিকারগুলো ভোগ করেছেন এবং মালিক কখনো তাতে বাধা দিতে আসেনি।