জার্মানিতে সিরিয়ার সাবেক কর্নেলের যাবজ্জীবন

প্রকাশ | ১৮ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০

আইন ও বিচার ডেস্ক
মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের দায়ে সিরিয়ার সাবেক কর্নেল আনোয়ার আর-কে বৃহস্পতিবার যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন জার্মানির এক আদালত। বিশ্বে এই প্রথম কোথাও সিরিয়ায় রাষ্ট্র-প্ররোচিত অত্যাচারের বিরুদ্ধে রায় দেয়া হলো। সিরিয়ার দামেস্কের আল-খতিব বন্দিশিবিরে ২৭ জনকে হত্যার ঘটনায় আনোয়ার আর-কে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। ২০১২ সালে সিরিয়া ছেড়ে জার্মানিতে আশ্রয় নেন ৫৮ বছর বয়সি আনোয়ার। ২০২০ সালের এপ্রিলে ইয়াদ-আল-ঘারিব নামে অন্য এক কর্মকর্তা এবং আনোয়ারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদীদের গ্রেপ্তার করে বন্দিশালায় পাঠানোর অভিযোগে শুনানি শুরু হয়েছিল। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অপরাধে ঘারিব সাড়ে চার বছর হাজতবাস করেন। জার্মানির কোবলেনৎসের আদালত বলেছেন, ২০১১ সালের মার্চ থেকে অশান্ত সিরিয়ায় বারবার অত্যাচারের মুখে পড়ছেন সাধারণ নাগরিকরা। এক্ষেত্রে দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগকে সর্বজনীন আইনি নীতি অনুযায়ী দেখা হয়েছে। এর ফলে অন্য দেশে অন্যায় ঘটলেও আরেক দেশে শুনানি হওয়া সম্ভব। এক জার্মান তদন্তকারী জানিয়েছেন, প্রায় ১৮ বছর আনোয়ার আর. সিরীয় গুপ্তচর সংস্থার হয়ে কাজ করেছেন। ধীরে ধীরে সংস্থার শীর্ষপদে আসীন হন। ধর্ষণ, যৌন হেনস্তা, বিদু্যতের শক, মাছ ধরার ছিপ, দড়ি, বড়শি দিয়ে ঘৃণ্য অত্যাচারের তদারকি করতেন আনোয়ার, এমন অভিযোগও রয়েছে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে থাকা ৮০-র বেশি প্রত্যক্ষদর্শী এই মামলায় সাক্ষ্য দেন। গণকবর খনন করা হয়েছিল আনোয়ারের সামনে। তালিকা প্রস্তুত করতে হয়েছিল তাকে, এক ব্যক্তি জানিয়েছেন এমনটাই। পরবর্তী সময়ে সিরিয়ার পরিজনদের যাতে কোনো সমস্যায় পড়তে না হয়, তাই কেউ বা ছদ্মবেশে সাক্ষ্য দিয়েছেন মামলায়। আবার অনেকে ভয়ে সাক্ষ্য দিতে রাজি হননি। সিরিয়ার সেনাবাহিনীর তরফে এক আলোকচিত্রী কাজ করতেন, তার সাক্ষ্যও নেওয়া হয়। শুনানির সময় আনোয়ার আর. সম্পূর্ণ নীরব ছিলেন। ব্রিটেনের মানবাধিকার সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের হিসেবে, আসাদের বন্দিশিবিরগুলোতে অসহনীয় পরিস্থিতি ও নির্যাতনের কারণে কমপক্ষে ৬০ হাজার জন প্রাণ হারিয়েছেন। গৃহযুদ্ধের কারণে প্রায় ৬৬ লাখ মানুষ সিরিয়া ছেড়ে পালিয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা।