সংসদ নিবার্চনে যে আচরণবিধি মানতে হয়

একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চন আসন্ন। তফসিল ঘোষণার দিন থেকে শুরু করে নিবার্চনের দিন পযর্ন্ত প্রাথীর্ ও তার সমথর্কদের নিবার্চনী আচরণবিধি মেনে চলতে হয়। আচরণবিধির লঙ্ঘনে কমিশন দÐ আরোপ করতে পারে। বিষয়টি নিয়ে লিখেছেন মারুফ আল্লাম

প্রকাশ | ২০ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
অনুদান বা সরকারি প্রকল্প দেয়া যাবে না কোনো প্রাথীর্ তার নিবার্চনী এলাকায় বসবাসকারী কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা ওই এলাকা বা অন্যত্র অবস্থিত কোনো প্রতিষ্ঠানে প্রকাশ্যে বা গোপনে কোনো প্রকার চঁাদা বা অনুদান দিতে বা দেয়ার অঙ্গীকার করতে পারবেন না। নিবার্চন-পূবর্ সময়ে কোনো সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে রাজস্ব বা উন্নয়ন তহবিলভুক্ত কোনো প্রকল্পের অনুমোদন, ঘোষণা বা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা যাবে না। সরকারি স্থাপনা ব্যবহার করে প্রচারণা চালানো যাবে না সরকারি ডাক-বাংলো, রেস্ট হাউস, সাকির্ট হাউস বা কোনো সরকারি কাযার্লয়কে কোনো দল বা প্রাথীর্র পক্ষে বা বিপক্ষে প্রচারের স্থান হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না; কোনো প্রাথীের্ক সরকারি ডাক-বাংলো, রেস্ট হাউস ও সাকির্ট হাউস ব্যবহারের অনুমতি প্রদানের ক্ষেত্রে প্রথম আবেদনের ভিত্তিতে ব্যবহারসংক্রান্ত বিদ্যমান নীতিমালা এবং ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স ও প্রাধিকার অনুযায়ী সমান অধিকার দিতে হবে; নিবার্চন পরিচালনার কাজে সংশ্লিষ্ট কমর্কতার্রা সরকারি ডাক-বাংলো, রেস্ট হাউস ও সাকির্ট হাউস ব্যবহারের অগ্রাধিকার পাইবেন। সভা সমিতি অনুষ্ঠানসংক্রান্ত বিধি-নিষেধ প্রচারণার ক্ষেত্রে প্রাথীর্রা সমান অধিকার পাবে তবে প্রতিপক্ষের সভা, শোভাযাত্রা এবং অন্যান্য প্রচারাভিযান পÐ বা তাতে বাধা প্রদান বা ভীতি সঞ্চারমূলক কিছু করতে পারবে না; সভার দিন, সময় ও স্থান সম্পকের্ যথাযথ কতৃর্পক্ষের কাছ থেকে লিখিত অনুমতি গ্রহণ করতে হবে তবে এ ধরনের অনুমতি লিখিত আবেদন প্রাপ্তির সময়ের ক্রমানুসারে দিতে হবে; সভার কমপক্ষে ২৪ ঘণ্টা আগে তার স্থান এবং সময় সম্পকের্ স্থানীয় পুলিশ কতৃর্পক্ষকে জানাতে হবে; জনগণের চলাচলে বিঘœ সৃষ্টি করতে পারে এমন কোনো সড়কে জনসভা কিংবা পথসভা করা যাবে না; কোনো সভা অনুষ্ঠানে বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে আয়োজকরা পুলিশের শরণাপন্ন হবেন এবং এ ধরনের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তারা নিজেরা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন না। প্রচার-প্রচারণাসংক্রান্ত বিধি-নিষেধ ভোট গ্রহণের জন্য নিধাির্রত দিনের তিন সপ্তাহ সময়ের আগে কোনো প্রকার নিবার্চনী প্রচার শুরু করা যাবে না। নি¤œলিখিত স্থান বা যানবাহনে কোনো প্রকার পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল লাগানো যাবে না: সিটি করপোরেশন এবং পৌর এলাকায় অবস্থিত দালান, দেয়াল, গাছ, বেড়া, বিদ্যুৎ ও টেলিফোনের খুঁটি বা অন্য কোনো দÐায়মান বস্তুতে; সমগ্র দেশে অবস্থিত সরকারি বা স্থানীয় কতৃর্পক্ষের স্থাপনাগুলোয়; এবং বাস, ট্রাক, ট্রেন, স্টিমার, লঞ্চ, রিকশা কিংবা অন্য কোনো প্রকার যানবাহনে। তবে শতর্ থাকে যে, দেশের যে কোনো স্থানে পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল ঝুলাতে বা টাঙাতে পারবে। কোনো প্রতিদ্ব›দ্বী প্রাথীর্র পোস্টার, লিফলেট, হ্যান্ডবিল ইত্যাদির ওপর অন্য কোনো প্রতিদ্ব›দ্বী প্রাথীর্র পোস্টার, লিফলেট, হ্যান্ডবিল ইত্যাদি লাগানো যাবে না এবং ওই পোস্টার, লিফলেট ও হ্যান্ডবিল ইত্যাদির কোনো প্রকার ক্ষতিসাধন অথার্ৎ বিকৃতি বা বিনষ্ট করা যাবে না। কোনো প্রতিদ্ব›দ্বী প্রাথীর্র নিবার্চনী প্রচারণায় ব্যবহৃতব্য পোস্টার সাদাকালো রঙের হতে হবে এবং পোস্টার বা ব্যানারে প্রাথীর্ তার প্রতীক ও নিজের ছবি ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তির ছবি বা প্রতীক ছাপাতে পারবেন না। প্রতিদ্ব›দ্বী প্রাথীর্ কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মনোনীত হলে সে ক্ষেত্রে তিনি শুধু তার বতর্মান দলীয় প্রধানের ছবি পোস্টারে ছাপাতে পারবে। কোনো অনুষ্ঠান, মিছিলে নেতৃত্বদান, প্রাথর্নারত অবস্থা ইত্যাদি ভঙ্গিমায় ছবি কোনো অবস্থাতেই ছাপানো যাবে না। দেয়াল, থাম, বাড়ি বা ঘরের ছাদ, সেতু, সড়ক দ্বীপ, রোড ডিভাইডার, যানবাহন বা অন্য কোনো স্থাপনায় প্রচারণামূলক কোনো লিখন বা অংকন করা যাবে না। নিবার্চনী প্রচারণার ক্ষেত্রে প্রতীক হিসেবে জীবন্ত প্রাণী ব্যবহার করা যাবে না। নিবার্চনী প্রচারণায় কোনো গেট, তোরণ নিমার্ণ করা যাবে না ও আলোকসজ্জা করা যাবে না। জনগণের চলাচল ও সাধারণ ব্যবহারের জন্য নিধাির্রত স্থানে নিবার্চনী ক্যাম্প বসাতে পারবেন না; একজন প্রাথীর্ দলীয় ও সহযোগী সংগঠনের কাযার্লয় নিবিের্শষে প্রতিটি ইউনিয়নে সবোর্চ্চ একটি এবং প্রতিটি পৌরসভা বা সিটি করপোরেশন এলাকার প্রতি ওয়াডের্ একটির বেশি নিবার্চনী ক্যাম্প স্থাপন করতে পারবেন না। নিবার্চনী প্রচারণার জন্য প্রাথীর্র ছবি বা প্রাথীর্র পক্ষে প্রচারণামূলক কোনো বক্তব্য বা কোনো পোশাক ব্যবহার করা যাবে না। নিবার্চনী ক্যাম্পে ভোটারদের কোনোরূপ খাদ্য-পানীয় বা উপঢৌকন দেয়া যাবে না। মাইক বা শব্দের মাত্রা বধর্নকারী অন্য কোনো যন্ত্রের ব্যবহার দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। নিবার্চনী প্রচারণাকালে ব্যক্তিগত চরিত্র হনন করে বক্তব্য প্রদান বা কোনো ধরনের তিক্ত উস্কানিমূলক বা মানহানিকর কিংবা লিঙ্গ, সাম্প্রদায়িকতা বা ধমার্নুভ‚তিতে আঘাত লাগে এমন কোনো বক্তব্য দেয়া যাবে না। কোনো ধমীর্য় উপাসনালয়ে নিবার্চনী প্রচারণা চালানো যাবে না। কোনো নাগরিকের জমি, ভবন বা অন্য কোনো স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করা যাবে না এবং কারও শান্তি ভঙ্গ করা যাবে না। কমিশন অনুমোদিত ব্যক্তি ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি ভোটকেন্দ্রের নিধাির্রত চৌহদ্দির মধ্যে অস্ত্র বা বিস্ফোরক দ্রব্য বহন করতে পারবেন না। যানবাহন ব্যবহারসংক্রান্ত বিধি-নিষেধ কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা তার মনোনীত প্রাথীর্ বা স্বতন্ত্র প্রাথীর্ কিংবা তাদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তিÑ কোনো ট্রাক, বাস, মোটরসাইকেল, নৌ-যান, ট্রেন কিংবা অন্য কোনো যান্ত্রিক যানবাহনসহ মিছিল কিংবা মশাল মিছিল বের করতে পারবে না বা কোনো ধরনের শোডাউন করতে পারবে না; মনোনোয়নপত্র দাখিলের সময় কোনো প্রকার মিছিল কিংবা শোডাউন করতে পারবে না; নিবার্চনী প্রচারকাজে হেলিকপ্টার বা অন্য কোনো আকাশযান ব্যবহার করা যাবে না তবে দলীয় প্রধানের যাতায়াতের জন্য তা ব্যবহার করতে পারবে। কিন্তু যাতায়াতের সময় হেলিকপ্টার থেকে লিফলেট, ব্যানার বা অন্য কোনো প্রচারসামগ্রী প্রদশর্ন বা বিতরণ করতে পারবে না; নিবার্চনে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার সুবিধাথের্ নিবার্চন কমিশন অনুমোদিত ব্যক্তি ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি কতৃর্ক ভোটকেন্দ্রের নিধাির্রত চৌহদ্দির মধ্যে মোটরসাইকেল বা অন্য কোনো যান্ত্রিক যানবাহন চালাতে পারবে না। সরকারি সুবিধাভোগীদের নিবার্চনী প্রচারণাসংক্রান্ত বিধি-নিষেধ সরকারি সুবিধাভোগী তার সরকারি কমর্সূচির সঙ্গে নিবার্চনী কমর্সূচি বা কমর্কাÐ যোগ করতে পারবেন না। নিবার্চনী প্রচারণায় সরকারি যানবাহন, সরকারি প্রচারযন্ত্রের ব্যবহার বা অন্য কোনো সরকারি সুবিধা ভোগ করতে পারবেন না এবং এ উদ্দেশ্যে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার কমর্কতার্-কমর্চারী বা কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক বা কমর্কতাের্ক ব্যবহার করতে পারবেন না। কোনো প্রতিদ্ব›দ্বী প্রাথীর্ কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পষের্দ আগে সভাপতি বা সদস্য হিসেবে নিবাির্চত বা মনোনীত হয়ে থাকলে বা তার দ্বারা কোনো মনোনয়ন দেয়া হয়ে থাকলে নিবার্চন-পূবর্ সময়ে তিনি বা তার মনোনীত ব্যক্তি ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো সভায় সভাপতিত্ব বা অংশগ্রহণ করবেন না অথবা ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনো কাজে জড়িত হবেন না। ভোটকেন্দ্রে প্রবেশাধিকার ভোটকেন্দ্রে নিবার্চনী কমর্কতার্-কমচার্রী, প্রতিদ্ব›দ্বী প্রাথীর্, নিবার্চনী এজেন্ট, নিবার্চনী পযের্বক্ষক, কমিশন অনুমোদিত ব্যক্তিরা এবং শুধু ভোটারদেরই প্রবেশাধিকার থাকবে। পোলিং এজেন্টরা তাদের জন্য নিধাির্রত স্থানে উপস্থিত থেকে তাদের নিদির্ষ্ট দায়িত্ব পালন করবেন। উল্লিখিত কোনো বিধানের লঙ্ঘন ‘নিবার্চন-পূবর্ অনিয়ম’ হিসেবে গণ্য হবে এবং সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল প্রতিকার চেয়ে নিবার্চনী তদন্ত কমিটি বা কমিশন বরাবর দরখাস্ত পেশ করতে পারবে। কোনো প্রাথীর্ বা তার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি নিবার্চন-পূবর্ সময়ে এই বিধিমালার কোনো বিধান লঙ্ঘন করলে অনধিক ছয় মাসের কারাদÐ অথবা অনধিক পঞ্চাশ হাজার টাকা অথর্দÐে অথবা উভয় দÐে দÐনীয় হবেন। কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল নিবার্চন-পূবর্ সময়ে এই বিধিমালার কোনো বিধান লঙ্ঘন করলে অনধিক পঞ্চাশ হাজার টাকা অথর্দÐে দÐনীয় হবে।