ধর্মীয় স্বাধীনতা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব

ভারতে চলমান মামলা বিষয়ক আইনি আলোচনা

একজন নারী হিজাব পরে বাইরে যাচ্ছে, মার্কেটে যাচ্ছে, অন্য প্রতিষ্ঠানে যাচ্ছে এতে তো পাবলিক অর্ডারের ইসু্য আসছে না। তাহলে কেন শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গেলেই পাবলিক অর্ডারের বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বলে রাখা ভালো, কোর্টে (বেঞ্চে) বিচারকের পক্ষ থেকে একটা খোড়া ও জঘন্য মত দেওয়া হয় এ বিষয়ে। বলা হয়, 'যদি একটা শুয়োরের বাচ্চা নিয়ে কোনো জায়গায় যাই তাহলে লোক বলবে আমি পাগল আর কোনো সমস্যা হবে না। কিন্তু যদি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে যাই তাহলে তা বড় ইসু্য হয়ে দাঁড়াবে।'

প্রকাশ | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০০:০০

রাজীব মন্ডল
১. বিভিন্ন দেশের সংবিধানে স্পষ্টভাবে কিছু স্বাধীনতা/অধিকারের কথা উলেস্নখ করা থাকে। আমাদের দেশও ব্যতিক্রম নয়। ভারতও ব্যতিক্রম নয়। দেশ ভেদে এই সাংবিধানিক স্বাধীনতার মাত্রার কম-বেশি হয়। তবে স্বাধীনতাগুলোর মৌলিক ধারণা অভিন্ন। যেমন- ব্যক্তির জীবনের অধিকার, ব্যক্তিগত জীবনাচারণের স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা ইত্যাদি। একটা ঘটনা দিয়ে শুরু করা যাক। ধরেন যদি এমন হতো, বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের যুদ্ধ চলছে। এমন অবস্থায় কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনো এক স্টুডেন্ট পাকিস্তানের পতাকার ব্যাচ পরে আসছে। তার অবস্থা কি হবে? আমাদের দেশ হলে তো কোর্টের বিচারের আগেই কেউ কেউ ফাঁসির রায় দিয়ে দিত। ঠিক এমন একটা ঘটনা ঘটে আমেরিকার ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময়। আমেরিকান এক স্কুল ছাত্রী খোদ আমেরিকায় দাঁড়িয়ে ভিয়েতনামের পক্ষে ব্যাচ পরিধান করে স্কুলে যায়। স্কুল কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ আনে। কিন্তু আমেরিকান কোর্টের কাছে স্বাধীনতার পরিধি এত বেশি মনে হয়েছে, তারা ওই ছাত্রীর পক্ষে রায় দেয়। রায়ের ভিত্তি হলো ওই ছাত্রীর একজন নাগরিক হিসেবে মত প্রকাশের স্বাধীনতা। ২. এই স্বাধীনতা বা অধিকারগুলো যে দেওয়া হয়েছে সাংবিধানিকভাবে, সেগুলো কিন্তু পরম (ধনংড়ষঁঃব) নয়। কিছু রেস্ট্রিকশনও আছে। আলোচনা হলো এই বিষয় নিয়ে, এই রেস্ট্রিকশনের মাত্রা কতদূর হবে। যেমন- উপরের ঘটনাতে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের মূল বক্তব্য ছিল- এক. এই মত প্রকাশের স্বাধীনতায় কিছু রেস্ট্রিকশন আছে আর ওই ছাত্রীর কাজ রেস্ট্রিকশনের আওতায় পড়ে। আর দুই. প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের কিছু নিয়ম আছে যা মেনে প্রতিষ্ঠানে আসতে হবে। ৩. এখন মূল আলোচনায় আসি। ভারতীয় সংবিধানের ২৫-২৮ অনুচ্ছেদে ধর্মীয় স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে। বিশেষ করে ২৫ অনুচ্ছেদে স্পষ্টত বলা হয়েছে, সব ব্যক্তির তার নিজের ধর্ম পালন ও প্রচারের স্বাধীনতা থাকবে। এমনকি ব্যাখ্যা দিয়ে বলা হয়েছে শিখ ধর্মাবলম্বী হিসেবে কিরপান পরিধান করাও তাদের ধর্মীয় প্রফেশনের অন্তর্ভুক্ত হবে। তাহলে মূল কথা দাঁড়াচ্ছে, একজন নারী সে তার ধর্মের ধর্মীয় অনুশাসন পালনের জন্য ধর্মে যা কিছু আছে তার সবই পালন করতে পারবে নির্বিঘ্নে। এমনকি রাষ্ট্র এর সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করে দেবে। এখন একজন মুসলিম নারী হিসেবে হিজাব পরিধান করা তার ধর্মের প্রধান অনুশাসনগুলোর অন্যতম। তাহলে হিজাব পরিধান করার অধিকার কেউই তার থেকে কেড়ে নিতে পারবে না। এমনকি রাষ্ট্র বা কোনো রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান এমন কোনো আইন বা বিধি বা কাজ করতে পারবে না যাতে ওই নারীর হিজাব পরিধানে বিঘ্নতার সৃষ্টি হয়। এখন প্রশ্ন ওঠে সংবিধান কি কোনো রেস্ট্রিকশন দিয়েছে। উত্তর হলো হঁ্যা। আর তা হলো পাবলিক অর্ডার (জনশৃঙ্খলা), মরালিটি বা জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি না করে পালন করতে হবে। এই কয়টি কারণে কোনো ধর্মীয় অনুশাসন পালনে রাষ্ট্র বা এর প্রতিষ্ঠান বাধা দিতে পারে। কিছু রুল রেগুলেশন আনায়ন করতে পারে। ৪. এখন ঘটনায় আসি। একজন নারীর ধর্মীয় অনুশাসন হিসেবে হিজাব পরিধান করা কি পাবলিক অর্ডার বা মরালিটি বা জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর? সহজ, স্বাভাবিক বা যে কোনো দৃষ্টিকোণ থেকে উত্তর হলো না। হিজাব পরিধান কোনো কিছুরই ক্ষতি করছে না। তাহলে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যে ড্রেসকোড (ঁহরভড়ৎস) দেয় সেই বিধান কি ব্যক্তির ধর্মীয় স্বাধীনতা চেয়ে বড় বিধান বা ধর্মীয় অনুশাসন পালনে বাধা হিসেবে বৈধতা পাওয়ার যোগ্য? উত্তর হলো না। কোনোভাবেই সাংবিধানিক কোনো বিধানের পরিপন্থি নিয়ম সংবিধানের দেওয়া কোনো অধিকার/স্বাধীনতা কে সংকোচন (ঈঁৎঃধরষ) করতে পারবে না। যদি করে তাহলে সেই নিয়মটিই অবৈধ বা অসাংবিধানিক (টহপড়হংঃরঃঁঃরড়হধষ)। তাহলে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ কি করতে পারে? তারা যা করতে পারে তা হলো কোনো ধর্মীয় অনুশাসনের বিরুদ্ধে যাবে না এমন ড্রেসকোড প্রণয়ন করতে পারে। এমনকি প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ যদি এমন ড্রেসকোড প্রবর্তন করে বা পরাতে বাধ্য করে যা ওই ব্যক্তির ধর্মীয় অনুশাসনের পরিপন্থি তার বিরুদ্ধে সাংবিধানিক প্রতিকার হলো ধর্মীয় স্বাধীনতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় তা রদ/বাতিল করার জন্য কোর্টে আবেদন করতে পারে কারণ মৌলিক অধিকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক যে কোনো কিছু বাতিল বলে গণ্য হবে (অনুচ্ছেদ ১৩)। ৫. তাহলে যা দাঁড়াচ্ছে তা হলো- কোনো নারীকে হিজাব পরিধানে বাধা দেওয়ার ক্ষমতা কারোর নেই- সে রাষ্ট্র হোক বা রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্কুল কর্তৃপক্ষ হোক। এমনকি এমন কোনো পোশাক ড্রেসকোড হিসেবে প্রবর্তন করা যাবে না যা তার হিজাবের বিরুদ্ধে যায়। যদি করা হয় এমন বিধান যা তার ধর্মীয় আচার হিসেবে হিজাব পরিধানের বিরুদ্ধে যায় বা সাংঘর্ষিক হয়, তা সাংবিধানিকভাবে অবৈধ ও বাতিল। ধর্মীয় অনুশাসনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নিয়মের কোনো আইনি বৈধতাই নেই। ৬. এখন আসি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব পরিধানে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কর্ণাটক হাইকোর্টের শুনানিতে কি বিষয় উঠে এলো- এক. দেবদত্ত কামাথ স্টুডেন্টদের আইনজীবী হিসেবে হিজাব পরিধানের পক্ষে কিছু সাবমিশন (বিষয় উপস্থাপন করেন) দেন্ত ১. হিজাব পরিধান করা ইসলাম ধর্মে খুবই গুরুত্বপূর্ণ অনুশাসন (ফরজ বিধান)। আর তাই এটি পাবলিক অর্ডারের আওতায় আসে না। এখানে মাদ্রাজসহ বিভিন্ন হাইকোর্টের সুনির্দিষ্ট রায় দিয়ে প্রমাণ করেন যে হিজাব পরিধান করা ইসলামে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আচার। ২. পাবলিক অর্ডারের দোহাই দিয়ে হিজাব পরিধানে বাধাদান ব্যক্তির ব্যক্তি স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, ব্যক্তির গোপনীয়তার স্বাধীনতা ও অবশ্যই ধর্মীয় স্বাধীনতার পরিপন্থি। যা রাষ্ট্রের করার ক্ষমতা নেই। এখানে একটা আরগুমেন্ট দেওয়ার চেষ্টা করেছেন সরকার পক্ষের অ্যাটোর্নি, অনুচ্ছেদ ২৫-এর অধীনে ধর্মের স্বাধীনতা দেওয়া আছে তা ঠিক। কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব পরিধান করার অধিকার সংবিধানের ২৫ অনুচ্ছেদে দেওয়া হয়েছে কিনা এটি আইনের প্রশ্ন (ছঁবংঃরড়হ ড়ভ ষধ)ি। তার কথা হলো, ধর্মীয় অধিকারের আওতায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব পরিধান করা পড়ে কিনা এটাই নিশ্চিত নয়। এটাও যে কত বড় অবিবেচনাপ্রসূত যুক্তি দেখানো হয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ৩. হিজাব পরিধান করাতে কোনো নারী অন্য কারও সমস্যা সৃষ্টি করছে না, কাউকে খেপাচ্ছে না। তাহলে কেন হিজাব পরিধান করা পাবলিক অর্ডারের আওতায় নিয়ে আসা হবে। একজন নারী হিজাব পরে বাইরে যাচ্ছে, মার্কেটে যাচ্ছে, অন্য প্রতিষ্ঠানে যাচ্ছে এতে তো পাবলিক অর্ডারের ইসু্য আসছে না। তাহলে কেন শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গেলেই পাবলিক অর্ডারের বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বলে রাখা ভালো, কোর্টে (বেঞ্চে) বিচারকের পক্ষ থেকে একটা খোড়া ও জঘন্য মত দেওয়া হয় এ বিষয়ে। বলা হয়, 'যদি একটা শুয়োরের বাচ্চা নিয়ে কোনো জায়গায় যাই তাহলে লোক বলবে আমি পাগল আর কোনো সমস্যা হবে না। কিন্তু যদি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে যাই তাহলে তা বড় ইসু্য হয়ে দাঁড়াবে।' বিচারক বলার চেষ্টা করেছেন যে স্থানভেদে একই কাজের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কিন্তু তাই বলে শূকর কোলে করে নিয়ে যাওয়া আর হিজাব পরিধান করা কি এক মাপের বিষয় হলো! হিজাব পরিধান করা ইসলামে ধর্মীয় আচার। শূকর কোলে নিয়ে বেড়ানো কোন ধর্মের ধর্মীয় আচার? বিচারকের মত হলো এখানে জঘন্য ও ম্যাড (পাগল) টাইপ কথা। ৪. হিজাব পরার কারণে আলাদা রুমে পরীক্ষা নেওয়া বৈষম্য (ডিসক্রিমিনেশন) যা একপ্রকার ধর্মীয় বর্ণবাদ (ৎবষরমরড়ঁং ধঢ়ধৎঃযবরফ)। ৫. ওহফরধ ভড়ষষড়ংি ঢ়ড়ংরঃরাব ংবপঁষধৎরংস; উরংঢ়ষধুরহম ৎবষরমরড়ঁং রফবহঃরঃু রং ঢ়বৎসরঃঃবফ. সেকু্যলারিজমের দুটি ভার্সনের (পজিটিভ ও নেগেটিভ) মধ্যে ভারতে পজিটিভ ভার্সন ফলো করা হয়। এখানে রাষ্ট্র এমন পরিবেশ সৃষ্টি করে যেখানে আমরা সব ধর্মের পালন ও প্রচারকে শ্রদ্ধা/রেসপেক্ট করি। তিনি আরও বলেন, 'ওহ ংপযড়ড়ষং, ংড়সবনড়ফু বিধৎং ধ হধসধ, ংড়সবনড়ফু ধ যরলধন, ংড়সবনড়ফু ধ পৎড়ংং, :যধঃ রং ধ ৎবভষবপঃরড়হ ড়ভ ঢ়ড়ংরঃরাব ংবপঁষধৎরংস'। দুই. অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের অ্যাটর্নির কথা হলো, অটোনোমাস বডি হিসেবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ড্রেসকোড (ঁহরভড়ৎস) দিতে পারে এতে রাষ্ট্রের কিছুই বলার নেই (রহঃবৎাবহব) করবে না। কাউন্টার আরগুমেন্টে স্টুডেন্টদের পক্ষে কামাথ পয়েন্ট আউট করেন যে স্টেট এখানে নির্দোষ (ওহহড়পঁড়ঁং) নয়। কারণ সরকার গভর্নমেন্ট অর্ডার (এঙ) ইসু্য করছে এই মর্মে, 'ঃযব ৎবংঃৎরপঃরড়হ রসঢ়ড়ংবফ ড়হ বিধৎরহম যরলধন রহ ধহ বফঁপধঃরড়হধষ রহংঃরঃঁঃরড়হ ফড়বং হড়ঃ ারড়ষধঃব ধৎঃরপষব ২৫' (শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব পরিধানের ওপর নিষেধাজ্ঞা ধর্মীয় স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করে না)। একজন নারীর গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় অনুশাসন পালনে নিষেধাজ্ঞা যদি ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ না হয় তাহলে ধর্মীয় স্বাধীনতার অর্থ কি! আরেকটি বিষয় হলো কোনো কাজ বা কোনো রুলস সংবিধানের অনুচ্ছেদ ভঙ্গ করে তা বিচার করা এই বিষয়ে রায় দেওয়া কোর্টের কাজ। ঝবঢ়ধৎধঃরড়হ ড়ভ ঢ়ড়বিৎ-এর প্রিন্সিপাল অনুযায়ী এডমিনিস্ট্রেশনের কাজ নয়। তিন. দুই দিনের শুনানির পরে হাইকোর্টের সামনে কিছু প্রশ্ন আসে যার সুরাহার জন্য হাইকোর্ট মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে প্রেরণ করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য। এটা মূলত হাইকোর্টের অপারগতা প্রকাশ। এখন দেখার বিষয় এই বিষয়ের ওপর ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট কোন পক্ষে রায় দেয়। এখন কোর্টের সমানে মূল প্রশ্নগুলো হলো- ১। হিজাব পরিধান করা ইসলামে গুরুত্বপূর্ণ বিধান (ফরজ) কিনা? ২। যদি ফরজ হয় তাহলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও হিজাব পরিধানের এই স্বাধীনতা ২৫ অনুচ্ছেদের আন্ডারে আছে কিনা? ৩। হিজাব পরিধানে আদৌ কোনো পাবলিক অর্ডারের (জনশৃঙ্খলার) বিষয় আছে কিনা বা পাবলিক অর্ডারের দোহাই দিয়ে হিজাব পরিধানের ধর্মীয় স্বাধীনতা, গোপনীয়তার স্বাধীনতায় স্টেট হস্তক্ষেপ করতে পারে কিনা? ৪। অটোনোমাস সিদ্ধান্তের আলোকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ইউনিফর্ম নির্ধারণে এমন কোনো ড্রেস যা ধর্মীয় স্বাধীনতা খর্ব করে তা চাপিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের আছে কিনা? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর আমাদের মতো মুসলিম প্রধান দেশে সহজ হলেও ভারতের মতো দেশে (যেখানে বর্তমানে উগ্রবাদী আরএসএসের ধ্যান-ধারণা দিয়ে রাষ্ট্রব্যবস্থাও চলছে আর বিচারব্যবস্থা পলিটিক্যালি ওভার কন্ট্রোলড) সেখানে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর অতটা সহজ নয়। চার. এই প্রশ্নগুলোর আনবায়াসড উত্তর সুপ্রিম কোর্টের কাছ থেকে আসা জরুরি। একটা কেসের উদাহরণ দিয়ে দেবদত্ত কামাথ বলেন- 'ড়হব্থং ঢ়বৎংড়হধষ ড়ঢ়রহরড়হং, রহ :যরং পধংব, ধৎব রৎৎবষবাধহঃ, ধং রঃ রং :যব নবষরবভ ড়ভ ধ পড়সসঁহরঃু যিরপয রং ৎবষবাধহঃ ধহফ ড়হব পধহহড়ঃ ংরঃ রহ লঁফমবসবহঃ :যৎড়ঁময ধ ংবপঁষধৎ ষবহং. (জধঃরষধষ চধহধপযধহফ এধহফযর া. ঝঃধঃব ঙভ ইড়সনধু.' মূল কথা হলো- এই কেসে কোনো একজনের ব্যক্তিগত মতামত এখানে প্রাসঙ্গিক নয়; প্রাসঙ্গিক হলো পুরো কমিউনিটির বিশ্বাস। এমনকি সেকু্যলার চশমা চোখ লাগিয়ে এই মামলার জাজমেন্ট কেউ করতে পারবে না। অর্থাৎ সেকু্যলার চোখ দিয়ে ধর্মীয় বিধানকে দেখা যাবে না। কিন্তু সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, বাবরি মসজিদ রায়সহ আরও কিছু রায়ের দিকে তাকালে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের আরএসএস/বিজেপি ধ্যান-ধারণার প্রতি অগাধ বায়াসডনেস চোখে পড়ে। আরএসএস প্রভাবের বাইরে গিয়ে সুপ্রিম কোর্টের অবস্থান নেওয়ার সুযোগ কম। রাজীব মন্ডল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের শিক্ষার্থী।