জেনে নিন

আদালত অবমাননা

প্রকাশ | ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
আদালতের আদেশ, নিদের্শ এবং আদালতের মযার্দা সম্পকের্ অবমাননা করাকে ‘আদালত অবমাননা’ বলা হয়। আদালত বা বিচারককে কটূূক্তি বা মযার্দাহানিকর উক্তি বা লিখিত বক্তব্য উত্থাপন করার মধ্য দিয়েই আদালতের অবমাননা করা হয়। আদালত চলাকালে বা আদালতের বাইরেও আদালত অবমাননার অপরাধ হতে পারে। ‘আদালত অবমাননা’ বলতে দেওয়ানি অবমাননা এবং ফৌজদারি অবমাননা উভয়টিকেই বোঝাতে হতে পারে। ফৌজদারি কাযির্বধির ৪৮০ নং ধারা অনুসারে  কোনো দেওয়ানি, ফৌজদারি ও রাজস্ব আদালতের উপস্থিতিতে দÐবিধির ১৭৫ ধারা অনুসারে আইনে দলিল দাখিল করতে বাধ্য এমন কোনো ব্যক্তি দলিল দাখিলে অবহেলা করে, ১৭৮ অনুসারে আইনত শপথ নিতে বাধ্য কিন্তু শপথ গ্রহণ না করলে, ১৭৯ অনুসারে আইনত উত্তর দিতে বাধ্য এমন কোনো ব্যক্তি যদি উত্তর না দিয়ে সত্য গোপন করে, ১৮০ অনুসারে আইনত প্রযোজ্য অথচ কোনো ব্যক্তি যদি বিবরণ দিয়ে তা স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করে, ২২৮ অনুসারে বিচারিক কাজে নিয়োজিত থাকাকালে কেউ যদি ইচ্ছে করে আদালত অবমাননা করে বা কাজে বিঘœ সৃষ্টি করে, আদালত তখন সঙ্গে সঙ্গেই অপরাধীকে আটক করতে পারবেন এবং সেই অধিবেশনেই অপরাধ আমলে নিতে পারবেন এবং অপরাধীকে ২০০ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক মাসের জেল দিতে পারবেন। ফৌজদারি কাযির্বধির ৪৮০ ধারায় অবমাননাকারী এজলাস-কক্ষে উপস্থিত থাকলে আদালত এজলাস কক্ষ ত্যাগ না করে এক অধিবেশনেই উক্ত অপরাধ আমলে নেবেন এবং বিচার সমাপ্ত করবেন। সাধারণত অপরাধীকে কারণ দশিের্য় ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় দিয়ে কারণ দশাের্নার উত্তর দিতে বলা হবে। কারণ দশাের্না সন্তোষজনক না হলে অপরাধকারীর অপরাধের প্রকৃতি বণর্না করে শাস্তি উল্লেখ করবেন। এ ধরনের বিচারের ক্ষেত্রে সাক্ষ্য গ্রহণের বিধান নেই। তবে আদালত ‘বিচার বিভাগীয় সুবিবেচনা’ বা ‘জুডিশিয়াল ডিসক্রেশনারি’ প্রয়োগ করবেন। ফৌজদারি কাযির্বধির ৪৮০ নং ধারা ছাড়া আদালত অবমাননার বিচার ১৯২৬ সালের ‘আদালত অবমাননা আইন’ অনুসারেও হয়ে থাকে। এ আইনানুসারে অবমাননাকারীর শাস্তি দেয়ার এখতিয়ার হাইকোটর্ বিভাগের। যে আদালতকে অবমাননা করা হয় সে আদালত অবমাননাকারীকে অবমাননার প্রকৃতি উল্লেখ করে কারণ দশাের্ত বলবেন। আদালতের নিকট কারণ দশাের্না সন্তোষজনক না হলে মোকদ্দমা আকারে হাইকোটর্ বিভাগে প্রেরণ করবেন। ৩৮ ডিএলআর-এ উল্লিখিত ‘রাষ্ট্র বনাম আব্দুল করিম’ মামলায় অবমাননাকারী আব্দুল করিম মুনসেফÑ ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চলাকালে বিচারের পদ্ধতি সম্পকের্ বিচারককে কটূক্তি করায় এবং বেঞ্চ সহকারীকে কাজ করতে নিষেধ করায় মাননীয় আদালত অবমাননাকারীকে দোষী সাব্যস্ত করেন। ৩৭ ডিএলআর-এ বণির্ত ‘রাষ্ট্র বনাম আব্দুর রউফ’ মোকদ্দমায় আদালত অবমাননাকারী আব্দুর রউফ এসডিও থাকাকালীন সাবজজের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মানা সম্ভব নয় বলে চিঠি দেয়ায় আদালত অবমাননার দোষে দোষী হন।