বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কক্সবাজারে বন খেকোদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিচারকের স্বপ্রণোদিত মামলা

আইন ও বিচার ডেস্ক
  ০৯ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

কক্সবাজারের বনভূমির অবৈধ দখলদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বপ্রণোদিত হয়ে মামলা করেছেন সিনিয়র জুডিশিয়াল অ্যাডজস্ট্রেট আদালত নং-৫ এর বিচারক আসাদ উদ্দিন মো. আসিফ। এ বিষয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ আমলে নিয়ে নিজের আদালতে মামলাটি করেছেন তিনি। যার মিস মামলা নং-০১/২০২২। বনভূমি দখলবাজিতে জড়িত ব্যক্তিদের নাম ঠিকানা, সুনির্দিষ্ট ঘটনা বর্ণনা এবং অপরাধ বিষয়ে পরিপূর্ণ প্রতিবেদন আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগীয় কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করেছেন বিচারক।

আদেশের কপি চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন সংরক্ষক ও দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তার বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে। গত ২০ জুলাই স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক দৈনন্দিনের প্রতিবেদন 'দক্ষিণ বন বিভাগের সুনাম ক্ষুণ্ন করছে উখিয়া রেঞ্জ। বনভূমি ধ্বংস করে চলছে স্থাপনা নির্মাণ। টাকায় ম্যানেজ বন বিভাগ, নেই অভিযান' আদালতের নজরে আসে। এরপর স্বপ্রণোদিত মামলাটি করেন বিচারক।

মামলার আদেশে বলা হয়েছে, 'বনভূমি জীব বৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক সম্পদের আধার। একটি এলাকায় বনভূমি কমে গেলে সেখানে মরুকরণ, ভূমিধস ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় বেড়ে যায়। দেশের মোট ভূখন্ডের ২৫ শতাংশ বনভূমি থাকতে হয়। দেশের মোট বনভূমির একটি উলেস্নখযোগ্য স্থান হলো কক্সবাজার।

কক্সবাজারে প্রতিদিন বনভূমির জায়গা দখল করে বন উজাড় হচ্ছে। বন আইন অনুযায়ী সংরক্ষিত এবং রক্ষিত বনে কোনোরূপ অনধিকার প্রবেশ করে বনের কোনো ক্ষতি করা যাবে না। এর মধ্যে প্রতি বছরই বন উজাড় হচ্ছে। বনের জমিতে স্থাপনা গড়ে তোলা সম্পূর্ণ বেআইনি। বন রক্ষায় সবার আগে সরকার তথা বন বিভাগকে এগিয়ে আসতে হবে।

কক্সবাজার জেলার দক্ষিণ বন বিভাগের উখিয়া রেঞ্জের আওতাধীন সদর ও ওয়ালা বিট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সংরক্ষিত এলাকা। এমন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তি/গণ/গোষ্ঠী বনভূমি এবং গাছগাছালি ধ্বংস এবং উজাড় করে ওই এলাকাকে সংকটাপন্ন এলাকায় পরিণত করছে- যা কক্সবাজার তথা সমগ্র বাংলাদেশের জন্য হুমকিস্বরূপ। এমতাবস্থায়, পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের উখিয়া রেঞ্জের আওতাধীন সদর ও ওয়ালা বিটসহ একই রেঞ্জের অন্যান্য বিট বন বিভাগের জায়গা দখল করে অবৈধভাবে চাষাবাদ, পাকা ভবন নির্মাণ, বাড়ি নির্মাণ করে ভাড়া প্রদান, পিএফ জমির বাগান উজাড় করে বহুতল ভবন নির্মাণ, বনভূমির জায়গা দখলপূর্বক তা বিক্রয় করে উলিস্নখিত অপরাধ সংঘটনকারী ব্যক্তি/গণ/গোষ্ঠী বন বিভাগের নির্দিষ্ট কোনো জায়গায় কিরূপ অপরাধ করেছে/করছে এবং এরূপ অপরাধ সংঘটনে বন বিভাগের কোনো কর্মকর্তা/কর্মচারী জড়িত রয়েছে কিনা তদন্ত করা একান্ত আবশ্যক।

ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮-এর ১৯০ (১)(গ) মতে, অত্রাদালত ওই ঘটনা স্বপ্রণোদিত হয়ে আমলে নেওয়ার এখতিয়ার রাখেন।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে