থাইল্যান্ড

গবেষণা ও ঔষধি কাজে থাইল্যান্ডে বৈধতা পেল গঁাজা

প্রকাশ | ০১ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
গঁাজা ব্যবহার করার অনুমোদন পেল থাইল্যান্ডবাসী। দেশটির পালাের্মন্ট এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে জনগণকে গঁাজা ব্যবহারের অনুমতি প্রদান করেছে। তবে কেবল গবেষণা ও ঔষধ বানানোর ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য হবে। ডিসেম্বরের শেষ দিকে দেশটি পালাের্মন্ট সবর্সম্মতিক্রমে ১৯৭৯ সালের মাদক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের মাধ্যমে এ বিষয়ে অনুমতি প্রদান করে। জাতীয় আইন পরিষদের পক্ষ থেকে এটি থাইল্যান্ড সরকার ও তার জনগণের জন্য নববষের্র উপহার বলে মন্তব্য করেন দেশটির মাদক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণেতা কমিটির প্রধান সোমচাই সাওংকণর্। তিনি বলেন ‘মাদক বিষয়ক সংশোধিত এ আইন বিভিন্ন ধরনের ঔষধ উৎপাদনের ক্ষেত্রে কাযর্কর ভ‚মিকা রাখবে।’ দক্ষিণপূবর্ এশিয়ার দেশ থাইল্যান্ডে ১৯৩০ সাল পযর্ন্ত শারীরিক ব্যথা ও ক্লান্তি দূর করার জন্য গঁাজা সেবন করা ছিল একটি প্রচলিত রীতি। পরে ১৯৩৫ সালে গঁাজা সেবন, পরিবহন কিংবা বাজারজাতকরণ বিষয়ে আইনি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। ওই সময়ে প্রণীত আইন অনুযায়ী, গঁাজা উৎপাদন বা পরিবহন দÐনীয় অপরাধ বলে গণ্য করা হতো এবং দায়ী ব্যক্তিকে সবোর্চ্চ ১৫ বছরের কারাভোগ কিংবা ৪০ হাজার ৫০০ ইউরো পযর্ন্ত জরিমানা গুণতে হতো। তবে নতুন এ আইন প্রবতের্নর ফলে দেশটিতে গঁাজা উৎপাদন বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে নতুন জটিলতা দেখা দিতে পারে। গঁাজা ব্যবহারের এ অনুমতির ফলে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো পেটেন্ট অধিকার নিয়ে দেশটির বাজারে প্রবেশ করবে। এর ফলে গঁাজা দিয়ে উৎপাদিত ঔষধের দাম সাধারণ রোগীদের নাগালের বাইরে চলে যেতে পারে কিংবা গঁাজার দাম গবেষকদের নাগালে নাও থাকতে পারে। দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী প্রজিন জুন্টং সাংবাদিকদের জানান আগামী বছর আইনটি বাস্তবায়নের পর গঁাজা উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করবে সরকার। যেসব দেশে গঁাজা বৈধ : গঁাজা সেবন অনেক দেশেই আইনতভাবে অপরাধ নয়। এমনই একটি দেশ ল্যাটিন অ্যামেরিকার আজেির্ন্টনা। সেখানে চিকিৎসার জন্য গঁাজা আগে থেকেই বৈধ হলেও ব্যক্তিগত পছন্দে সেবনের জন্য গঁাজাকে ২০০৯ সাল থেকে বৈধতা দেয়া হয়েছে। চিকিৎসার উদ্দেশ্যে গঁাজার সেবন ও চাষ অস্ট্রেলিয়ায় বৈধ। সেই দেশের আদিবাসীদের মধ্যে গঁাজা সেবনের মাত্রা শহরাঞ্চলে কিছুটা কম বলে জানা যায়। প্রাপ্তবয়স্করা সেবনের জন্য তিন গ্রাম ওজন পযর্ন্ত গঁাজা সঙ্গে রাখতে পারবেন ইউরোপের দেশ বেলজিয়ামে। ২০০৩ সাল থেকে কাযর্কর এই আইনে মাথাপিছু একটি গঁাজা গাছ লাগানোকেও বৈধতা দেয়া হয়েছে। মাথাপিছু ৫০ গ্রাম গঁাজা কেনা বলিভিয়ায় বৈধ। সারা বিশ্বে আলোড়ন তুলে সব রকমের গঁাজা সেবন ও চাষের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে কানাডা সরকার। ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে নতুন আইন এনে গঁাজা সাবির্কভাবে বৈধ ঘোষণা করা হয়। ল্যাটিন অ্যামেরিকার আরেক দেশ চিলিতেও ২০০৫ সাল থেকে বৈধ হয়েছে গঁাজা বা মারিজুয়ানার সেবন ও বিক্রি। ১৯৭৬ সাল থেকেই ইউরোপের নেদারল্যান্ডসে গঁাজা বৈধ। সেই দেশের বিখ্যাত ‘কফিশপ’-গুলিতে গঁাজা বিক্রি ও সেবন বৈধ হলেও পঁাচ গ্রামের বেশি গঁাজা রাখতে পারবেন না কেউ। আফ্রিকার প্রথম দেশ হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা ২০১৮ সালে গঁাজা সেবন ও গঁাজা চাষকে বৈধতা দেয়। প্রসঙ্গত, এই দেশের ডাক্তাররা চিকিৎসার প্রয়োজনে গঁাজা সেবনের পরামশর্ দিতে পারেন ঠিকই, কিন্তু কোনো বিশেষ দোকান বা হাসপাতালে তা বিক্রির পরিষেবা এই মুহূতের্ নেই। ২০১৩ সাল থেকে উরুগুয়েতে সম্পূণর্রূপে বৈধ হয়েছে গঁাজা সেবন ও বিক্রি। শুধু তাই নয়, নিষেধাজ্ঞা উঠেছে গঁাজা চাষের ওপর থেকেও। অঞ্চল অনুসারে ভিন্ন আইন থাকায় গঁাজা বা অন্যান্য মাদকবিষয়ক আইনও মাকির্ন যুক্তরাষ্ট্রে ভিন্ন। কিছু রাজ্যে ব্যক্তিগত সেবন বৈধ হলেও দেখা যায়, সেখানে গঁাজার চাষে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু ডাক্তারি পরামশের্ গঁাজা সেবন মাকির্ন যুক্তরাষ্ট্রের অনেক অংশেই বৈধ বলে জানা যায়। ডয়েচে ভেলে অবলম্বনে