ফাঁসির বদলে 'যন্ত্রণাহীন মৃতু্যদন্ড' কার্যকরের পদ্ধতি খুঁজতে কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দিলেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট

প্রকাশ | ২৮ মার্চ ২০২৩, ০০:০০

আইন ও বিচার ডেস্ক
ফাঁসির পরিবর্তে মৃতু্যদন্ড কার্যকর করার 'কম যন্ত্রণাদায়ক এবং মর্যাদাপূর্ণ' পদ্ধতি খোঁজার জন্য কেন্দ্রকে নির্দেশ দিয়েছেন ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি পিএস নরসিংহের বেঞ্চ মৃতু্যদন্ড কার্যকরের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনেরও পরামর্শ দিয়েছেন কেন্দ্রকে। এই মামলার শুনানিতে কেন্দ্রের তরফে হাজির ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরমানি। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ তাকে বলে, 'কাউকে ফাঁসিতে ঝোলানো হলে মৃতু্য পর্যন্ত তাকে যে অপরিসীম যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। প্রয়োজন ফাঁসির বিকল্প খোঁজা।' ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃতু্যদন্ড কার্যকর করার পদ্ধতি মর্যাদাপূর্ণ নয় বলেও জানিয়েছেন ভারতীয় শীর্ষ আদালত। মৃতু্যদন্ডের বিকল্প পথ খোঁজার জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটিতে দিলিস্ন, বেঙ্গালুরু বা হায়দ্রাবাদের মতো অন্তত দু'টি জাতীয় আইন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ, দিলিস্নর অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস (এমস)-এর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, বৈজ্ঞানিক, মনোবিদ এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিদের রাখার সুপারিশও করেছেন প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। শুনানি পর্বে অ্যাটর্নি জেনারেলকে শীর্ষ আদালত আজকের বিজ্ঞানে কম যন্ত্রণাদায়ক এবং মর্যাদাপূর্ণ মৃতু্যর উন্নত পদ্ধতি রয়েছে কিনা, তা খুঁজে বের করতে নির্দেশ দেন। প্রসঙ্গত, অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃতু্যদন্ড বহাল থাকা উচিত কিনা তা নিয়ে শুধু ভারতে নয়, গোটা বিশ্ব জুড়েই বিতর্ক উঠেছে বারবার। ভারতেও এর আগে বহুবার মৃতু্যদন্ড তুলে দেওয়ার দাবি উঠেছে। কিন্তু সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে শেষ পর্যন্ত মৃতু্যদন্ডই বহাল থেকেছে দেশে। কিন্তু মৃতু্যদন্ড হিসেবে ফাঁসি কতটা যথাযথ, তা নিয়ে ২০১৭ সালের আগস্টে প্রথম প্রশ্ন তুলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের বেঞ্চ একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে বলেছিল, যে কারওরই মৃতু্য যন্ত্রণাহীন ও মর্যাদাপূর্ণ হওয়া উচিত। সরকারের উচিত আধুনিক বিজ্ঞানের সাহায্য নিয়ে মৃতু্যর অন্য কোনো যন্ত্রণাহীন পন্থা খুঁজে বের করা। প্রায় ছ'বছর পর সুপ্রিম কোর্ট এবার কেন্দ্রীয় সরকারকে ফাঁসির পরিবর্তে অন্য কোনো বিকল্প পন্থা খোঁজার নির্দেশ দিলেন।