ভারতে কী পরকীয়া সংক্রান্ত আইন পাল্টে যাচ্ছে?

প্রকাশ | ৩১ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০

আইন ও বিচার ডেস্ক
ভারতে ব্যভিচার সংক্রান্ত আইনটি ১৫৭ বছরের পুরনো। ভারতীয় দন্ডবিধি আইপিসি'র ধারা ৪৯৭ বলছে যে, কোনো ব্যক্তি বিবাহিত কোনো মহিলার সঙ্গে স্বেচ্ছায় যৌন সম্পর্ক করলে তা ধর্ষণ নয়, ব্যভিচার হিসেবে গ্রাহ্য হবে। সেক্ষেত্রে এই পরকীয়া প্রমাণিত হলে এবং অভিযোগ দায়ের হলে শাস্তি শুধু পুরুষেরই হবে। যে মহিলার সঙ্গে তিনি সম্পর্কে জড়িয়েছেন তার কোনো শাস্তি হবে না। পাঁচ বছর পর্যন্ত জেল ও জরিমানা হতে পারে। অবশ্য এই সম্পর্কে সেই বিবাহিত মহিলার স্বামীর মতো থাকলে বিষয়টি আর ব্যভিচারের অপরাধ হিসেবে গ্রাহ্য হবে না। এতদিন অবধি দেখা গিয়েছিল পরকীয়ার ঘটনায় স্বেচ্ছায় নারী ও পুরুষ দু'জনেই জড়িত থাকলেও ৪৯৭ ধারায় মহিলাকে নির্যাতিতা হিসেবেই দেখানো হতো আর পুরুষের জন্য শাস্তির বিধান দেওয়া হতো। কিন্তু ভারতের সংসদীয় কমিটি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আর্জি জানাতে চলেছে- যাতে পরকীয়া বা ব্যভিচারকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। সংসদীয় কমিটির মতে, ব্যভিচার আইনে এতদিন পর্যন্ত শুধু পুরুষদেরই অপরাধী এবং শাস্তিযোগ্য বলে মনে করা হতো। এই আইনেও বদল এনে লিঙ্গবৈষম্য ঘোচানোর আর্জি জানিয়েছে সংসদের প্যানেল। ভারতে প্রচলিত ব্রিটিশ জমানার আইনের জায়গায় নয়া বিল আনতে চাইছে সংসদীয় প্যানেল। সংসদীয় কমিটি প্রস্তাব দিয়েছে, নয়া বিলে যেন পরকীয়া, সম্মতিহীন সমকামী যৌনতাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করার বিধান রাখা হয়। প্যানেলের তরফে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট চূড়ান্ত করা হলে তা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠানো হবে। কমিটির মতে, অপরাধ হলে বিবাহিতা মহিলাও তাতে সমান অংশীদার, ফলে শাস্তির প্রশ্নে তার ভূমিকাও খতিয়ে দেখতে হবে। ভারতীয় দন্ডবিধির যে ৩৭৭ ধারাকে অসাংবিধানিক বলা হয়েছিল তাও ফিরিয়ে আনার সুপারিশ করা হয়েছে। তবে কমিটির দাবি, সম্মতিহীন সমকামিতাকে অপরাধ হিসেবেই দেখা হোক। কোনো নারীর অসম্মতিতে যদি কোনো পুরুষ তাকে যৌন হেনস্তা করে বা কোনো নারীর অম্মতিতে কোনো পুরুষ জোর করে যৌন সম্পর্ক তৈরি করতে চায়, তাহলে তাকে অপরাধ হিসেবেই গণ্য করা উচিত। কোনো রূপান্তরকামী ব্যক্তির ইচ্ছের বিরুদ্ধে কেউ তার ওপর যৌন হেনস্তা করলে তাও এই বিধানে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা উচিত বলে মনে করেছে কমিটি। এর আগে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ রায় দিয়েছিলেন যে, পরকীয়া অপরাধ নয়। পরকীয়া করার জন্য কারও জেল হতে পারে না। পরকীয়া ডিভোর্সের গ্রাউন্ড হতে পারে কিন্তু ফৌজদারি অপরাধ নয়। অর্থাৎ, পরকীয়ার অভিযোগ এনে স্বামী বা স্ত্রী ডিভোর্স চেয়ে দেওয়ানি বিধিতে আইনত মামলা করতে পারেন।