সিম কার্ডের ওপর কর প্রত্যাহারের দাবি

প্রকাশ | ২৩ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
আসছে বাজেটে মোবাইলফোনের সিম ও রিমের ওপর আরোপিত সম্পূরক শুল্ক ও মূল্যসংযোজন কর প্রত্যাহারসহ ৭ দফা দাবি জানিয়েছে মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল অপারেটরস বাংলাদেশ (এমটব)। বর্তমানে সিম ও রিম সরবরাহ করতে ৩৬ দশমিক ৬৫ টাকা মূল্যসংযোজন কর এবং ৬৩ দশমিক ৩৫ টাকা সম্পূরক শুল্ক দিতে হয়। রোববার (২১ এপ্রিল) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কনফারেন্স কক্ষে প্রাক-বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে এমটবের প্রতিনিধি ও রবি আজিয়াটা লিমিটেডের সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদ প্রস্তাবনাগুলো তুলে ধরেন। এনবিআরের চেয়ারম্যানের মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে এ সময় বাংলাদেশ সিগারেট ম্যানুফ্যাকচার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ বেভারেজ ম্যানুফ্যাকচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব উইমেন এন্টারপ্রিনিয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা এতে অংশগ্রহণ করেন। সংগঠনের প্রস্তাবনাগুলো হচ্ছে- ট্যাক্স আপিলের জন্য অমীমাংসিত করের হার কমানো, ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর সরকারের লেভি অর্থাৎ ভ্যাট এসডি এবং সারচার্জ অব্যাহতি, সকল অস্পর্শনীয় সম্পদের ওপর অবলোপন সুবিধা এবং সর্বনিম্ন কর প্রত্যাহার দাবি জানানো হয়। প্রস্তাবনার প্রেক্ষিতে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, 'বেশকিছু প্রতিষ্ঠান মামলা মোকাদ্দমা করে কর দিতে দেরি করে। এক্ষেত্রে ২ থেকে ৩ বছরও লেগে যায়। সরকার যেন তার রেভিনিউ পায় এজন্য এটি করা হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে সব প্রতিষ্ঠানকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, মামলা মোকাদ্দমা না করে সরাসরি আসুন বসুন, আমরা সমাধানে চেষ্টা করব।' তিনি বলেন, 'আমরা সবার প্রস্তাবগুলো গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি। আলাপ আলোচনার মাধ্যমে আগামী বাজেটে সেগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হবে।' এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, 'রেভিনিউ আদায় এনবিআর এর কাছে মুখ্য নয়। আমরা চাই দেশে ইনভেস্টমেন্ট আসুক। শুধু গার্মেন্ট নয়, অন্য কোম্পানিগুলো এক্সপোর্ট করুক। এক্ষেত্রে প্রচলিত ও অপ্রচলিত সব পণ্যই এক্সপোর্ট হোক।' বাংলাদেশ বেভারেজ ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. হারুনুর রশিদ স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত সব কোমলপানীয়র ওপর থেকে সম্পূরক শুল্ক হার কমানোর দাবি জানান। তিনি বলেন, 'প্রতিবেশী দেশগুলোতে কোমল পানীয়ের স্থানীয়কর হার অনেক কম। ভারতে ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ, শ্রীলঙ্কায় ২৯ দশমিক ২ শতাংশ, নেপালে ২৪ দশমিক ২ শতাংশ, ভুটানে ৩০ শতাংশ, আর বাংলাদেশে তা ৪৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। অর্থাৎ বাংলাদেশে এটি সর্বোচ্চ। ফলে বিনিয়োগকারীরা এখানে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন বলেই আমি মনে করি।' তাদের দাবির প্রেক্ষিতে এনবিআরের চেয়ারম্যান বলেন, 'আপনারা এনার্জি ড্রিংকস তৈরির জন্য বিএসটিআইয়ে আবেদন করুন। আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে সঙ্গে কথা বলে তার ব্যবস্থা করব।' একই বৈঠকে সিগারেট কোম্পানিগুলোকে দেশে ব্যবসা কমিয়ে বিদেশে রপ্তানির পরামর্শ দিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, 'সরকারের পরিকল্পনা হচ্ছে ২০৪১ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত দেশ গড়া। আমরা সেই আলোকে বাজেট তৈরি করেছি। আর তাই গত বাজেটে কর বাড়িয়েছি। আগামী বাজেটেও সিগারেটের ব্যবহারের পরিমাণ কমানোর বিষয় বিবেচনায় রেখে এবারের বাজেটে দাম নির্ধারণ করা হবে।' সংগঠনের প্রতিনিধি জাকির ইবনে হাই বলেন, 'কর ফাঁকি দিয়ে বাজারে সস্তা সিগারেটে সয়লাব। এখন রাইস মিলের ভেতরে সিগারেট বানাচ্ছে। রাজস্ব আদায়ের অন্যতম প্রধান সেক্টর যদি এই অবস্থা হয়। তাহলে কোথায় যাবো? খাত টিকে না থাকলে সরকারই রাজস্ব বঞ্চিত হবে। তিনি বলেন, 'গত বছর আমাদের ওপর নতুন করে করারোপ করেছে। ব্যবসা টিকিয়ে রাখা চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। আমাদের দাবি এক তরফা সিগারেটের দাম বাড়াবেন না। পলিসিতে বৈষম্য করবেন না। অন্যান্য সেক্টরের মতোই সমান সুযোগ দেবেন। কারণ আমরাই সরকারকে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব দিয়ে থাকি।' এছাড়া নতুন ভ্যাট আইনেও তারা ১৫ শতাংশ ভ্যাট রাখার পক্ষে প্রস্তাব দিয়েছে। তার প্রেক্ষিতে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, 'আমরা এমন কর ব্যবস্থা ধরে দিতে চাই। যাতে দেশের ভেতরে সিগারেট ধূমপায়ীদের সংখ্যা কমে আসে। এক্ষেত্রে আমরা রপ্তানিতে উৎসাহ দিতে চাই। গত বাজেটেও রপ্তানিতে শূন্য শতাংশ কর দিয়েছি।'