বিচিত্র

একটি মানবিক বিচারের গল্প

প্রকাশ | ২৪ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

আইন ও বিচার ডেস্ক
কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহ. মাসুদুজ্জামান সম্প্রতি ফেসবুকে একটি মামলার মানবিক সমাধানে তার অভিজ্ঞতার উল্লেখ করেছেন। তিনি লিখেছেন : একটি মামলার চাজর্ শুনানিকালে দেখা গেল এক মা বাদী হয়ে তার ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করেছে তার বৃদ্ধ স্বামীকে কোদাল ও লোহার রড দিয়ে গুরুতর আহত করার জন্য। শুনানি থামিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট আদেশ করলেন পরবতীর্ তারিখে ওই বৃদ্ধ বাবা ও মাকে হাজির করার জন্য। পরের তারিখে ওই মা (বাদী), বাবা (সাক্ষী) ও ছেলে (আসামি) আদালতে হাজির হলে দেখা গেল বৃদ্ধ পঙ্গু বাবা স্ক্রাচে ভর দিয়ে দঁাড়িয়ে, সহজ-সরল বৃদ্ধা মা অসহায়ের মতো সাক্ষীর কাঠগড়ায় দঁাড়িয়ে, মধ্যবয়সী যুবক ছেলে আসামির কাঠগড়ায় দঁাড়িয়ে। পুলিশের রিপোটের্ অভিযোগ গুরুতর! শুনানি শুরু হলে ম্যাজিস্ট্রেট মা-বাবাকে ঘটনা কী অথার্ৎ মা হয়ে ছেলের বিরুদ্ধে এত বড় অভিযোগ কেন ও বিচারপ্রত্যাশী কিনা জিজ্ঞাসা করতেই বাবা-মা বলে উঠলেন তারা তাদের একমাত্র ছেলের বিচার চান না। কারণ ছেলে তখন নেশাগ্রস্ত ছিল, ছেলেকে ক্ষমা করে দিয়েছেন, তাই মামলা চালাবেন না! কোটর্ ভরা নীরবতা! রাষ্ট্রপক্ষের কেঁৗসুলি সাহেব আদালতকে জানালেন, ছেলে বাবার পা জাপ্টে ধরে এবং পরে মায়ের পা ধরে ক্ষমা চেয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেট ছেলেকে উদ্দেশ্য করে আবেগভরা কণ্ঠে বললেনÑ এরই নাম বাবা মায়ের সন্তানের প্রতি নিঃস্বাথর্ ভালোবাসা ও ক্ষমা, তোমার বাবা-মা ক্ষমা না করলে আগামী ৫ বছর কোটের্র বারান্দায় ঘুরতে হতো এবং বিচারে সাজা হয়ে যেত। চেহারা দেখে বিচারক বুঝলেনÑ ছেলে অনুতপ্ত ও লজ্জিত। তারপর একটি মানবিক বিচারিক সমাধান। কিছু ক্ষমা শাস্তি প্রদানের চেয়েবড় শাসন ও মহৎ শিক্ষা!