কা জা খ স্থা ন

ফরমান জারি করে বর্ণমালা পরিবর্তন

প্রকাশ | ০৯ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

আইন ও বিচার ডেস্ক
আধুনিক পৃথিবীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মেলাতে নিজেদের বর্ণমালা পালটে ফেলছে কাজাখস্থান। সোভিয়েত ছায়াতল ছেড়ে আসা দেশটি 'সিরিলিক' ভুলে 'লাতিন' বর্ণমালা তৈরি করেছে। সাত বছরের চেষ্টায় ৩২টি বর্ণ নিয়ে তৈরি হয়েছে এই বর্ণমালা। লাতিনের হরফের পাশাপাশি নয়টি বর্ণ আছে, যা সম্পূর্ণ আলাদা। এগুলো কাজাখদের উচ্চারণের সঙ্গে মিলিয়ে রাখা হয়েছে বর্ণমালায়। চেষ্টাটা সাত বছরের হলেও, বর্ণমালা রূপান্তরে রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ২০১৭ সালে। ফরমান জারি করে সিরিলিক থেকে লাতিন বর্ণমালায় যাওয়ার কথা জানান তৎকালিন প্রেসিডেন্ট নুর সুলতান নজরবায়েভ। স্কুলের পাঠ্যবই, সাহিত্য, সরকারি নথি, সড়ক নির্দেশক- ২০২৫ সালের মধ্যে, দেশের সবকিছু লেখা হবে নতুন হরফে। কাজাখস্থানের 'আধ্যাত্মিক আধুনিকায়নে' এই পরিবর্তনটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন দেশটির নতুন শাসক প্রেসিডেন্ট কাসিম-জমার্ট তোয়াকেভ। এর মধ্যে গত এপ্রিলে নতুন বর্ণমালা খচিত কয়েন ছেড়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২০২১ সালের মধ্যে, এটিকে দেশটির অফিসিয়াল বর্ণমালা ঘোষণা দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। শুরু হয়েছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। শহুরে জীবনের এই পরিবর্তন খুব একটা প্রভাব না ফেললেও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য জটিলতা হতে পারে- এ আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। শিক্ষকদেরও নতুন বর্ণমালা নিয়ে ধাপে ধাপে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। আগামী বছর থেকে শ্রেণিকক্ষে পুরোদমে এই বর্ণমালায় ক্লাস নিতে হবে বলেও সরকারের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। কাজাখস্তানের এই পরিবর্তনকে 'রাশিয়া বলয়' থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা হিসেবেও দেখছেন অনেকে। যদিও কাজাখ কর্তৃপক্ষ মনে করে, মধ্য এশিয়ার জন্য রাশিয়া গুরুত্বপূর্ণ মিত্র। কয়েক বছর ধরে দেশটিতে কাজাখ ভাষায় কথা বলা লোকের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। আর তাই দেশটির সরকারও নতুন আইনের মাধ্যমে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শত বছরের ইতিহাসে এ নিয়ে তিনবার বর্ণমালা পরিবর্তন করল দেশটি। সোভিয়েত ইউনিয়নের সেকু্যলার শিক্ষার বলি হয়ে ১৯২৯ সালে আরবি বর্ণমালা ছেড়ে লাতিন বর্ণমালা গ্রহণ করে কাজাখরা। ১৯৪০ সালে এসে আরও এক দফা রূপান্তর। নিজ ভাষায় শিক্ষার অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং সোভিয়েত ইউনিয়নকে একীভূত করার লক্ষ্য পূরণের ধোয়া তুলে লাতিন ছেড়ে কাজাখদের ফিরতে হলো সিরিলিক বর্ণমালায়।