‘প্রেম মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি’

প্রকাশ | ৩১ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

আইন ও বিচার ডেস্ক
ব্যক্তিগত সম্পকের্র কারণে এক কলেজ থেকে দুই শিক্ষাথীর্ বহিষ্কারের সমালোচনা করে এক ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে ভারতের কেরালা রাজ্যের উচ্চ আদালত। পরস্পরের সঙ্গে সম্পকের্ জড়িয়ে পড়া দুই শিক্ষাথীের্ক সেখানকার এক কলেজ থেকে বহিষ্কারের ঘটনা পযাের্লাচনা করে ওই আদালত রায় দিয়েছে, প্রেম সকল কিছুর ঊধ্বের্ এবং এটি মানুষের সহজাত মানবিক প্রবৃত্তি। প্রেমকে একান্তই মানুষের স্বাধীনতার বিষয় আখ্যা দিয়ে রায়ে বলা হয়েছে, ব্যক্তিগত গোপনীয়তার প্রতি শ্রদ্ধা থাকা উচিত। রায়ে সুস্পষ্ট করে বলা হয়েছে, কতৃর্পক্ষ হিসেবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো অধিকার নেই নৈতিক পিতৃত্ববাদের খড়গ শিক্ষাথীের্দর ওপর চাপিয়ে দেয়ার। বিবিএ শিক্ষাথীর্ মালবিকা বাবু (২০) ও একই বিভাগের সিনিয়র বিশাককে (২১) প্রেমের সম্পকের্ জড়িয়ে পড়ায় তাদের বহিষ্কার করেছিল কেরালার সিএইচএমএম কলেজ ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিজ। কেবল কলেজ কতৃর্পক্ষই নয়, দুই শিক্ষাথীর্র অভিভাবকরাও তাদের সম্পকের্র বিরুদ্ধে দঁাড়িয়েছেন। এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতের দ্বারস্থ হন তারা। আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, কলেজ কতৃর্পক্ষ বুঝতে ব্যথর্ হয়েছে সহজাত ব্যক্তিগত সম্পকর্ যে ব্যক্তির গোপনীয়তা এবং এতে হস্তক্ষেপ করার কোনো কতৃর্ত্ব তাদের নেই। আদালতের পযের্বক্ষণে বলা হয়, এই দুই শিক্ষাথীর্র ভালোবাসার সম্পকের্র কারণে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে এমন কোনো প্রমাণ না পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের কোনো পদক্ষেপ নেয়ার সুযোগ নেই। দুজন পালিয়ে বিয়ে করার পর মালবিকার মা পুলিশের কাছে নিখেঁাজের একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। পুলিশ তাদের ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করে। পরে অবশ্য মালবিকার পরিবার পিছু হটে এবং বিশাকের সঙ্গে মেয়ের বিয়েকে সমথর্ন জানায়। আদালতের রায়ে বলা হয়, ভালোবাসার সম্পকর্ ও গোপনে পালিয়ে যাওয়াকে অনৈতিক ও শৃঙ্খলাভঙ্গ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে ব্যবস্থাপনায় নিযুক্ত ব্যক্তিদের নৈতিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে। এটা কারও কারও কাছে অপরাধ আবার কারও কারও কাছে নয়। আইনের ক্ষেত্রে এটা একান্তই ব্যক্তির পছন্দ, যা স্বাধীনতার সারমমর্। রায়ে আদালত জানায়, শিক্ষার উদ্দেশ্য নিশ্চিত করার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কতৃর্পক্ষের শৃঙ্খলাবিধি আরোপের অধিকার রয়েছে। কিন্তু এর মানে এই নয় যে, কতৃর্পক্ষের সঙ্গে এই ধরনের মূল্যবোধ নিয়ে (ভালোবাসা) বিরোধ থাকলেই শিক্ষাথীের্দর ওপর নৈতিক পিতৃত্ববাদীতার খড়গ চাপিয়ে দেয়া যাবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসকে হতে হবে নিরপেক্ষ মূল্যবোধের, যাতে শিক্ষাথীর্রা নিজেদের স্বাধীনতা রক্ষা এবং ব্যক্তিগত পক্ষপাতিত্বের ঊধ্বের্ ওঠার জন্য নৈতিক বিচক্ষণতা অজর্ন করে।