যু ক্ত রা ষ্ট্র

অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসবাদ দমনে গৃহীত পদক্ষেপ কি যথেষ্ট?

প্রকাশ | ২০ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

আইন ও বিচার ডেস্ক
বিবিসি অবলম্বনে
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে এল পাসোতে বন্দুকধারীর গুলিতে ২২ জন নিহত হওয়ার ঘটনাকে 'অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসবাদ' ধরে নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ। এক বিবৃতিতে এফবিআই বলছে, 'এই হামলা অভ্যন্তরীণ চরমপন্থি এবং হেট ক্রাইমের পরিকল্পনাকারীদের থেকে উদ্ভূত চলমান হুমকিকে সামনে নিয়ে এসেছে।' গত মাসে এফবিআই বলেছিল যে, এ ধরনের সহিংসতা বেড়েই চলেছে এবং এর বেশির ভাগই হয়েছে হোয়াইট সুপ্রিমেসি বা শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে। হেট ক্রাইমের বিষয়ে নজরদারী করা সংস্থা অ্যান্টি-ডিফেমেশন লীগ-এডিএল বলছে, ২০১৮ সালে ডানপন্থি চরমপন্থিরা কমপক্ষে ৫০টি হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল। যা ১৯৯৫ সালের পর সবচেয়ে বেশি ডানপন্থি সহিংসতার ঘটনা সংবলিত বছর করেছে ২০১৮ সালকে। এডিএলের গবেষকরা বলছেন, চরমপন্থিদের হাতে ঘটে যাওয়া হত্যাকান্ডের মধ্যে তিন-চতুর্থাংশই করেছে শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী গ্রম্নপের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। এল পাসো শহরে হামলার অনেক আগে থেকেই ডানপন্থি গ্রম্নপের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা তাদের অনলাইন যোগাযোগ কিংবা আদর্শগত ঐকমত্যের মাধ্যমে যেসব সহিংসতার ঘটনা ঘটিয়ে থাকে তা দেশে এবং আন্তর্জাতিকভাবে বড় বড় শিরোনামে প্রকাশিত হয়। গত এপ্রিলে ক্যালিফোর্নিয়ার পোওয়ের একটি সিনাগগে এক নারীকে হত্যা করা হয়। এর আগে গত বছর পিটসবার্গে আরেক সিনাগগে হামলায় নিহত হয় আরও ১১ জন। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই হত্যাকারীদের মধ্যে একটি সাধারণ আদর্শগত, সহিংস, গোঁড়া এবং ঘৃণার মতো বিষয়ে একই ধরনের বিশ্বাস রয়েছে। আর এসব হামলার উস্কানি মিলেছে ফোরচ্যান এবং এইটচ্যানের মতো অনলাইন কমিউনিটিতে যোগাযোগের মাধ্যমে যেখানে শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদ এবং অন্যান্য উগ্র বর্ণবাদ নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা করা যায়। মার্কিন কর্তৃপক্ষ কি যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে? এফবিআই বলছে, এ ধরনের গ্রম্নপগুলো থেকে উদ্ভূত হুমকির সঙ্গে পালস্না দিয়ে চলছে তাদের তদন্ত। গত জুলাইয়ে, এফবিআইয়ের পরিচালক ক্রিস্টোফার রে মার্কিন সিনেটের বিচারক কমিটির সদস্যদের বলেন, গত নয় মাসে অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসবাদের ঘটনায় বেশ কিছু মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রে বলেন, এই ঘটনাগুলোকে দুটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। যার একটি হচ্ছে 'স্বদেশী সহিংস উগ্রবাদ' যেটি তিনি এবং এফবিআই এজেন্টরা ব্যবহার করেন বিশেষ ধরনের ব্যক্তিদের বোঝাতে যারা 'বৈশ্বিক জিহাদি' এবং 'অভ্যন্তরীণ চরমপন্থি' গ্রম্নপগুলো দ্বারা প্রভাবিত। আর এদের মধ্যে রয়েছে 'শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদের কোনো ধারণা দ্বারা উদ্বুদ্ধরাও।' 'বৈশ্বিক জিহাদ' এবং 'শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদ' ধারণায় অনুপ্রাণিতসহ প্রত্যেক ক্যাটাগরিতে অন্তত ১০০ জন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে এফবিআই এজেন্টরা, তিনি বলেন। তবে এফবিআইয়ের কাজ সম্পর্কে রে-এর এমন বিশ্লেষণে অনেকেই একমত হতে পারেননি। তারা বলছেন, গত কয়েক মাসে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের এই সংখ্যার বাইরে ডানপন্থি চরমপন্থা দমনে এফবিআই এবং অন্যান্য সরকারি কর্তৃপক্ষ তেমন নজর দেয়নি। এই সমালোচকরা বলছেন, মার্কিন সরকারি কর্তৃপক্ষ শুধু 'জিহাদিদের' ধরতেই অতিরিক্ত মনোযোগ দিয়েছে। আর এই সুযোগে, শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী গ্রম্নপগুলোকে দমনে পিছিয়ে পড়েছে তারা।