জেনে নিন

মহাকাশে সংঘটিত প্রথম অপরাধ বিচার হবে কোন আইনে?

প্রকাশ | ২৭ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

আইন ও বিচার ডেস্ক
মহাকাশচারী অ্যান ম্যাকক্লেইনের বিরুদ্ধে তার স্ত্রী জালিয়াতির অভিযোগ এনেছেন। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে স্ত্রীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ঢোকার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। মহাকাশে ঘটা প্রথম কোনো অপরাধ এটি। মার্কিন মহাকাশ সংস্থা- নাসা এখন ঘটনাটির তদন্ত করছে। নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, অ্যান ম্যাকক্লেইনের সঙ্গে তার স্ত্রীর বিবাহবিচ্ছেদের প্রক্রিয়া চলছিল। এর মধ্যেই স্পেস স্টেশন থেকে এই অপরাধ করেন ম্যাকক্লেইন। ম্যাকক্লেইনের স্ত্রী সামার ওয়ার্ডেন মার্কিন বিমান বাহিনীর একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা। ওয়ার্ডেন জানিয়েছেন, ম্যাকক্লেইন চুরি করে তার খরচের হিসাব দেখছেন বুঝতে পেরে তিনি 'হতভম্ব'। ম্যাকক্লেইনের বিরুদ্ধে পরিচয় চুরি করার অভিযোগ দায়ের করেছেন ওয়ার্ডেন। তবে ম্যাকক্লেইনের দাবি, তিনি ভুল কিছু করেননি। এর আগেও ওয়ার্ডেনের সম্মতিতেই তিনি তাদের আয়-ব্যয়ের যৌথ হিসাবের তথ্য দেখেছেন বলেও দাবি ম্যাকক্লেইনের। ম্যাকক্লেইনের আইনজীবী রাস্টি হার্ডিন জানিয়েছেন, তার মক্কেল বেআইনি কিছু করার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং তদন্তে সব ধরনের সহযোগিতা করছেন। তাকে এরই মধ্যে স্পেস স্টেশন থেকে পৃথিবীতে ফিরিয়েও আনা হয়েছে। মহাকাশে কোনো দেশের সীমানা নেই। ফলে সেখানে কোনো অপরাধ হলে, তার বিচার কোন আইনে হবে, সে নিয়ে আগ্রহ রয়েছে অনেকেরই। কিন্তু এমন আশঙ্কা ও চিন্তা ভাবনা অনেক আগে থেকেই মহাকাশ সংস্থাগুলোর মাথায় ছিল। মহাকাশ স্টেশনের মালিকানায় রয়েছে পাঁচটি দেশ- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, কানাডা. জাপান ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। যে দেশের মহাকাশচারী অপরাধে জড়িত হবেন, সে দেশের আইনেই তার বিচার করার বিধান রাখা হয়েছে। মহাকাশে ইউরোপকে একটি দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ফলে ইউরোপের কোনো 'মহাকাশ অপরাধীর' বিচার ইউরোপীয় আইনেই হবে। তবে চাইলে কোনো ইউরোপীয় দেশ তার নিজস্ব আইনেও তার মহাকাশচারীর বিচার করতে পারবে। মহাকাশে অপরাধের জন্য রাখা হয়েছে প্রত্যাবর্তনের ব্যবস্থাও। ফলে যে দেশের অপরাধী, সে দেশ চাইলেই মহাকাশচারীকে নিজের দেশে ফেরত নিয়ে বিচার করতে পারবে। ম্যাকক্লেইনের সঙ্গে পরিচয়ের পর সন্তানের জন্ম দেন ওয়ার্ডেন। ম্যাকক্লেইন ছেলেটিকে দত্তক নিতে চাইলেও ওয়ার্ডেন শুরু থেকেই তাতে বাধা দিয়ে আসছেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শেষ পর্যন্ত বিচ্ছেদ পর্যন্ত গড়িয়েছে। এখন ওয়ার্ডেন বিচ্ছেদের পক্ষে মহাকাশ থেকে করা ম্যাকক্লেইনের অপরাধটিকেও শক্ত যুক্তি হিসেবে দাঁড় করাতে চাইছেন। কিন্তু এটা প্রমাণ করা ওয়ার্ডেনের জন্য বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়াবে। একটা ডিভোর্স মামলার তদন্তের জন্য নাসা তার সর্বোচ্চ নিরাপত্তায় থাকা কম্পিউটার ব্যবস্থা উন্মুক্ত করে দেবে কিনা, সেটাই বড় প্রশ্ন।