জেনে নিন

হলফনামা সম্পাদনের নিয়ম

প্রকাশ | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

আইন ও বিচার ডেস্ক
স্থাবর সম্পত্তিসংক্রান্ত সব ধরনের দলিল রেজিস্ট্রিতে ২০০ (দুই শত) টাকার স্ট্যাম্পে নিম্নলিখিত লেখা সংবলিত হলফনামা প্রিন্ট করে হলফনামার নির্দিষ্ট স্থানে হলফকারীর স্বাক্ষর ও তারিখ প্রদানের পর মূল দলিলের সঙ্গে প্রিন্টেড হলফনামা সংযুক্ত করে রেজিস্ট্রি অফিসে সাব-রেজিস্ট্রারের কাছে দাখিল করতে হয়। হলফকারীর স্বাক্ষরের পর দলিলের শনাক্তকারীর ঘোষণা অন্তর্ভুুক্ত থাকে। এ ক্ষেত্রে শনাক্তকারীকেও হলফনামার নির্দিষ্ট স্থানে স্বাক্ষর করতে হয়। রাষ্ট্রপতির ১৯৭২ সালের ১৪২নং আদেশ, ১৯০৮ সালের রেজিস্ট্রেশন আইনের ৫২ এবং ১৮৮২ সালের সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ৫৩ ধারা অনুসারে প্রদত্ত হলফনামা সম্পাদন করতে হয়। শুরুতে যে কর্মকর্তার সম্মুখে হলফনামা দাখিল হবে তার পদবি ও ঠিকানা, হলফকারী/হলফকারীদের নাম, পরিচিতি ও বয়স লেখার পর ঘোষণা পর্বে আসতে হয়। এরপর উলেস্নখ করতে হয়, এই মর্মে ঘোষণা পূর্বক হলফনামা প্রদান করছি যে, আমি/আমরা বাংলাদেশের (বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অন্য দেশের নাগরিক হলে ওই দেশের নাম) নাগরিক। আমি/আমরা ঘোষণা করছি যে- (ক) হস্তান্তরের জন্য প্রস্তাবিত স্থাবর সম্পত্তি বাংলাদেশ দলিলের (বিশেষ ট্রাইবু্যনাল) আদেশ ১৯৭২ (১৯৭২ সালের পিও নং ৮) অধীন ক্রোকের আওতাধীন নহে; (খ) হস্তান্তরের জন্য প্রস্তাবিত স্থাবর সম্পত্তি বাংলাদেশ পরিত্যক্ত সম্পত্তি (নিয়ন্ত্রণ, ব্যবস্থাপনা ও নিষ্পত্তি) আদেশ ১৯৭২ (১৯৭২ সালের পিও নং ১৬)-এর অর্থানুযায়ী পরিত্যক্ত সম্পত্তি নহে; (গ) হস্তান্তরের জন্য প্রস্তাবিত স্থাবর সম্পত্তি আপাতত বলবত কোনো আইনের অধীন সরকারে বর্তায় নাই, বা সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হয় নাই; (ঘ) প্রস্তাবিত হস্তান্তর আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনের কোনো বিধানের সহিত সাংঘর্ষিক নহে; (ঙ) প্রস্তাবিত হস্তান্তর বাংলাদেশ ল্যান্ড হোল্ডিং (লিমিটেশন) আদেশ-১৯৭২(১৯৭২ সালের পিও নং ৯৮)-এর অনুচ্ছেদ ৫(এ) অনুযায়ী বাতিলযোগ্য নহে; এবং (চ) হস্তান্তরের জন্য প্রস্তাবিত স্থাবর সম্পত্তির বিবরণ সঠিকভাবে বর্ণিত হয়েছে এবং তা অবমূল্যায়ন করা হয় নাই এবং উলিস্নখিত সম্পত্তি হস্তান্তরকরণে আবেদনকারীর বৈধ অধিকার রয়েছে। এরপর ঘোষণা দিয়ে বলতে হয়, আমি/আমরা আরও ঘোষণা করছি যে, আমি/আমরা হস্তান্তরিত সম্পত্তির নিরঙ্কুশ মালিক। অন্য কোনো পক্ষের সহিত বায়না চুক্তি স্বাক্ষর করি নাই বা অন্য কোথাও বিক্রয় করি নাই বা অন্য কোনো পক্ষের নিকট বন্ধক রাখি নাই। এই সম্পত্তি সরকারি, খাস/অর্পিত বা পরিত্যক্ত সম্পত্তি নয় বা অন্য কোনোভাবে সরকারের ওপর বর্তায় নাই। দলিলে বর্ণিত কোনো তথ্য ভুলভাবে লিপিবদ্ধ হইয়া থাকিলে তজ্জন্য আমি/আমরা দায়ী হব এবং আমার/ আমাদের বিরুদ্ধে দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলা করা যাবে। হস্তান্তরিত জমি সম্পর্কে কোনো ভুল, অসত্য বা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান করিয়া থাকলে প্রয়োজনে নিজ খরচায় ভুল শুদ্ধ করিয়া ক্ষতিপূরণসহ নতুন দলিল প্রস্তুত ও রেজিস্ট্রি করে দিতে বাধ্য থাকিব। উলেস্নখ্য দলিলে হস্তান্তরিত সম্পত্তির মূল্য কম দেখানো হয় নাই। দলিলে বর্ণিত সম্পত্তিতে আমার/আমাদের বৈধ স্বত্ব ও অধিকার বহাল আছে এবং প্রদত্ত বিবরণ আমার/আমাদের জ্ঞান ও বিশ্বাস মতে সত্য। এরপর তারিখ উলেস্নখপূর্বক হলফকারী/হলফকারীদের স্বাক্ষর দিতে হয়। এরপর আসে শনাক্তকারীর ঘোষণা। যেখানে তিনি বলবেন, এই মর্মে ঘোষণা করছি যে, হলফকারী/হলফকারীরা আমার পরিচিত এবং আমার সম্মুখে তিনি/তারা দলিলে স্বাক্ষর প্রদান করেছেন (বা আমি তার/তাদের বা হলফকারীর নাম বকলমে লিখে দিয়েছি)। এরপর সবশেষে শনাক্তকারীর স্বাক্ষর করবেন।