চীন

সরকারি বাড়ি পেতে পরিবারের ১১ সদস্যের ২৩ বার বিয়ে-তালাকের নাটক!

প্রকাশ | ০১ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

আইন ও বিচার ডেস্ক
চীনে সরকারি বাড়ি হাতাতে এক মাসের মধ্যেই এক পরিবারের ১১ সদস্য ২৩ বার বিয়ে ও তালাকের নাটক করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, সম্প্রতি চীনের চেজিয়াং প্রদেশের লিশুই নগর কর্তৃপক্ষ বিশেষ ক্ষতিপূরণ প্রকল্পের আওতায় একটি অঞ্চলে সরকারি বাড়ি দেয়ার ঘোষণা দেয়। সেই বাড়ি বাগাতেই এ জালিয়াতির চেষ্টা করে অভিযুক্ত পরিবারটি। খবরে বলা হয়, কিছুদিন আগে এক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় লিশুই শহরের একটি এলাকার ঘরবাড়ি অপসারণ করা হয়। পরে ওই এলাকার বাসিন্দাদের জন্য ক্ষতিপূরণ হিসেবে বিনামূল্যে সরকারি বাড়ি দেয়ার একটি প্রকল্প হাতে নেয় কর্তৃপক্ষ। প্যান (প্রতিবেদনে মূল নাম গোপন করা হয়েছে) নামে লিশুই শহরের এক ব্যক্তি এ প্রকল্পের কথা জানতে পেরে সুযোগসন্ধানী হয়ে ওঠেন। এর অংশ হিসেবে শুরুতেই তিনি চলতি বছরের ৬ মার্চ প্রকল্প এলাকার বাসিন্দা সাবেক স্ত্রীকে আবার বিয়ে করেন, এবং সেখানকার বাসিন্দা হিসেবে সরকারি খাতায় নিজের নাম ঢোকান। এরপর তিনি স্ত্রীকে তালাক দিয়ে শ্যালিকাকে বিয়ে করেন, এবং পরে তাকেও তালাক দেন। এভাবে ওই ব্যক্তি একাধিক নারীর স্বামী হিসেবে নিজের নাম নিবন্ধন করান, যাতে সরকারি বাড়ি পাওয়ার বিষয়টি পাকাপোক্ত হয়। এরপর যেটা হয় তা হলো- পরিবারের অন্য সদস্যরাও সরকারি বাড়ির লোভে প্যানের দেখানো পথ অনুসরণ করতে থাকেন। এরই একপর্যায়ে প্যানের বাবা এমনকি ছেলের শাশুড়িকেই বিয়ে করে বসেন বলে এক প্রতিবেদনে জানানো হয়। ধীরে ধীরে এ মিছিলে প্যানের ভাই, বোন, চাচার পরিবারসহ মোট ১১ জন শরিক হন। আর এক মাসের মধ্যেই পরিবারটি বিয়ে ও তালাকের ২৩টি ঘটনার জন্ম দেয়। এক সপ্তাহের মধ্যে শুধু প্যানই সিভিল অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রণালয়ে তিনটি বিয়ের নিবন্ধন করান। একপর্যায়ে ক্ষতিপূরণ প্রকল্প কমিটির কাছে জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে, এবং পুলিশ প্যানসহ তার পরিবারের ১১ জনকে গ্রেপ্তার করে। পরে ৭ জন জামিনে মুক্তি পান। তারা সবাই বিচারের অপেক্ষায় রয়েছেন। এ প্রসঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তা লিউ চেন জানান, একাধিক ক্ষতিপূরণ বরাদ্দের লোভে এই পরিবারটি বেআইনিভাবে ভুয়া বিয়ে ও তালাকের ঘটনা ঘটিয়েছে। প্যানের পরিবার এমন কান্ডের জন্য অনুশোচনা করলেও কোনো লাভ হচ্ছে না। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে। প্যানের বাবা পুলিশকে জানান, আমরা আসলে বেশি ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতেই এমন কান্ড করেছি। তবে অভিযুক্তদের একজন জানিয়েছেন, তারা বেআইনি কিছুই করেননি। 'পরিবারটি চীনে প্রচলিত বিবাহ ও তালাকের আইন ভঙ্গ করেনি সত্য, তবে তাদের এরূপ কাজ দ্বারা চীনের ফৌজদারী আইন ভঙ্গ হয়েছে' বলে একজন আইনজীবী মতামত দিয়েছেন।