সড়ক পরিবহণ আইনে অপরাধের শাস্তি ও জরিমানা

১ নভেম্বর ২০১৯ থেকে কার্যকর হয়েছে 'সড়ক পরিবহণ আইন, ২০১৮'। বহুল আলোচিত এ আইনটি প্রণয়নের এক বছরেরও বেশি সময় পর এটি বাস্তবায়ন শুরু হলো। ২২ অক্টোবর আইনটি কার্যকরের তারিখ ঘোষণা করে গেজেট জারি করে সরকার। নতুন আইনে কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। সড়কে আইন লঙ্ঘন করলে এখন থেকে নতুন আইনেই সাজা দেওয়া হবে। নতুন এ আইনে সব ধরনের সাজা বাড়ানো হয়েছে। বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে কাউকে আহত করলে তিন লাখ টাকা জরিমানা ও তিন বছরের জেল হতে পারে। নতুন আইনে চালকদের লাইসেন্স পেতে অষ্টম শ্রেণি, সহকারীকে পঞ্চম শ্রেণি পাস হতে হবে। আইনে চালক ও তার সহকারীকে নিয়োগপত্র দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ড্রাইভিং লাইসেন্সের বিপরীতে ১২ পয়েন্ট রাখা হয়েছে। আইন ভঙ্গে জেল-জরিমানা ছাড়াও লাইসেন্সের পয়েন্ট কাটা যাবে। পুরো ১২ পয়েন্ট কাটা গেলে লাইসেন্স বাতিল

প্রকাশ | ০৫ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

তানজিম ইফতেখার
১ নভেম্বর ২০১৯ থেকে কার্যকর হয়েছে 'সড়ক পরিবহণ আইন, ২০১৮'। বহুল আলোচিত এই আইনটি প্রণয়নের এক বছরেরও বেশি সময় পর এটি বাস্তবায়ন শুরু হলো। ২২ অক্টোবর আইনটি কার্যকরের তারিখ ঘোষণা করে গেজেট জারি করে সরকার। নতুন আইনে কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। সড়কে আইন লঙ্ঘন করলে এখন থেকে নতুন আইনেই সাজা দেওয়া হবে। নতুন এ আইনে সব ধরনের সাজা বাড়ানো হয়েছে। বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে কাউকে আহত করলে তিন লাখ টাকা জরিমানা ও তিন বছরের জেল হতে পারে। নতুন আইনে চালকদের লাইসেন্স পেতে অষ্টম শ্রেণি, সহকারীকে পঞ্চম শ্রেণি পাস হতে হবে। আইনে চালক ও তার সহকারীকে নিয়োগপত্র দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ড্রাইভিং লাইসেন্সের বিপরীতে ১২ পয়েন্ট রাখা হয়েছে। আইন ভঙ্গে জেল-জরিমানা ছাড়াও লাইসেন্সের পয়েন্ট কাটা যাবে। পুরো ১২ পয়েন্ট কাটা গেলে লাইসেন্স বাতিল। গণপরিবহণে ভাড়ার চার্ট প্রদর্শন না করলে বা অতিরিক্ত ভাড়া দাবি কিংবা আদায় করলে এক মাসের জেল বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা এমনকি চালকের ১ পয়েন্ট কাটা যাবে। কন্ট্রাক্ট ক্যারিজের মিটার অবৈধভাবে পরিবর্তন বা অতিরিক্ত ভাড়া দাবি বা আদায় সংক্রান্ত ধারা ৩৫-এর বিধান লঙ্ঘনের দন্ড- যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৩৫-এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন এবং চালকের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত হিসেবে দোষসূচক ১ পয়েন্ট কাটা হবে। কন্ডাক্টর লাইসেন্স ছাড়া কোনো গণপরিবহণে কন্ডাক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালনসংক্রান্ত ধারা ১৪-এর বিধান লঙ্ঘনের দন্ড- যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ১৪-এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ এক মাসের কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত হবেন। মোটরযান রেজিস্ট্রেশন ছাড়া মোটরযান চালনাসংক্রান্ত ধারা ১৬-এর বিধান লঙ্ঘনের দন্ড- যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ১৬-এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। ভুয়া রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার ও প্রদর্শনে বিধি-নিষেধসংক্রান্ত ধারা ১৭-এর বিধান লঙ্ঘনের দন্ড- যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ১৭-এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ দুই বছর তবে কমপক্ষে ছয় মাসের কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা তবে কমপক্ষে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। মোটরযানের মালিকানা পরিবর্তন বা হস্তান্তরের কারণে হস্তান্তর গ্রহীতার রেজিস্ট্রেশনসংক্রান্ত ধারা ২১-এর বিধান লঙ্ঘনের দন্ড- যদি কোনো হস্তান্তর গ্রহীতা ধারা ২১-এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ এক মাস কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। মোটরযানের ফিটনেস সনদ ছাড়া বা মেয়াদোত্তীর্ণ ফিটনেস সনদ ব্যবহার করে বা ইকোনমিক লাইফ অতিক্রান্ত বা ফিটনেসের অনুপযোগী, ঝুঁকিপূর্ণ মোটরযান চালনাসংক্রান্ত ধারা ২৫-এর বিধান লঙ্ঘনের দন্ড- যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ২৫-এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। ট্যাক্স-টোকেন ছাড়া বা মেয়াদোত্তীর্ণ ট্যাক্স-টোকেন ব্যবহার করে মোটরযান চালনাসংক্রান্ত ধারা ২৬-এর বিধান লঙ্ঘনের দন্ড- যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ২৬-এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত হবেন। রুট পারমিট ছাড়া পাবলিক পেস্নসে পরিবহণ যান ব্যবহারসংক্রান্ত ধারা ২৮-এর বিধান লঙ্ঘনের দন্ড- যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ২৮-এর উপ-ধারা (১) এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ তিন মাসের কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। বিদেশি নাগরিকের বাংলাদেশে প্রবেশের ক্ষেত্রে নিজ দেশের মোটরযান/গণপরিবহণের রুট পারমিট গ্রহণ না করা সংক্রান্ত ধারা ২৯-এর বিধান লঙ্ঘনের দন্ড- যদি কোনো বিদেশি নাগরিক ধারা ২৯-এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত হবেন। মোটরযানের বাণিজ্যিক ব্যবহারসংক্রান্ত ধারা ৩১-এর বিধান লঙ্ঘনের দন্ড- যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৩১-এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ তিন মাসের কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন এবং চালকের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত হিসেবে দোষসূচক ১ পয়েন্ট কাটা হবে। গণপরিবহণে ভাড়ার চার্ট প্রদর্শন ও নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া দাবি বা আদায়সংক্রান্ত ধারা ৩৪-এর বিধান লঙ্ঘনের দন্ড- যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৩৪-এর উপ-ধারা (৩) ও (৪) এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ এক মাসের কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন এবং চালকের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত হিসেবে দোষসূচক ১ পয়েন্ট কাটা হবে।