ভা র ত

নারীদের মন্দিরে প্রবেশ নিয়ে আইন করবে ভারত

প্রকাশ | ১৯ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

আইন ও বিচার ডেস্ক
ভারতের রক্ষণশীল হিন্দুরা ঋতুমতী নারীদের মন্দিরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার পুনর্বহাল চাইলেও সুপ্রিম কোর্ট বলছে, নারী ও ধর্ম সম্পর্কিত নতুন আইন প্রণয়ন করা হবে; এজন্য সাত বিচারপতির একটি বেঞ্চ কাজ করবে। লর্ড আয়াপ্পার মন্দির শবরীমালায় দশকের পর দশক ধরে ১০ থেকে ৫০ বছর বয়স্ক ঋতুমতী নারীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল। গত বছর এক আদেশে সুপ্রিম কোর্ট ওই নিষেধাজ্ঞাকে অবৈধ অ্যাখ্যা দিয়ে তা তুলে নেওয়ার পক্ষে রায় দেয়। মন্দির কর্তৃপক্ষ ও ভক্ত-সমর্থকদের পাশাপাশি কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো এই রায়ের বিরোধিতা করে। মন্দিরে নারীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞাটি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত পর্যালোচনার রায়ে সুপ্রিম কোর্ট নারীদের উপাসনালয়ে প্রবেশের বিষয়ে আইন তৈরির কথা জানায়। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ বলেছেন, শবরীমালা মন্দিরে নারীদের প্রবেশের বিষয়ে আদালত তার সিদ্ধান্তের পর্যালোচনা পিছিয়ে দিচ্ছে। কারণ এটি ভারতে নারী ও ধর্ম সম্পর্কে বৃহত্তর প্রশ্নে মনোনিবেশ করা হচ্ছে। এ সংক্রান্ত মামলায় কাজ করতে আদালত সাত বিচারপতির বেঞ্চ করে দেবে বলে প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন। ঐতিহ্যগতভাবে হিন্দু ধর্মে ঋতুস্রাবকারী নারীদের অপরিষ্কার মনে করে তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নিতে নিষেধ করা হয়। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়, মন্দিরে নারীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞাটি প্রয়োজনীয় ধর্মীয় অনুশীলনের যোগ্য নয় এবং এটি ধর্মের স্বাধীনতায় নারীদের অধিকার লঙ্ঘন করেছে। আদালতের এই রায়ের পর ভারতে সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। কয়েকশ বিক্ষোভকারী নারীদের মন্দিরে প্রবেশে বাধা দেন। পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘাত বাধে এবং মন্দিরে প্রবেশের চেষ্টাকারী নারীদের তারা লাঞ্ছিতও করেন। পরে পুলিশ পরিবেষ্টিত হয়ে দুজন নারী মন্দিরে প্রবেশ করে প্রথা ভাঙেন। আদালতের সিদ্ধান্তটি পর্যালোচনা করতে বেশ কয়েকটি গোষ্ঠী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছিল। তাদের যুক্তি ছিল, মন্দির হলো নিজস্ব ও ধর্মীয় বিশ্বাসের জায়গা এবং সেখানে সাংবিধানিক নৈতিকতার বিষয়টি প্রয়োগ করা যায় না। আদালতের রায়ের ফলে বর্তমানে নারীদের মন্দিরে প্রবেশে কোনো বাধানিষেধ নেই। বিচারপতি গগৈ বলেছেন, মন্দিরে ঋতুমতী নারীদের প্রবেশ করা না করার বিষয়টি ভারতীয় সমাজে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। তবে রক্ষণশীল দেশটি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ধীরে ধীরে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে। ডয়েচে ভেলে অবলম্বনে