মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিচারকাজে বাংলা ভাষা প্রচলন আইন, ১৯৮৭ এর প্রয়োগ বিষয়ে আইন কমিশনের সুপারিশ

আইন ও বিচার ডেস্ক
  ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

২০১১ সালের ৯ ফেব্রম্নয়ারি বিচার কাজে ১৯৮৭ সালের বাংলা ভাষা প্রচলন আইনের প্রয়োগ বিষয়ে একটি সুপারিশ পেশ করে। একুশে ফেব্রম্নয়ারির আগেই দুটি ঘোষণাপত্র জারি এবং এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আইন কমিশন সুপারিশে উলেস্নখ করে। মহান একুশে পালনের একটি প্রকৃষ্ট উপায় হবে বলেও সুপারিশে উলেস্নখ করা হয়।

উলেস্নখ্য, সরকারের পক্ষ থেকে 'প্রয়োজনীয় দুটি ঘোষণাপত্র' এবং 'এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ' এখনো নেয়া হয়নি। আইন কমিশনের সুপারিশটি আইন ও বিচারের পাঠকদের জন্য তুলে দেয়া হলো।

বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষায় আত্মত্যাগের মহিমায় ভাস্বর মহান একুশে ফেব্রম্নয়ারি। তারিখটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবেও প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৩ অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী 'প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রভাষা বাংলা'। সংবিধানের এ বিধান সঠিকভাবে পালিত হচ্ছে না দেখে বাংলা ভাষা প্রচলন আইন, ১৯৮৭ (১৯৮৭ সালের ২নং আইন) জারি করা হয়। এর ধারা ৩-এর বিধান নিম্নরূপ-

'৩. ১. এ আইন প্রবর্তনের পর বাংলাদেশের সর্বত্র তথা সরকারি অফিস-আদালত, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বিদেশের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যতীত অন্য সব ক্ষেত্রে নথি ও চিঠিপত্র, আইন আদালতের সওয়াল জবাব এবং অন্যান্য আইনানুগত কার্যাবলি অবশ্যই বাংলায় লিখিতে হইবে।

(২) ৩(১) উপধারায় উলিস্নখিত কোনো কর্মস্থলে যদি কোনো ব্যক্তি বাংলা ভাষা ব্যতীত অন্য কোনো ভাষায় আবেদন বা আপিল করেন তাহা হইলে উহা বেআইনি ও অকার্যকর বলিয়া গণ্য হইবে।'

সংবিধানের ১৫২ অনুচ্ছেদে বিধৃত আছে যে, 'আদালত' অর্থ সুপ্রিম কোর্টসহ যে কোনো আদালত। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩ এবং উলিস্নখিত আইনের অধীন আদালতসহ প্রজাতন্ত্রের সব কার্যক্রম ও রাষ্ট্রীয় নথিপত্র বাংলা ভাষায়ই বাধ্যতামূলকভাবে সম্পাদিত হওয়ার কথা। সে অনুযায়ী রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গের মধ্যে আইন বিভাগ তথা জাতীয় সংসদ এবং নির্বাহী বিভাগ সংবিধানের ৩ অনুচ্ছেদের বিধান এবং ১৯৮৭ সালের ২নং আইনের বিধান পুরোপুরি অনুসরণ করছে। নিম্ন আদালতেও তা অনুসরণ করা শুরু হয়েছিল। কিন্তু হাশমত উলস্নাহ (মো.) বনাম আজমিরি বিবি ও অন্যান্য মামলায় (৪৪ ডিএল আর ৩৩২-৩৩৮ অনুচ্ছেদ ২০) হাইকোর্ট বিভাগ রায় দিয়েছে যে, সরকার অধস্তন দেওয়ানি আদালতের ভাষার ব্যাপারে দেওয়ানি কার্যবিধির ১৩৭(২) ধারায় কোনো ঘোষণা দেয় নাই বিধায় বাংলা ভাষা প্রচলন আইন জারি করা সত্ত্বেও অধস্তন দেওয়ানি আদালতের কার্যক্রম ইংরেজি ভাষায় চলমান রাখা যাবে। ফলে আজ অবধি বিচার কাজে বাংলা ভাষা পুরোপুরি চালু করা সম্ভব হয়নি।

দেওয়ানি কার্যবিধির উলিস্নখিত ধারা ১৩৭ নিম্নরূপ-

১৩৭.(১) ঞযব ষধহমঁধমব যিরপয, ড়হ :যব পড়সসবহপবসবহঃ ড়ভ :যরং ঈড়ফব, রং :যব ষধহমঁধমব ড়ভ ধহু ঈড়ঁৎঃ ংঁনড়ৎফরহধঃব :ড় :যব ঐরময ঈড়ঁৎঃ উরারংরড়হ ংযধষষ পড়হঃরহঁব :ড় নব :যব ষধহমঁধমব ড়ভ ংঁপয ংঁনড়ৎফরহধঃব ঈড়ঁৎঃ ঁহঃরষ :যব এড়াবৎহসবহঃ ড়ঃযবৎরিংব ফরৎবপঃং.

(২) ঞযব এড়াবৎহসবহঃ সধু ফবপষধৎব যিধঃ ংযধষষ নব :যব ষধহমঁধমব ড়ভ ধহু ংঁপয ঈড়ঁৎঃ ধহফ রহ যিধঃ পযধৎধপঃবৎ ধঢ়ঢ়ষরপধঃরড়হ :ড় ধহফ ঢ়ৎড়পববফরহমং রহ ংঁপয ঈড়ঁৎঃং ংযধষষ নব ৎিরঃঃবহ.

ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৫৮ ধারায় বলা হচ্ছে,

"ঞযব এড়াবৎহসবহঃ সধু ফবঃবৎসরহব যিধঃ, ভড়ৎ :যব ঢ়ঁৎঢ়ড়ংবং ড়ভ :যরং ঈড়ফব, ংযধষষ নব ফববসবফ :ড় নব :যব ষধহমঁধমব ড়ভ বধপয ঈড়ঁৎঃ রিঃযরহ :যব :বৎৎরঃড়ৎরবং ধফসরহরংঃবৎবফ নু রঃ."

এ অবস্থায় সরকার আদালতের ভাষা বাংলা মর্মে ঞযব ঈড়ফব ড়ভ ঈৎরসরহধষ চৎড়পবফঁৎব, ১৮৯৮ এর ধারা ৫৫৮ এর অধীন একটি এবং ঞযব ঈড়ফব ড়ভ ঈরারষ চৎড়পবফঁৎব, ১৯০৮ এর ধারা ১৩৭(২) এর অধীন একটি অর্থাৎ মোট দুটি ঘোষণাপত্র জারি করতে পারে।

প্রস্তাবিত ঘোষণাপত্র দুটি জারি করা হলে আদালতে তা অবিলম্বে কার্যকর করা সম্ভব। ইংরেজিতে রচিত বিদ্যমান আইনসমূহ বাংলায় অনুবাদ ত্বরান্বিত করা জরুরি। এ লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়সমূহের সংশ্লিষ্ট বিভাগের অনুবাদ কাজ বেগবান করা এবং সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের বাংলা ভাষা বাস্তবায়ন কোষকে অধিকতর শক্তিশালী, গতিশীল এবং উদ্যোগী করে গড়ে তোলা প্রয়োজন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<88973 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1